সারা পৃথিবীব্যাপী মানুষজন যে শব্দটা শুনলে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে সেটি হল করোনা। ২০২০ সাল থেকে পৃথিবীর গর্ভগৃহে ছড়িয়ে পড়া এই মারণরোগটি যে শুধুমাত্র মনুষ্য সমাজকে এক গোলক ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে এমন নয়, যত সময় এগিয়েছে তত মানুষের স্বাভাবিক জীবনের উপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আঘাত হেনেছে মানুষের পেশায়, ধ্বংস করেছে মনুষ্য মনোবলকে। কিন্তু কথায় বলে, সত্যের জয় সর্বদা। তাই এত কিছুর পরেও এই মারমুখী ভাইরাস কিন্তু মানুষকে গৃহবন্দী করে রাখতে পারেনি। না পেরেছে তাদের মেরুদণ্ডকে ভেঙে চূর্ণ চূর্ণ করে দিতে। শত বাধা বিঘ্নের পরেও আজও এই রোগের সঙ্গে ক্রমাগত মনুষ্যসমাজ লড়াই করে চলেছে। শুধু তাই নয়, এই লড়াইয়ে মানুষরূপী যোদ্ধাদের জিতে যাওয়ার আশাও আজ চোখের সামনে ধরা দিচ্ছে। সব কিছুর একটি খারাপ দিক থাকে। আর করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেটি ব্যতিক্রম নয়।এই রোগের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন হাওয়ায় বহুমানুষের রুজি-রোজগার কমে গিয়েছে। কেউ কেউ আবার কর্মহারা হয়েছেন। সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পর্যটন সংস্থাগুলির ওপর। কারণ প্রায় একবছর করোনার জন্য পর্যটন শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ফলত, বহু মানুষ তাদের রোজগার খোয়াতে বাধ্য হয়ে হয়। তবে এই সবকিছুর মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের কিছু হোমস্টে।
একঘেয়েমি গৃহবন্দী জীবন থেকে একটু অন্যরকম জীবনের স্বাদ পেতে অনেক পাহাড়প্রেমী পর্যটকেরা কিন্তু পাড়ি দিচ্ছেন এই সমস্ত হোমস্টেতে আনন্দদায়ক কিছু মুহূর্ত কাটানোর উদ্দেশ্য। পাহাড়ে ঘেরা সবুজভূমির শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে গড়ে ওঠা এই ছোট ছোট হোমস্টেগুলি এখন হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে প্রাণবন্ত খোলা আকাশের নিচে নিঃশ্বাস নেওয়ার একমাত্র অবলম্বন।
হোমস্টেগুলির অবস্থান-
শিলিগুড়ি, ডুয়ার্স, আসাম, দার্জিলিং, সিকিম প্রভৃতি পাহাড়ি অঞ্চলের হোমস্টেগুলিতে থাকার জন্য বহু মানুষ এসে নতুন করে ভিড় জমাচ্ছে। কেউ কেউ হয়তো করোনা থেকে সদ্য সুস্থ হয়ে স্বাস্থ্যকে আরও সচল করে তুলতেএখানে আসছেন। আবার কেউ কেউ করোনা পরিস্থিতিকে এড়িয়ে যেতে নিজের মনকে শক্ত রাখতে এখানে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। এই হোমস্টেগুলি প্রথমদিকে করোনা আবহে বন্ধ হয়ে গেলও, পরবর্তীতে করোনার সমস্ত প্রোটোকল মেনে আবার পুনঃরায় এইগুলিকে সচল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক পর্যটক বাইরে ভ্রমণ করতে যেতে অসমর্থ। সেক্ষেত্রে আনুমানিক পরিসংখ্যান বলছে, বেশিরভাগ মানুষই চাইছে পার্বত্য অঞ্চলে গিয়ে নিরিবিলিতে তাদের কিছুটা সময় কাটাতে।
কার্যকারিতা-
এই সমস্ত জায়গাগুলির হোমস্টেতে কেউ এসে থাকলে তার মনোরম পরিবেশ কিন্তু তাকে সাহস এবং সাহচর্য দিচ্ছে ভরপুর মাত্রায়। শুধু তাই নয় বেশ কিছু কর্মহীন মানুষ আবার নতুন করে রোজগারের সুযোগ খুঁজে পেয়েছে।