করোনা রোধে ভারতে প্রচলিত টিকাগুলির মধ্যে অন্যতম হল- কোভ্যাক্সিন। তবে সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (WHO)-এর Emergency use Listing( EUL) তালিকায় কোভ্যাক্সিনের উল্লেখ নেই । যদিও, বর্তমানে নয়টি দেশ ভারতের নির্মিত কোভ্যাক্সিন টিকাকে অনুমোদন দিয়েছেন । কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক কোভ্যাক্সিন টিকা গ্রহণ করেছেন,অদূর ভবিষ্যতে তাদের বিদেশ যাত্রার বিঘ্নিত হতে পারে ।
গত এপ্রিল মাসে মিনিস্ট্রি অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স, মিনিস্ট্রি অফ হেলথ এন্ড ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি এবং ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ( BBIL)-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ কৃষ্ণ মোহন একটি মিটিং - এর পর WHO এর EUL এর তালিকা নির্মাণের জন্য সাক্ষীবাবদ সমস্ত রকম তথ্যমূলক খসড়া জমা করেন । তবুও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি কোভ্যাক্সিন।
এই প্রসঙ্গে ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড জানিয়েছেন, তারা এখনও পর্যন্ত ৯০% তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে জমা করতে পেরেছেন । বাকি তথ্য সংক্রান্ত সমস্ত খসড়া জুন ২০২১এর মধ্যে পেশ করা হবে । তবে ভবিষ্যতে এই টিকাটি ও মান্যতা পাবে সেই বিষয়ে ভারত বায়োটেক কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট বিশ্বাসী ।
সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে, phase- ৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরই ভারত বায়োটেক প্রমাণ করে দেবেন, যে করোনা মহামারী রোধে কোভ্যাক্সিনের ৮১% উপযৌক্তিকতা রয়েছে ।ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসাচ (ICMR) এর চিফ ডঃ বলরাম ভার্গভ জানিয়েছেন, জুন মাসের মধ্যেই এই প্রসঙ্গে একটি জার্নাল প্রকাশিত হবে ।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভারতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২কোটি মানুষ কোভ্যাক্সিন গ্রহণ করেছেন । তবে WHO এর অনুমোদন এই সময়ে খুবই প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন একদল বিশেষজ্ঞগণ । কারণ এই অনুমোদনের ফলে ভারত বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকেও এই ভ্যাকসিন রপ্তানি করতে পারবেন । ইতিমধ্যে ভারত সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি দেশ কোভ্যাক্সিনের প্রতি তাদের কৌতূহল প্রকাশ করেছেন । অন্যদিকে কোভিশিল্ড টিকাটি বিশ্বের ১৩০ দেশের অনুমোদন লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে ক্যাবিনেট মন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারী কর্তৃপক্ষ কোভ্যাক্সিনের টিকার উপর আস্থা রেখেছেন ।তাদের ক্ষেত্রে ও বিদেশ যাত্রায় বিঘ্ন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।
সম্প্রতি একটি রিপোর্ট বলা হয়েছে, কোনো দেশে এখনও পর্যন্ত 'ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ' অত্যাবশ্যকীয় হয়ে ওঠেনি । বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি দেশে ভ্রমণের জন্য RT-PCR এর নেগেটিভ রিপোর্ট প্রয়োজন, এছাড়াও যাত্রীরা সেই দেশে পৌঁছনোর পর কিছু দিনের জন্য নিভৃতবাসে থাকা আবশ্যক।
আপাতভাবে, কোভ্যাক্সিন ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত এখন সেটাই দেখার বিষয়।