কিছু কিছু মানুষ থাকেন যারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পছন্দ করেন। আমার মনে হয় ভ্রমণের মধ্যে চ্যালেঞ্জ বা অ্যাডভেঞ্চার খুঁজে পাওয়ার পাওয়ার জন্য পর্বতারোহনই একমাত্র পন্থা । আর এই দুনিয়ায় পাহাড়প্রেমী মানুষের সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়।
তাহলে আর দেরি না করে চটপট ভারতের সেরা ৫টি আরোহনযোগ্য পাহাড় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক -
১. মাউন্ট কানামো, হিমাচল প্রদেশ
পর্বতারোহিদের কাছে কানামো ট্রেকিং বেশ জনপ্রিয়। এখানে আপনি হিমালয়ের অন্যরূপের দর্শন পাবেন। ট্রেকের সূচনায় রয়েছে বালিয়াড়ি অঞ্চল এবং যাত্রাপথটি বেশ খাড়াই। এই ট্রেকটা কিন্তু বেশ কঠিন। তাই ট্রেকের আগে কিব্বারে একদিন রাত্রিবাস করে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজনীয়। দুর্গম অঞ্চলে ট্রেকের অভিজ্ঞতা এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে তবেই এই মাউন্ট কানামো ট্রেকের প্রচেষ্টা করবেন।
উচ্চতা - ১৯,৫০০ ফিট
কাঠিন্যতা - কঠিন
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় - জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসটি মাউন্ট কানামো আরোহন করার জন্য আদৰ্শ।
২. মাউন্ট ভাণতি, উত্তরাখণ্ড
উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন হিমালয়ে অবস্থিত প্রসিদ্ধ আরোহন যোগ্য শৃঙ্গ হল - মাউন্ট ভাণতি। তুষারাবৃত এই পিক আরোহন করার পথে আপনি নানান ধরণের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাক্ষী থাকতে পারবেন। তুষারে আবৃত তৃণভূমি সহ খাড়াই পাথরের অবস্থান যে কোনও পর্যটককে মুগ্ধ করবেই। তবে এই ট্রেকের জন্য বরফের ঘনত্ব, দড়ির সাহায্যে নিয়ে হাঁটার অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
উচ্চতা - ১৮,৪৫০ ফিট
কাঠিন্যতা - তুলনায় কঠিন
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় - মাউন্ট ভাণতি আরোহন করার জন্য জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়টি আদৰ্শ।
৩. নাগ টিব্বা, উত্তরাখণ্ড
গাড়োয়াল হিমালয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা সম্পন্ন শৃঙ্গ হল - নাগ টিব্বা। আপনার যদি ট্রেকিং- এর প্রতি প্যাশন থাকে, তাহলে নাগ টিব্বার ট্রেকিং এর সাহায্যে হাতেখড়ি নিয়ে নিতে পারেন। এই শৃঙ্গটি আরোহন করার জন্য কোনো রকম পূর্ববর্তী ট্রেকের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই।
উচ্চতা - ৯,৯১৫ ফিট।
কাঠিন্যতা - সহজসাধ্য
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় - জুলাই - অগাস্ট ছাড়া বছরের যে কোনও সময় নাগ টিব্বা আরোহন করা সম্ভব।
৪. মাউন্ট শিতিধার, হিমাচল প্রদেশ
পির পিঞ্জল রেঞ্জ এর সর্বোচ্চ উচ্চতা সম্পন্ন শৃঙ্গ মাউন্ট শিতিধার আরোহন করার জন্য যথেষ্ট অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। এই ট্রেকের বেসক্যাম্পটি রয়েছে মানালিতে। এই ট্রেক সম্পন্ন করার জন্য আপনার বরফের ঘনত্ব সম্পর্কে বিশদে জ্ঞান থাকতে হবে। এই শৃঙ্গ আরোহন করার ফলে আপনি বেয়াস কুণ্ড এবং প্রকৃতির অন্যান্য রূপের সন্ধান পাবেন। এই ট্রেক সম্পন্ন করতে সময় লাগবে প্রায় ১০ দিনের মতো।
উচ্চতা - ১৭,২২০ ফিট
কাঠিন্যতা - কঠিন
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় - মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়টি এই ট্রেকের জন্য আদৰ্শ।
৫. স্টক কাঙড়ি, লাদাখ
লাদাখে অবস্থিত স্টক কাংড়ি শৃঙ্গটি বিশ্বের সর্বোচ্চ আরোহনযোগ্য শৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত। এই শৃঙ্গ থেকে আপনি কারাকোরাম এবং জাস্কার রেঞ্জ এর অবর্ণনীয় সুন্দর দৃশ্য এর প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন। সেই কারণেই যে কোনও অভিজ্ঞ ট্রেকারের স্টক কাংড়ি আরোহন করার সুপ্ত ইচ্ছা থাকেই ।
উচ্চতা - ২০,১০০ ফিট
কাঠিন্যতা - কঠিন
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় - স্টক কাংড়ি আরোহন করার শ্রেষ্ঠ সময় মে থেকে অক্টোবর মাস।
ব্লগটা পড়ে কি পর্বত আরোহনের ইচ্ছাটা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে? যদি ট্রেকিং সম্পর্কে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আরও একবার পর্বতারোহনের অ্যাডভেঞ্চারটা ট্রাই করে দেখুন। আর যদি আপনার পর্বত আরোহনের অভিজ্ঞতা না থাকে, কিন্তু মনে প্রাণে অ্যাডভেঞ্চারকে উপভোগ করতে চান তাহলে নাগ টিব্বার হাত ধরে ট্রেকিং এর মতো কঠিন যাত্রার সূচনাটা করেই ফেলুন। শুভকামনা রইল।