উত্তরপূর্ব ভারতের সিকিম রাজ্যের রাজধানী শহর হল গ্যাংটক। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই রাজ্যটি দেশী এবং বিদেশী সমস্ত পর্যটকের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কম খরচে প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত লেক, জলপ্রপাত, সর্বোপরি হিমালয় দর্শনের সুযোগটা কোনওভাবেই মিস করা যায় না । আর তাই ভারতের এই রাজ্যটি রোমান্টিক গেটঅ্যাওয়ের জন্য এক্কেবারে আদৰ্শ ।
সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকের ১০টি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান
গ্যাংটক ভ্রমণের প্রথমেই ঘুরে আসুন বাকথাং জলপ্রপাত । এই জলপ্রপাতটি গ্যাংটক হাইওয়ের খুব কাছেই অবস্থিত। ইচ্ছা করলে, প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত এই জলপ্রপাতের মনোরম দৃশ্যটি ক্যামেরাতে বন্দী করে নিতে পারেন ।
গ্যাংটকের বাঁঝাকরি জলপ্রপাতটি প্রায় ১০০ ফিট উঁচু। এই জলপ্রপাতের কাছেই একটি মন্দির রয়েছে । ভগবানের দর্শন করে পাহাড়ি গুহা পেড়িয়ে পৌঁছে যান জলপ্রপাতের উদ্দেশ্যে । এই ঝর্ণার জল একত্রিত হয়ে একটি ছোট্ট জলাশয় তৈরি হয়েছে। পাহাড়ি জলে নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়ার প্ল্যানটা কিন্তু মন্দ হবে না। একবার কল্পনা করুন তো, চারিদিকে সবুজ পাহাড়ে মোড়া জলপ্রপাতের সিগ্ধতা পৃথিবীর আর কি কোথাও পাবেন?
গ্যাংটক ভ্রমণের নাইট লাইফকে উপভোগ করতে পৌঁছে যেতে পারেন ক্যাসিনোতে। পর্যটকদের জন্য এই ক্যাসিনোটি 24/7 খোলা আছে এবং ক্যাপলদের জন্য বেশ ভাল অফার ও উপলব্ধ রয়েছে। তাই কার্ড এবং স্লট মেশিনের সাহায্যে আপনার ভাগ্যপরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এছাড়াও খাবার ও ড্রিংস সহযোগে লাইভ মিউজিক উপভোগ করতে পারেন ।
রোপওয়ের সাহায্যে দেওরালি বাজার থেকে নামনাং স্টেশন পর্যন্ত পার্বত্য অঞ্চল দর্শন করে নিতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনি সম্পূর্ণ গ্যাংটক শহরের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ এর সাক্ষী থাকতে পারেন । এছাড়াও আবহাওয়া ভালো থাকলে তুষার শুভ্র হিমালয়েরও দর্শন পেতে পারেন । পার্বত্য অঞ্চলকে সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্য সকালের দিকের রাইডটা ট্রাই করে দেখতে পারেন ।
গুরুদংমার লেকটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭,০০৪ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে গুরুদংমারের সৌন্দর্য কিন্তু আপনার কল্পনাতীত। এই লেককে কেন্দ্র করে বরফে আবৃত পাহাড়গুলিকে দেখলে আপনার মনে হতেই পারে কোনও রাজ্যের দ্বাররক্ষক তাদের রাজকুমারীকে সযত্নে আগলে রেখেছে। শীতের সময় এই লেক পরিদর্শনে গেলে তুষার আচ্ছাদিত লেকের সৌন্দর্যর প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন ।
গ্যাংটকের এই ন্যাশনাল পার্কটি UNESCO পরিচালিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে পরিচিত। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সুন্দর দর্শন পাওয়া যায় । এই পার্ক থেকে মোট পাঁচটা ট্রেকিং রুট রয়েছে। পর্বতারোহি এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের ট্রেকিং এর জন্য এখানে থাকার ব্যবস্থা ও রয়েছে ।
মনের মানুষের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর জন্য এই জায়গাটি বেছে নিতে পারেন । ডিসেম্বরে গ্যাংটক ভ্রমণে গেলে ফুড এবং কালচার ফেস্টিভ্যাল উপভোগ করতে ভুলবেন না । এই জায়গাটিতে বেশ কিছু বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট এবং বার রয়েছে যেখানে সুস্বাদু খাবার এবং ড্রিঙ্কস চেখে দেখতে পারেন । আর পরিশেষে টুকটাক শপিংও সেরে নিতে পারেন ।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪,১৪০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সিকিমের নাথুলা পাস। এই জায়গাটি বছরের বেশিরভাগ সময়েই তুষার দ্বারা পরিবৃত থাকে। গ্যাংটক থেকে গাড়ি ভাড়া করে ১দিনের ট্যুর করে ঘুরে আসতে পারেন নাথুলা। ভারত এবং চীনের সীমান্ত অঞ্চলের প্রকৃতি তথা পর্বতের অসাধারণ দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, নাথুলা ভ্রমণের আগে পারমিটের প্রয়োজন, তাই ভ্রমণের একদিন আগে পারমিটটা করে নিন ।
সিকিম হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্ক -
গ্যাংটক থেকে একদিনের ট্রিপে ঘুরে আসুন জুওলজিকাল পার্ক। এই পার্কটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪ টে পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা আছে। এই পার্ক থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে ।
তাশী ভিউ পয়েন্ট থেকে হিমালয়ের মনোমুগ্ধকর দর্শন পাওয়া যায়। এই ভিউ পয়েন্ট থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত এর রূপটা প্রত্যক্ষ করতে বেশ রোমাঞ্চকর লাগে। একটা নতুন দিনের সূচনাপর্ব থেকে সন্ধে নামার আগের মুহুর্তের প্রকৃতির মায়াবিনী রূপের প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন ।
কলকাতা থেকে গ্যাংটক ভ্রমণের জন্য বিমান থেকে হোটেল ভাড়া
সমস্ত কিছু সম্পর্কে বিশদে জানার জন্য অনলাইনে সার্চ করে নিন, সেক্ষেত্রে বেশ কিছু ডিসকাউন্ট ও পেয়ে যেতে পারেন। হিমালয়ের কোলে ছুটি কাটাতে আপনি তৈরি তো?