মানুষ কোনওদিনই গৃহবন্দি হয়ে থাকতে ভালবাসে না। পায়ের তলায় সর্ষে সবার হয় না ঠিকই। কিন্তু মাঝে মধ্যে বেরিয়ে পড়তে সবারই ভাল লাগে। কিন্তু এই ভাল লাগায় এখন বাধ সেধেছে করোনা। অনেক ট্রেন চলছে না, বিমানও অনেক নিয়ন্ত্রিত। এছাড়াও অনেক বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন বিভিন্ন দেশের সরকার। অবশ্য ভ্রমণ পিপাসুরা বলছেন যে এ ব্যবস্থা তাও মন্দের ভাল। দেরাদুন না যেতে পারি, দিঘা তো যাওয়া যায়। কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া গিয়েছে করোনা। আর তাই অল্প সংখ্যক হলেও বেড়ানো আবার শুরু হয়েছে। আপনারও যদি মন উড়ু উড়ু হয় তাহলে বেরিয়ে পড়তে বাধা নেই। কিন্তু তার আগে জেনে নেওয়া দরকার কী কী নিয়ম মানা উচিত।
নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখুন
বেড়াতে সবারই ভাল লাগে। কিন্তু তার আগে নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখুন। যদি আপনার কোনও ক্রনিক অসুখ থাকে বা কোনও কঠিন রোগ থেকে আপনি সদ্য সেরে উঠে থাকেন তাহলে এখন বাড়ির বাইরে পা না রাখাই ভাল। এর সঙ্গে সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের কথাও। বাড়িতে পাঁচ বছরের শিশু, গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্ক সদস্যদের পারলে এই ট্রিপ থেকে আপাতত বাদই রাখুন।
বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন এমন যে কোনও ব্যক্তির উচিত গন্তব্যস্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সে দেশে ভ্রমণের জন্য কোনও বিধিনিষেধ আছে কিনা, প্রবেশের সময় আলাদা থাকার প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ভ্রমণ পরামর্শ যাচাই করা।
মানসম্পন্ন ভ্রমণ সতর্কতা যাচাই করা ছাড়াও নিজেকে আলাদা রাখা বা নিজের দেশে ফেরত পাঠানো এড়াতে সর্বশেষ কোভিড-১৯ আপডেট জানতে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সংস্থার ওয়েবসাইটটি দেখে নেয়া উচিত। এই ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলির একটি তালিকা এবং বিধিনিষেধ সম্পর্কে বলা আছে।
ভ্রমণের সময়, সকল পিতামাতার নিজের এবং তাদের সন্তানদের জন্য মান সম্পন্ন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা উচিত: ঘন ঘন হাত ধোয়া, বা কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে এমন স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, শ্বাসতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা (কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় কনুই দিয়ে ঢাকা বা টিস্যু ব্যবহার করা ও তারপর ব্যবহূত টিস্যুকে বিনে ফেলে দেওয়া) এবং কাশি বা হাঁচি দিচ্ছে এমন কারও সংস্পর্শে না যাওয়া। এছাড়াও, সব বাবা মায়েদের উচিত সব সময় একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ডিসপোজেবল টিস্যু পেপারের প্যাকেট এবং জীবাণুনাশক টিসু পেপার বহন করা।
এই ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু যেসব পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো হল: বিমান বা অন্যান্য যানবাহনের অভ্যন্তরের বসার জায়গা, সিটের হাতল, টাচস্ক্রিন ইত্যাদি জীবাণুনাশক কাপড় দিয়ে পরিস্কার করা। এছাড়াও, আপনি ও আপনার সন্তান যেখানে থাকছেন এমন হোটেল বা অন্য বাসস্থানের মূল অংশগুলো, দরজার হাতল, রিমোর্ট কন্ট্রোল ইত্যাদি পরিস্কার করার জন্য জীবাণুনাশক কাপড় ব্যবহার করা।
সবচেয়ে ভাল হয় যদি নিজের জন্য একটি করে চাদর ও বালিশের ওয়ার নিয়ে যাওয়া যায়। হোটেলের জিনিসপত্র যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করাই ভাল। বাচ্চাদের জন্য একটি চামচ, থালা ও গ্লাস নিয়ে যেতে পারেন।
যেগুলো করবেন না
এত গেল কী কী করণীয়। তার সঙ্গে সঙ্গে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে কী কী করা উচিত নয় সেটাও।
১) হাতের কাছে স্যানিটাইজার রাখুন। অযথা মুখে না নাকে হাত দেবেন না।
২) গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কোথাও বসবেন না বা দাঁড়াবেন না। ৬ ফুট দূরত্ব মেনে চলুন।
৩) বিমান বা রেলের বাথরুম ব্যবহারের আগে হাত ধোয়া অবশ্য কর্তব্য।
৪) নিজেদের খাবার নিজেরাই নিয়ে যাবেন। রাস্তা থেকে কিছু কিনে না খাওয়াই ভাল।
৫) রেল ও বিমানের কর্মীরা গ্লাভস, শিল্ড ও মাস্ক পরেছেন কিনা এবং তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন কিনা সেটাও দেখতে হবে।
সবশেষে বলি, আপনি যেমন আশা করবেন আপনার সহযাত্রীরা সচেতন নাগরিক হিসবে দায়িত্ববান থাকবেন। ঠিক তেমনই কিছু দায়িত্ব আপনার থেকেও কাম্য। তাই অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রিপ ক্যান্সেল করে দিন। ফিরে এসেও যদি কোভিডের কোনও উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই পরীক্ষা করে নেবেন। কোনও উপসর্গ না থাকলেও নুন্যতম ১০ থেকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেনটাইনে থাকবেন।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।