অরুনাচলপ্রদেশের নাম শুনলেই চোখের সামনে যে চিত্রগুলো ভেসে ওঠে তা হলো বরফাবৃত পর্বতশৃঙ্গ, রং বেরঙের অর্কিড, সবুজ ঘন জঙ্গল, মোনাসট্রি ইত্যাদি। কিন্তু আপনারা জানেন কি অরুনাচলপ্রদেশের অনেক জায়গাতেই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন লুকিয়ে আছে? হ্যাঁ সেরকমই একটা জায়গা হলো ইটা ফোর্ট যা অরুনাচলপ্রদেশের রাজধানী শহর ইটানগরে অবস্থিত। নাম শুনেই আমরা অনুমান করতে পারি যে, এই ইটা ফোর্টের নাম থেকেই শহরের নাম হয়েছে ইটানগর। অসমীয়া ভাষায় ইটা শব্দের অর্থ হলো ইট। অতএব ইটের প্রাসাদ।
১৯৭৭ সালে খননকার্য চলাকালীন এই ইটা ফোর্টের নিদর্শন পাওয়া যায়। মনে করা হয় ১৩৫০ থেকে ১৪৫০ সালের মধ্যে অসমে মুসলিম আক্রমণের সময়কালে এই প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিককালে আহোম ভাষায় লিখিত বুৰঞ্জী থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটা অনুমান করা হয় যে আহোম রাজা চক্রধ্বজ সিমহা এই ইটা ফোর্ট নির্মাণ করেছিলেন ১৬৮৮ সালে। জন্ম ইতিহাস যাই হোক না কেন এর ধ্বংসাবশেষ থেকে খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে খুব সুপরিকল্পিত ভাবেই এই প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রাসাদটির তিনটি প্রবেশদ্বার - পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ। সম্ভবতঃ পশ্চিম দিকের প্রবেশদ্বারটিই এই প্রাসাদের মুখ্য দ্বার ছিল। পূর্ব দিকের প্রবেশ দ্বারটিই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর দক্ষিণ দিকের প্রবেশদ্বারটি মূলত ইট দিয়েই নির্মিত হয়েছিল। লিখিত তথ্যের অভাবের কারণেই এই প্রাসাদ সম্পর্কে বেশি তথ্য আমরা আজও জানতে পারিনি।
কিভাবে যাবেন :
ইটানগরের নিকটবর্তী এয়ারপোর্ট হলো লীলাবাড়ি এয়ারপোর্ট যেটি মূল শহর থেকে ৭২ কিমি দূরে। তবে কলকাতা থেকে লীলাবাড়ি এয়ারপোর্ট যাওয়ার সরাসরি বিমান আছে।
এছাড়া, ট্রেনে যেতে চাইলে নাহারলগুন স্টেশনে নামতে পারেন। নাহারলগুন থেকে ইটানগর মাত্র ১৮ কিমি। ইটানগর যেহেতু রাজধানী শহর তাই ইটানগর থেকে গাড়ি বা অটোতে চেপে ঘুরে আসতে পারেন এই ইটা ফোর্ট। আর ইটানগর গেলে সাথে গঙ্গা লেক, মিউজিয়াম, রুপা ভিলেজ অবশ্যই ঘুরে দেখে নেবেন।
কখন যাবেন :
বছরের যে কোনো সময়েই ঘুরে আসতে পারেন এই ইটানগর থেকে।
তবে মনে রাখবেন, অরুণাচল প্রদেশের বাকি জায়গাগুলোর মতোই এখানে যেতে গেলেও কিন্তু ইনার লাইন পারমিট লাগে যেটি কলকাতার অরুণাচল ভবন থেকে খুব সহজেই করিয়ে ফেলতে পারেন। আর থাকার জায়গা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ মেইন মার্কেট এরিয়াতে অনেক হোটেল আছে।