কথায় বলে মানুষে কি না খায়। কিন্তু ডাল ভাত আর মাছ মাংস খাওয়া বাঙালির ডায়েট কিন্তু আদি অনন্তকাল ধরে মার্জিত, পরিশীলিত এবং রুচিসম্পন্ন। কিন্তু মণ্ডা-মিঠাইয়ের বাইরে, এই গোটা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক আঞ্চলিক খাবার লুকিয়ে রয়েছে, যা হয়তো আপনার কল্পনাকেও পরাজিত করবে। জানতে চান কেমন সে সব খাবার? আসুন দেখেনি কোথায় গেলে দেখতে পাবেন এই অদ্ভুত ডায়েটের সমাহার।
১. দোহখলিয়ে আর জাদহ
মেঘালয়ের খাসি সম্প্রদায়ের মানুষদের অন্যতম পছন্দসই খাবার হল দোহখলিয়ে আর জাদহ। দোহখলিয়ে অনেকটা পর্ক মাংসের পেয়াঁজ দিয়ে তৈরি স্যালাডের মতো, আর জাদহকে ভাত দিয়ে তৈরি বেশ ঝাল ঝাল পোলাও বলাই যায়। কিন্তু চমকে ওঠার মতো ব্যাপারটা কোথায়? দোহখলিয়ে তৈরির সময় ব্যবহৃত হয় সেদ্ধ করা শূকর ঘিলু আর জাদহ রান্নার সময় ব্যবহৃত হয় শূকরের অন্ত্র এবং কিছুটা রক্ত। শুনে শিহরিত হলেও, মেঘালয়ের বিভিন্ন প্রান্তে এই দুই ডিশ অত্যন্ত সুস্বাদু ডেলিকেসি হিসেবেই গণ্য করা হয়।
২. চাপরাহ - লাল পিঁপড়ের চাটনি
আমের চাটনি, আমসত্ত্বের চাটনি, এমনকি টমেটোর চাটনি তো আমরা হামেশাই খেয়ে থাকি। কিন্ত যদি বলা হয় টকটকে লাল রঙের এই চাপরাহ চাটনি তৈরি হয় লাল পিঁপড়ে আর সেই পিঁপড়ের ডিম দিয়ে? ছত্রিশগড় বনাঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের দৈনিক খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এই চাটনি। শোনা যায় খেতেও বেশ মুখরোচক।
৩. ব্যাঙের ঠ্যাং
চিকেন ললিপপ আর ড্রামস অফ হেভেন তো অনেক খেয়েছেন। এবার থেকে কিন্তু লেগপিস বলতে শুধুই ব্যাঙের ঠ্যাং। ঘাবড়াবেন না, ব্যাটার ফ্রায়েড ফ্রগ লেগস কিন্তু সিকিম এবং গোয়ার বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায় এবং চটপটা স্ন্যাক্স হিসেবে স্থানীয় অধিবাসীদের ও খুবই পছন্দের। ওনারা এও মনে করেন যে ব্যাঙের মাংসের ঔষধি গুণ অনেক কঠিন রোগ নিরাময় করতে পারে।
৪. এরি পলু
নর্থ ইস্টের রাজ্যগুলি মিলিয়ে খোঁজ পাবেন এমন অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত খাবারের, আর তাদের মধ্যে অন্যতম হল এরি পলু বা রেশমপোকার পিউপা। রেশমপোকাগুলি গুটি বেঁধে কোকুনে পরিণত হলে, সেই অবস্থায় সেগুলি রান্না করে খাওয়া হয়। আশ্চর্যজনক ভাবে, দেশ বিদেশের বৈজ্ঞানিকরা এরি পলুর পুষ্টিগুণ নিয়ে উচ্ছসিত এবং বিদেশে রপ্তানি করার কথাও চিন্তা করছেন।
৫. পেঁয়াজের হালুয়া
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, হালুয়া কিন্তু পেঁয়াজের। অবশ্য সুজি, গাজর দিয়ে যদি হালুয়া হতে পারে তাহলে আর পেঁয়াজের কি দোষ। অনেকক্ষণ ধরে অল্প আঁচে মাখন, দুধ আর চিনি দিয়ে তৈরি হয় এই হালুয়া। উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাঝে মাঝে এখনো দেখা পাওয়া যায় এই নিরামিষ হালুয়ার।
৬. ফ্যান ফুৎ
শুনতে যেরকম অদ্ভুত, খাবারটিও সেইরকমই অদ্ভুত। ফ্যান ফুৎ হল একধরনের আলুর তরকারি, কিন্তু চিন্তার বিষয় হল আলুগুলিকে পচা হতে হবে। হ্যাঁ, পচা আলুর তরকারির নাম'ই ফ্যান ফুৎ'। নর্থ ইস্ট রাজ্যগুলিতে গারো উপজাতির লোকেদের এই খাবারটি খেতে দেখা যায়। পচা আলু বেশ দুর্গন্ধযুক্ত হলেও, তারা কিন্তু এটি খেতে বেশ ভালোবাসেন।
৭. কালো চালের পায়েস
ধবধবে সাদা চালের বদলে কুচকুচে কালো চাল, আর সেই চাল দিয়ে তৈরি ঘন কালো কিন্তু অত্যন্ত সুস্বাদু পায়েস। বিগত কয়েক বছরে কালো চাল বা ব্ল্যাক রাইস ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পুষ্টিগুণের দিক থেকেও কিন্তু কালো চাল (যার আরেক নাম নিষিদ্ধ চাল) টেক্কা দিয়ে যায় আমাদের চিরপরিচিত চালগুলিকে। কালো চালের পায়েস তাই দেখতে অদ্ভুত হলেও, খেতে কিন্তু আমাদের চেনা পায়েসের থেকেও ভালো আর উপকারি। খেয়ে দেখবেন নাকি?
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)