নববর্ষ কাটুক পঞ্চব্যঞ্জন আর মিষ্টিমুখে - রইল পকেটের নাগালে বাঙালিয়ানার সন্ধান...

Tripoto
Photo of নববর্ষ কাটুক পঞ্চব্যঞ্জন আর মিষ্টিমুখে - রইল পকেটের নাগালে বাঙালিয়ানার সন্ধান... 1/1 by Aninda De
বাঙালিয়ানাতে ভরপুর পরিবেশ (ছবি সংগৃহীত)

বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের সকল বাঙালির জন্যে বৈশাখের পয়লা একটি বিশেষ দিন। এই দিনটি শুধু যে নববর্ষ নয়, নতুন করে বাঙালিয়ানায় সিক্ত হয়ে নিজেদের নতুন করে খুঁজে পাওয়ার দিন। আর খাদ্যরসিক বাঙালীদের এই দিন মন জুড়ে থাকে বৈশাখের পঞ্চব্যঞ্জন আহারের চিন্তা। তাই বৈশাখী লগ্নে রইল নাগালের মধ্যেই উদরপূর্তির হরেক উপায়। খান, খাওয়ান, আর মেতে উঠুন নববর্ষ উদযাপনের এই পুণ্য তিথিতে।

পাত পেড়ে পাইস হোটেল

বাঙালি খাবার, পাঁচতারা হোটেলের অযথা চাকচিক্য বাদ দিয়ে, কিন্তু স্বাদে গন্ধে বর্ণে অপরূপ। কলাপাতার ওপর সাজিয়ে দেওয়া এরম গোটা ভোজের অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে ঢুঁ মারুন যে কোনও পাইস হোটেলে। বহু যুগ পুরনো এই হেরিটেজ পাইস হোটেলগুলি কিন্তু প্রতিদিন অগুনতি মানুষের মন জয় করে চলেছে। তাই ছোটবেলার সেই পুরনো স্বাদ ফিরে পেতে চাইলে যেতেই হবে কোনও একটি পাইস হোটেলে, খেতে হবে কব্জি ডুবিয়ে।

কিছু বিখ্যাত পাইস হোটেল : সিদ্ধেশ্বরী আশ্রম, আদর্শ হিন্দু হোটেল, জগন্মাতা ভোজনালয়

কী খাবেন : ঝুরি আলু ভাজা, মাছের মাথা দিয়ে সোনা মুগ ডাল, শুক্তো, রুই-কাতলা-পার্শের নানান ডিশ আর মটন কষা

মুচমুচে চপ কাটলেট

ডায়াবেটিস, প্রেসার, কোলেস্টেরল জাতীয় বিভীষিকাময় ব্যাধিগুলিকে একদিন কাঁচকলা দেখিয়ে কিন্তু আজ সময় করে নিক একটু চপ কাটলেটের সন্ধানে অভিযান। ব্রিটিশ শাসনকালের সময় থেকেই চা এর সঙ্গে টা খাওয়ার অভ্যেস টা আমরা নিজেদের মতন গড়ে তুলেছি। একদিকে যেমন রয়েছে আলুর চপ, কাশ্মিরী চপ, তেমনি আমরা কিন্তু মেতে উঠেছি ফাউল কাটলেট, ডিমের ডেভিল বা মাটন আফগানির মতন অতুলনীয় কিছু সৃষ্টিতে। তাই সন্ধ্যা হলে আজ কিন্তু এপাড়ায় বেপাড়ায় একটু চপের দোকানে যাওয়া তো জাতীয় কর্তব্য!

কিছু বিখ্যাত চপ কাটলেটের দোকান : কালিকা, নিরঞ্জন আগার, আলেন্স কিচেন, মিত্র ক্যাফে, দিলখুশ

কী খাবেন : ডিমের চপ, ফিশ ফ্রাই, প্ৰণ কাটলেট, কবিরাজি

রোল-কল

ভাবুন তো, পুরু ময়দার পরোটা, কিন্তু মুচমুচে করে ভাজা, তাতে ডিমের পুরু এক প্রলেপ। তার উপর সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট চিকেন বা মটন কাবাবের টুকরো, তার ওপরে ঝুরি ঝুরি করে কাটা পেয়াঁজ, শসা আর লঙ্কা কুচি, একটু লেবু আর চাট মশলা, আর সব শেষে টমেটো আর চিলি সসের মধুর মিশেল। সব কিছু মুড়ে টুড়ে তৈরি হল বাঙালির প্রিয় ফাস্ট ফুড, যুগান্তকারী রোল। ছোটবেলা থেকে প্রতিটি বাঙালির কাছে ফাস্ট ফুড বলতে পরিচয় কিন্তু পিজ্জা পাস্তা বার্গারের বদলে মোহময়ী এই রোলগুলির। স্কুলের ছুটির পর বা কলেজের অফ পিরিয়ডে প্রিয় বন্ধুরা দল বেঁধে রোল খাইনি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আজ নববর্ষের দিনে তাই হয়ে যাক আরেকবার সেই রোল-কল।

কিছু বিখ্যাত রোলের দোকান : হট কাঠি রোল, কুসুম, নিজাম

কী খাবেন : এগ রোল, ডবল মাটন রোল, চিকেন কাবাব রোল

মিষ্টিমুখ

উত্তরের নকুড় নন্দী হোক, বা দক্ষিণের বলরাম মল্লিক, কলকাতা জুড়ে কিন্তু ছড়িয়ে রয়েছে অগণিত মুক্তোর মতন পৃথিবী বিখ্যাত কিছু মিষ্টির দোকান। নববর্ষের দিনে এই আইকনিক মিষ্টির দোকানগুলিতে গিয়ে পেটপুরে সন্দেশ মণ্ডা মিঠাই না খেলে আর কীসের নববর্ষ উদযাপন। শুধু ট্র্যাডিশনাল হেরিটেজ মিষ্টি নয়, ফিউশন মিষ্টির দিক থেকেও কিন্তু বাঙালি মিষ্টির দোকানগুলির জুড়ি মেলা ভার।

কিছু বিখ্যাত মিষ্টির দোকান : বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক, গিরিশ চন্দ্র দে ও নকুড় চন্দ্র নন্দী, ভীম চন্দ্র নাগ, সেন মহাশয়

কী খাবেন : চেখে দেখতে পারেন বেকড রসগোল্লা ও মিষ্টি দই, সরের সিঙ্গারা, চকোলেট সন্দেশ, রসগোল্লা

শেষ পাতে শরবত

বৈশাখ মাসে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে নববর্ষ পালনের একটি ভাল দিক হল, যত ইচ্ছে তত ঠান্ডা কিছু খেয়ে নেওয়ার স্বাধীনতা। তবে প্যাকেটবন্দি আইসক্রিম আর বোতলবন্দি কোল্ড ড্রিংকসের বদলে যদি হাতে পেতেন খাঁটি বাঙালি শরবত, যা টেস্টাও মেটায় আর প্রাণও জুড়ায়। এক চুমুকে এক গ্লাস খাঁটি বরফশীতল শরবত সাবাড় করে দেওয়ার কথা ভাবুন, দেখবেন গোটা বছরটাই ভাল কাটবে।

কোথায় : প্যারামাউন্ট, কলেজ স্ট্রিট

কী খাবেন : ডাব শরবত, কেশর মালাই, প্যাশন ফ্রুট, ক্রিম ভ্যানিলা

ট্রিপোটো পরিবারের পক্ষ থেকে রইল আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি নববর্ষের আন্তরিক এবং প্রীতি শুভেচ্ছা। পেট পুজো হোক জমিয়ে, ভাল কাটুক নতুন বছর।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

Further Reads