হিমাচলপ্রদেশের কুলু জেলার মালানা গ্রামটি বরাবরই বিতর্কিত সংস্কৃতির জন্য পরিচিত । বর্তমান পরিস্থিতিতে এই গ্রামটি আবারও শিরোনামে স্থান করে নিয়েছে । কেন? কারণ গ্রামের সমস্ত মানুষ কোভিড-১৯ রোধের ভ্যাকসিন নিতে একেবারেই নারাজ ।
বর্তমানে ভারত সরকার কর্তৃপক্ষ দেশকে কোভিড- ১৯ করাল ছায়া থেকে রক্ষার জন্য ভারতের সর্বত্র এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের ও ভ্যাকসিন সরবরাহ করছেন । স্বাস্থ্যকর্মীরা গত দুই মাস ধরে প্রতি সপ্তাহের একদিন অন্তর ৭কিমি চড়াই রাস্তা পেড়িয়ে গ্রামে পৌঁছান মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে ।ভ্যাকসিন ছাড়াও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত রকম পরিষেবা প্রদান করার জন্য প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন ।
গণমাধ্যমের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের বিশ্বাস তারা গ্রিক রাজা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর । তিনি যেমন বারংবার ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যান করেছেন, সেই বিখ্যাত রাজার বংশধর হিসেবে গ্রামবাসীরাও মনে করেন তাদের ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই ।
মালানা গ্রামের ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যান ও দৈবিক বিশ্বাস -
গ্রামের সমস্ত রকম সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মালানা গ্রামের বাসিন্দারা একটি স্থানীয় সরকার গঠন করেছেন । এছাড়াও গ্রামবাসীদের বিশ্বাস গ্রাম সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তাদের দেবতা জামদাগ্নী ঋষি অথবা জামলু দেবতা ।
৩৫বছর বয়সী নির্মলা দেবী, যিনি কুলু জেলার প্রসিদ্ধ সমাজ এবং স্বাস্থ্য কর্মী (ASHA) হিসেবে পরিচিত ; তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন,বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই অঞ্চলের বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছে মানুষকে এই মহামারী এবং ভ্যাকসিন সম্পর্কে অবহিত করলেও গ্রামের মানুষ তাদের দেবতা দিকটাতের উপর আস্থা রেখে ভ্যাকসিন গ্রহণে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গত শুক্রবার, কুলুর লেজিসলেটর সুন্দর ঠাকুর জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের ভ্যাকসিন সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন । তিনি আরও জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার প্রধান কারণ হল গ্রামবাসীদের দৈবিক বিশ্বাস।
মালানা পঞ্চায়েত শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবে -
সৌরা বেহাদ এবং ধারা বেহাদের পক্ষ থেকে মালানা পঞ্চায়েত এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ২০১৪ সালে জনসংখ্যার নিরিখে, এই দুইটি গ্রাম মিলিয়ে সম্পূর্ণ মালানা গ্রামে ৪৭৫টি বসতি রয়েছে । এই মানুষগুলো নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন পশুপালন এবং চাষবাস করা ।এই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সেক্রেটারি টেক চাঁদ জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের ভ্যাকসিন সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা হলেও, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ পরাজিত হয়েছেন ।
অন্যদিকে, রাজু রাম জানিয়েছেন পরবর্তী সপ্তাহে পাশ্ববর্তী গ্রামবাসীদের নিয়ে একটি পার্লামেন্ট মিটিং এর আয়োজন করবেন, আর তারপরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
মালানার লকডাউন পরিস্থিতি-
মালানাতে মোট ২০টি গেস্ট হাউস রয়েছে, তবে মহামারীর কারণে গত বছর মার্চ মাস থেকেই সেগুলি খালি করে দেওয়া হয়েছে।সম্পূর্ণ গ্রামকে মহামারী থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রামবাসীরা পর্যটন শিল্প বন্ধ রেখেছেন । আর সেই কারণেই মালানাতে আজ পর্যন্ত একজন মানুষ ও করোনা আক্রান্ত হননি এবং এই রোগের কারণে কোনো রকম মৃত্যু ও হয়নি ।
মালানার এই সিদ্ধান্তটি কী ঠিক? আপনাদের মতামত আমাদের লিখে জানাতে কিন্তু ভুলবেন না।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)