বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি...

Tripoto
Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 1/10 by Deya Das
শিল্প-কলার অসাধারণ রূপশৈলী (ছবি সংগৃহীত)

ছেলেবেলায় পাঠ্যপুস্তকে পড়া ভারতের মন্দিরবেষ্টিত শহরগুলির মধ্যে অন্যতম হল কোনারক। একটু ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে জানা যায়, একসময় ওড়িশা রাজ্য বিভিন্ন রাজার রাজত্বের অধীনে ছিল। আর তাই এই রাজ্যে বৌদ্ধ, জৈন, হিন্দু এবং মহিমা সংস্কৃতির মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা যায়। এমনকি ইন্দোনেশিয়া থেকে বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্যও এই উপকূলীয় সাম্রাজ্যেটিকেই বেছে নেওয়া হত।

ওড়িশার প্রস্তরীয় শিল্পকার্য থেকে অনন্য ইতিহাস এবং মন্দির সংস্কৃতি সমগ্র ভারতবর্ষের কাছে যথেষ্ট প্রশংসনীয়। এখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্মভাবে মিশে আছে যেমন পুরীর জগন্নাথ মন্দির কিংবা কোনারক এর সূর্য মন্দির, ঠিক তেমনি উদয়গিরি খণ্ডগিরি গুহা অথবা বৌদ্ধ মনেস্ট্রিগুলি। এছাড়াও ওড়িশা রাজ্যের হ্যান্ডলুম শিল্পীদের হাতের নিখুঁত কাজে ধরা দেয় লোকগাথার সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবিটি।

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 2/10 by Deya Das
লোকালয়ের জীবন (ছবি সংগৃহীত)

প্রকৃতির সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হেঁটে পৌঁছে যেতে পারেন পুরীর সমুদ্রতটে এবং কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পারেন। পরিশেষে অতীতের জলন্ত নিদর্শন হিসেবে গুহাগুলিও পরিদর্শন করে নিতে পারেন।

উদয়গিরি গুহা

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 3/10 by Deya Das
ছবি সংগৃহীত

ল্যাটেরাইট মাটি দ্বারা নির্মিত পাহাড় উদয়গিরি এবং খণ্ডগিরি একটি ছোট পথ দ্বারা বিভাজিত ছিল। তবে আধুনিকতার পরিমন্ডলে সেই ছোট পথ এখন রাজপথে পরিণত হয়েছে এবং এই রাজপথটি ভুবনেশ্বর এবং চন্দককে সংযুক্ত করেছে। প্রাচীন কালে উদয়গিরি এবং খণ্ডগিরি পাহাড় কুমারী এবং কুমারপর্বত নামে অভিহিত ছিল। দুই পাহাড় মিলিয়ে পাহাড় খোদাই করে এখানে মোট ৩৩টি গুহা আছে।

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 4/10 by Deya Das

উদয়গিরি পাহাড় খোদাই করে ১৮ টি এবং খন্ডগিরি পাহাড় খোদাই করে ১৫টি গুহা নির্মাণ করা হয়েছে। এই গুহা গুলির বেশিরভাগই একতলা বিশিষ্ট; তবে দুইতলার কিছু কিছু গুহাও লক্ষণীয়। গুহাগুলির দেওয়ালে অঙ্কিত শিলালিপি থেকে জানা যায় এই গুহাগুলি একসময় জৈন মনেস্ট্রির অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিছু কিছু গুহায় বৌদ্ধ সংযুক্তিকরণও লক্ষ করা যায়।

কোনারকের সূর্য মন্দির

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 5/10 by Deya Das
কোনারকের মন্দিরের সৌন্দর্য (ছবি সংগৃহীত)

কোনারকের সূর্য মন্দিরে গেলে আপনি বুঝতে পারবেন সময়ের রহস্যময়তা এবং সমগ্র পৃথিবীর প্রাণ রক্ষার আধার ও শক্তির প্রধান উৎস হল সূর্য। হাজার হাজার দর্শণার্থীর মধ্যে কেবল গুটি কয়েক দর্শণার্থীই এই মন্দির নির্মাণের উদ্দেশ্য এবং বার্তাকে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। মন্দিরের অন্দরসজ্জা পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় কেন পৃথিবীর অন্য সমস্ত মন্দিরগুলির তুলনায় এটি ব্যতিক্রমী।

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 6/10 by Deya Das

এই মন্দিরটি রাজা নরসিংহদেব কালো গ্রানাইট পাথর সহযোগে নির্মাণ করেন। বর্তমানে এই মন্দিরটি বিশ্বের হেরিটেজ সাইটগুলির মধ্যে অন্যতম। রথের আকারে মন্দিরটি গড়ে তোলা হয়েছে এবং মন্দিরের একমাত্র দেবতা হলেন ভগবান সূর্যদেব। মন্দিরটি মূলত পাথর খোদাই করে নির্মাণ করা হয়েছে এবং এটি স্থাপত্য শিল্পের একটি অনবদ্য নিদর্শন। বর্তমানে এই মন্দিরের কিছু অংশ ধ্বংসাবশেষ-এ পরিণত হয়েছে। তাই এই স্থাপত্যগুলি সংরক্ষণের জন্য সূর্য মন্দির মিউজিয়ামের নির্মাণ করা হয়েছে এবং এই মিউজিয়ামটি পরিচালনা করেন আরকিওলজি সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ।

পুরী

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 7/10 by Deya Das
সূর্যোদয়ের রঙে রঙিন (ছবি সংগৃহীত)

পরম্পরা অনুসারে জানা যায় পুরী একসময় ঘন বৃক্ষাচ্ছাদিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিল এবং সাবারাস সম্প্রদায় (প্রাক আর্য এবং প্রাক দ্রাবিড় যুগের অস্ট্রিক ভাষাগত একটি আদিম সম্প্রদায়) এখানে অধিষ্ঠিত ছিল। সমুদ্রতট থেকে বর্ণময় রঙের ছটায় সূর্যোদয় দর্শন একটা অপূর্ব অভিজ্ঞতা। ভারতে অবস্থিত অন্যান্য সমুদ্র সৈকতের মতো এখানেও বিচ নিকটবর্তী রিসোর্ট উপলব্ধ আছে।

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 8/10 by Deya Das
জগন্নাথ মন্দির (ছবি সংগৃহীত)

তবে আক্ষরিক অর্থে পুরী মানেই হল জগন্নাথ মন্দির। এই মন্দিরটি সমগ্র ওড়িশার সবচেয়ে উচ্চতম মন্দির (৬৫ মিটার) এবং ভারতবর্ষের চমকপ্রদ মন্দির হিসেবে পরিচিত। মন্দিরের প্রধান দ্বারে রয়েছে ১৬ ভুজযুক্ত একশিলার স্তম্ভ যার উচ্চতা প্রায় ১১মিটার। এই স্তম্ভটি এখানে অরুণা স্তম্ভ নামে পরিচিত, যা ১৮ শ শতকে সূর্য মন্দির থেকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে স্থাপন করা হয়। পুরীর অন্যান্য বিখ্যাত মন্দিরগুলি হল - গুন্ডিচা, লোকনাথ, শুনারাগৌরাঙ্গ, দরিয়া মহাবীর এবং টোটা গোপীনাথ।এছাড়াও পুরীতে অনেকগুলি পবিত্র জলাধার- নরেন্দ্র, মার্কান্ডেয়, শ্বেত গঙ্গা এবং ইন্দ্রদ্যুম্ন রয়েছে ।

চিল্কা হ্রদ

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 9/10 by Deya Das
চিল্কা হ্রদের একান্ত নিভৃত পরিসর (ছবি সংগৃহীত)

পুরী জেলায় অবস্থিত এই হ্রদে শতপদ কিংবা যে কোনও স্থান থেকে পৌঁছে যেতে পারেন। এখানে আপনি বোটে করে ডলফিন দর্শন করে আসতে পারেন, বিভিন্ন পাখির সন্ধান পেতে পারেন এবং ছোট্ট দ্বীপের একপ্রান্তে সমুদ্র এবং অন্য প্রান্তে চিল্কা হ্রদের সুন্দর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারেন। গাড়ি সহযোগে পুরী থেকে চিল্কা যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। হ্রদ ভ্রমণের জন্য এই নৌকাগুলি যথেষ্ট সুরক্ষিত। চিল্কা লেকের গভীরতা প্রায় ১৫- ২০ ফুট, একদিনের যাত্রায় এই ভ্রমণটা বেশ রোমহর্ষক হতে পারে ।

চাঁদিপুর

Photo of বর্ণময় ওড়িশা- সাধ্য এবং সাধের মধ্যে বর্ণময় এই রাজ্য ভ্রমণের খুঁটিনাটি... 10/10 by Deya Das
চাঁদিপুর বিচের সৌন্দর্য (ছবি সংগৃহীত)

এই সমুদ্রতটের মূল বৈশিষ্ট হল ভাটার সময় প্রায় ১ থেকে ৫ কিমি অঞ্চল সম্পূর্ণ জলশূন্য থাকে, তবে জোয়ার এর সময় পুনরায় জলমগ্ন হয়ে যায় । চাঁদিপুর থেকে এই দৃশ্যটি আপনি দিনে দুবার পরিলক্ষণ করতে পারবেন। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই এই সমুদ্রসৈকতটি জীব -বৈচিত্রকে সমর্থন করে। চাঁদিপুর-অন-সি অঞ্চলটি ভারতীয় সেনাবাহিনির ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জের জন্যও ব্যবহার করা হয় ।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads