১. পাউরি গারওয়াল - উত্তরাখণ্ডের হৃদয়
চারপাশে গারওয়াল হিমালয়ের দিগন্তবিস্তৃত সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা অঞ্চলের ঠিক মাঝখানে রয়েছে পাউরি শহর। চারদিকে রয়েছে ঘন জঙ্গল, আর শ্বেতশুভ্র সুউচ্চ পর্বতমালা, ঠিক যেন রুপোর মুকুট।
গারওয়াল ডিভিশন অঞ্চল এবং পাউরি-গারওয়াল জেলার কেন্দ্র এই পাউরি শহর। পাউরির ধারেকাছেও জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট আকর্ষণগুলি হল খিরসু, দুদহাতলী, জ্বল্পদেবী মন্দির, কান্ডলিয়া মন্দির, দেবপ্রয়াগ, চৌখাম্বা ভিউ পয়েন্ট, কিউনকালেশ্বর মহাদেব মন্দির এবং তারকেশ্বর মহাদেব মন্দির।
২. চোপ্তা
উত্তরাখণ্ডের এই ছোট্ট গ্রাম্য সমতল চোপ্তা যেন ট্রেকারদের স্বর্গ। তুঙ্গনাথ, দেওরিয়া তাল, চন্দ্রশীলা ট্রেকের বেস ক্যাম্প রূপে চোপ্তা বেশ পরিচিত। মাঝারি বা অল্প অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ট্রেকাররা চোপ্তা থেকে বিভিন্ন গাইডেড ট্রেকে গিয়ে নিজেদের আরও অভিজ্ঞ করে তুলতে পারেন। চোপ্তায় গিয়ে ট্রেকিং করার অভিজ্ঞতা সত্যি জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
পঞ্চ কেদারের তৃতীয় মন্দির, চোপ্তা থেকে মাত্র ৩.৫ কিলোমিটার দূরে তুঙ্গনাথে অবস্থিত। পাইন, দেবদারু, রোডোডেনড্রোন গাছ দিয়ে ঘেরা সবুজ পাহাড়ি চোপ্তার খোলা মাঠের মধ্যে ক্যাম্পিং করা মানে জীবনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করা। চোপ্তার আকাশ জুড়ে থাকে ত্রিশূল, নন্দাদেবী এবং চৌখাম্বা পাহাড়ের বরফে ঢাকা চূড়ার অপরূপ রূপ।
৩. সারি গ্রাম - পাহাড়ি গ্রাম্য জীবনের ছবি
চোপ্তা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সারি গ্রাম, সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত একটি ছবির মতো সুন্দর ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। হিমালয়ের পাদদেশে, ওক আর রোডোডেনড্রোন গাছে ঘেরা এই স্বপ্নের মতো গ্রামটি।
সারি গ্রামকে বেস হিসেবে রেখে আপনি সহজেই ঘুরে আসতে পারেন ২.৫ কিমি দূরের দেওরিয়া তাল নামক ভারতবিখ্যাত লেকটি থেকে। মাঝেমধ্যেই তুষারপাতের কারণে চোপ্তার হোটেলগুলি বন্ধ থাকলে, পর্যটকরা সারির হোটেল বা হোমস্টে গুলিতে ভিড় করেন।
৪. ঋষিকেশ
ভারতবর্ষে যোগব্যায়ামের জন্মভূমি হিসাবে বিখ্যাত উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশ। আধ্যাত্মিক শান্তির সন্ধানে, হিন্দু ধর্মের নির্যাস খুঁজে পেতে বা যোগব্যায়ামের মধ্যে মনোনিবেশ করার উদ্দেশ্যে বহু পর্যটক এখানে আসেন। বিশ্বাসীরা মনে করেন সম্পূর্ণ ঋষিকেশ অত্যন্ত পুণ্যস্থান, এবং এখানে এসে প্রার্থনা করলে নির্বাণলাভ সহজ হয়ে ওঠে। প্রতিবছর পর্যটকদের সংখ্যা বেড়ে চললেও, ঋষিকেশের অলিতে গলিতে এখনো রয়েছে ফেলে আসা সময়ের একটা ম্যাজিক। শুধুমাত্র রিলাক্স করার জন্যে, বা প্রকৃতির মধ্যে আপনমনে হারিয়ে গিয়ে কিছুদিন কাটিয়ে আসার জন্যে এই স্থান আদর্শ। জায়গাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে মন ঠান্ডা করা প্রশান্তির ছোঁয়া।
৫. ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স নামে পরিচিত এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটি অবস্থিত একটি বিস্ময়কর জায়গায় - পূর্ব এবং পশ্চিম হিমালয় পর্বতমালার সন্ধিস্থলে। ১৯৩১ সালে প্রথিতযশা পর্বতারোহী ফ্রাঙ্ক এস স্মিথ প্রথম এই উপত্যকার সন্ধান পান, তার আগে অবধি ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ছিল পৃথিবীর অগোচরে। সুউচ্চ এই উপত্যকা ঘিরে রয়েছে হিমালয়ের বরফ ঢাকা পর্বতরাজি। শীতল এই সাম্রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত এই উপত্যকা যেন ভয়ঙ্কর সুন্দর। এবং প্রতি বছর দেশ ও বিদেশ থেকে বহু পর্যটক ছুটে আসেন স্বচক্ষে এই অঞ্চলটিকে চোখে দেখার জন্যে। পৃথিবীর মাঝেই যদি কোথাও স্বর্গ থেকে থাকে, তাহলে হয়তো এটাই সেই জায়গা।
এছাড়াও দেখতে পারেন জাতীয় উদ্যানগুলিতে নানান রকম বন্যপ্রাণী - যেমন লাইম প্রজাপতি, গ্রে লাঙ্গুর, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, হিমালয়ের কালো ভাল্লুক, রেড ফক্স এবং হিমালয়ান উইসেল (বেজি বা নেউল)।