বৈচিত্রে পরিপূর্ণ আমাদের দেশ ভারতবর্ষ, পোশাক থেকে সংস্কৃতি এমনকি শিল্পের ক্ষেত্রে ও বর্ণময়তার প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করা যায় । ভারতের খাদ্যগুলির উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে দেখা যায় এখানকার খাদ্যগুলি ও পোশাক, সংস্কৃতি এবং শিল্পের মতোই রঙিন এবং প্রাণবন্ত।
কী এই জিভে জল আনা রঙিন খাদ্যের তালিকাটা জানতে খুব ইচ্ছা করছে ? তাহলে ব্লগটা শেষ পর্যন্ত পড়েই ফেলুন।
লস্যি -
তীব্র গরমে শরীরকে ঠান্ডা করার একমাত্র সিক্রেট লস্যির মধ্যে রয়েছে। সুস্বাদু এই পানীয়টি ছোট থেকে বড় সকলেরই খুবই পছন্দের। লস্যির মূল পীঠস্থান হল পাঞ্জাব । দই এবং মিষ্টি মিশ্রিত এই ঠান্ডা পানীয়টি বর্তমানে ম্যাঙ্গো লস্যি, ড্রাইফ্রুট লস্যি, কেশর লস্যি ইত্যাদি নানান রূপে সেজে উঠেছে ।পাঞ্জাবি লস্যি টেস্ট করার সেরা ঠিকানা হল- অমৃতসরের আহুজা মিল্ক ভান্ডার । তবে বর্তমানে ভারতের সব স্থানেই লস্যি উপলব্ধ রয়েছে ।
ক্যান্ডি ফ্লস -
ছেলেবেলায় মেলায় গিয়ে কটন ক্যান্ডি বা ক্যান্ডি ফ্লস বা বুড়ির চুলের সন্ধান করেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মনে হয় খুবই দুর্লভ । বিভিন্ন রঙের ক্যান্ডি ফ্লস ছোটদের তো মন জয় করেছে একই সঙ্গে বড়োরাও এর স্বাদ গ্রহণ করতে পিছুপা হন না । কী তাই তো? চিনি দিয়ে তৈরি হলেও এর স্বাদটা একেবারেই অন্যরকম । যে কোনও মেলার শোস্টপার এই খাদ্যটির জন্ম ইটালিতে । আগে এই খাদ্যটি মূলত মেলাতেই দেখতে পাওয়া যেত । তবে বর্তমানে পশ্চিম মুম্বইয়ের ইট কনফেত্তি নামক বিপণীটিতে ক্যান্ডি ফ্লস বিক্রেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ।
আইস গোলা-
গরমের দিনে ঠান্ডা অনুভূতি এনে দেয় এই আইস গোলা। শুধুমাত্র বরফ, কিছু রঙিন সিরাপ, ড্রাইফ্রুটস এবং মশলা দ্বারা সমৃদ্ধ এই খাদ্যটি ভারতবর্ষের সর্বত্রই বেশ জনপ্রিয় । বর্তমানে এই গোলায় আইসক্রিম, ফল ব্যবহার করে নতুন স্বাদে নতুন রূপে ভোজনরসিক মানুষের কাছে প্রকাশ করা হচ্ছে ।আইস গোলা টেস্ট করতে পৌঁছে যেতে পারেন নিউ দিল্লির নেতাজী সুভাষ প্লেসে ।
মিল্ক শেক -
দুধ এবং আইসক্রিমের সমন্বয়ে তৈরি মিল্ক শেক ছোট থেকে বড়ো সকলেরই খুব পছন্দের একটি পানীয়। বর্তমানে মিল্ক শেক- বাটারস্কচ, ক্যারামেল, চকলেট, ফ্রুটস, ড্রাই ফ্রুটস বিভিন্ন স্বাদে উপলব্ধ রয়েছে । এই মিল্ক শেক মূলত বাদামের দুধ, নারকেলের দুধ, সয়া মিল্ক দ্বারা তৈরি করা হয় । প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বিংশ শতাব্দীতে ইউনাইটেড স্টেটস এ এই পানীয়টির উৎপত্তি । তবে আজকের দিনে ভারতে এই পানীয়টি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে । আধুনিক যন্ত্রপাতি সহযোগে ভারতের মলগুলিতে এমনকি রাজপথের ধারে মিল্কশেকের বিপণী লক্ষ করা যায় । মিল্কশেক টেস্ট করার সেরা ঠিকানা হল দিল্লির শেক সাহেব ।
সরবত -
গরমের দিনে কোনও তৃষ্ণার্তকে প্রশান্তি এনে দিতে পারে এই সরবত । লেবুর সরবত, ডাবের সরবত ইত্যাদি নানান রূপে সরবত ধরা দেয় । সরবত খেতে চাইলে পৌঁছে যেতে পারেন কলকাতার প্যারামাউন্ট -এ । এই বিখ্যাত সরবৎ এর বিপণীতে একসময় বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বরাও সরবৎ টেস্ট করার জন্য আসতেন । এই বিপণীর বিখ্যাত সরবতগুলি হল -ডাবের সরবৎ, ম্যাঙ্গো ম্যানিয়া ইত্যাদি ।
মিষ্টান্ন -
বাঙালির পছন্দের খাদ্যতালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছে মিষ্টি। তাই বাংলায় মিষ্টির রূপের বৈচিত্র লক্ষ করা যায় । এই রঙিন মিষ্টির মধ্যে রয়েছে পান্তুয়া, কমলাভোগ, ক্ষীরকদম, কালোজাম, পটল মিষ্টি, রসগোল্লা ইত্যাদি । ভারতের সব জায়গায় মিষ্টি উপলব্ধ থাকলেও বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি চেখে দেখার সেরা স্থান কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ।
খাঁকরা -
পশ্চিম ভারত অঞ্চল মূলত গুজরাতের জনপ্রিয় খাদ্য হলো খাঁকরা । ময়দা, স্থানীয় অঞ্চলের ডাল এবং তেল সহযোগে মুচমুচে পাঁপড়ের মতো এই খাদ্যটি তৈরি করা হয় । মশলা খাঁকরা, মেথি খাঁকরা, পাওভাজি খাঁকরা ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের খাঁকরা উপলব্ধ রয়েছে ।
ফালুদা -
এই ডেসার্টটির সঙ্গে আমরা সকলেই মোটামুটি পরিচিত । সেমাই, দুধ, রোস সিরাপ, তুলসীর বীজ এবং আইসক্রিম কিংবা কুলফি সহযোগে ঠান্ডা রঙিন পানীয়টি বর্তমান দিনে কিন্তু বেশ প্রশংসনীয় । ফালুদা টেস্ট করার সেরা ঠিকানা হলো মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বেস্ট ফালুদা বিপণীটি ।ভারত ছাড়া এশিয়ার অন্যান্য দেশ গুলিতে ফালুদার ভিন্ন রূপের সন্ধান পাওয়া যায় ।
আপনার ও যদি এমন কোনও রঙিন খাবারের সন্ধান থাকে, তাহলে ট্রিপোটো বাংলার সাথে ছবি সহ খাদ্যের বিবরণী শেয়ার করতে কিন্তু একদম ভুলবেন না ।