কলকাতার বুকে অন্যরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পৌঁছে যেতে পারেন এই ৫টি নতুন স্বাদের রেস্তোরাঁতে

Tripoto
Photo of কলকাতার বুকে অন্যরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পৌঁছে যেতে পারেন এই ৫টি নতুন স্বাদের রেস্তোরাঁতে 1/2 by Deya Das

আপনি কি জীবনের বিশেষ দিনটা একটু আলাদা ভাবে কাটানোর চেষ্টা করছেন? কিংবা ভালবাসার মানুষকে একটা অন্যধরণের গেট-অ্যাওয়ে উপহার দিয়ে সারপ্রাইস করতে চান? হলিউডি স্টাইলে ভালবাসার গভীরতা বোঝানোর জন্য পাশ্চাত্য দেশ ভ্রমণের প্রয়োজন নেই। এখন খোদ কলকাতাতেই প্রিয়জনের সাথে রোমান্টিক গেট-অ্যাওয়ের জন্য রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ।

ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য শিল্পে পরিপূর্ণ, যানজটে ঘেরা ব্যস্ত শহরে বসেই প্রিয়মানুষের সাথে আপনি অনন্য অভিজ্ঞতার প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন। বিবাহবার্ষিকী থেকে জন্মদিন, এই রেস্তোরাঁগুলি আপনার বিশেষ দিনটিকে আরও মধুর করে তুলতে পারে। বছরের যে কোনও সময় এই রেস্তোরাঁগুলিতে আপনাকে স্বাগত।

১. ভোজনরসিক মানুষকে পরিতৃপ্তি এনে দিতে পারে ট্রাম রেস্টুরেন্ট -

কলকাতা শহরের সাথে ট্রাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বর্তমানে বিশ্বের মাত্র কয়েকটি শহরেই ট্রামের দেখা পাওয়া যায় । একবার কল্পনা করে দেখুন তো, ধাবমান ট্রামে বসে তৎকালীন কলকাতা শহরকে ফিরে দেখার সঙ্গে সঙ্গে রাজকীয় পরিবেশে প্রিয়মানুষের সাথে মিষ্টি মধুর আলাপচারিতা এবং সুস্বাদু বাঙালি খাবার চেখে দেখার সুযোগটা কি কোনওভাবে মিস করা যায়?

ভিক্টোরিয়া ট্রাম কার রেস্টুরেন্ট কিন্তু আপনার কল্পনাকে বাস্তব করতে পারে। চলমান রেস্তোরাঁটি এসপ্লেনডের শহীদ মিনার থেকে খিদিরপুরপুর হয়ে পুনরায় ফিরে আসে । তবে অতিরিক্ত যানবাহন থাকলে এটি ধীরগতিতে চলে। এখানে আপনি নিরামিষ এবং আমিষ দুই খাবারের স্বাদ আহরণ করতে পারেন ।

খরচ -

এই রেস্তোরাঁতে খাবার খরচ পরিবর্তনশীল । তবে আমিষ খাদ্য ৯৯৯ টাকা এবং নিরামিষ খাদ্য ৭৯৯ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন ।

সময়সীমা -

এই রেস্তোরাঁটি প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে । ( তবে অফিস টাইমটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো) এই চলমান রেস্তোরাঁটি দিনে মোট ৪টি ট্রিপ করে। এই ট্রিপ গুলির সময় যথাক্রমে - দুপুর ১২টা -দুপুর ২টো, দুপুর ২টো- বিকাল ৪টে, বিকাল ৪টে - সন্ধে ৬টা এবং সন্ধ্যে ৬টা- রাত ৮টা পর্যন্ত।

২. নদীবক্ষে একটা সুন্দর সময় কাটাতে পারেন -

নদীর বুকে কোন এক বিলাসবহুল জাহাজে ভালবাসার মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোর মুহূর্তগুলো বেশ রোম্যান্টিক, তাই না? তাহলে আর দেরি কেন? মিলেনিয়াম পার্কের ভিভাদা জেটি পৌঁছে যান, আর গঙ্গা নদীর বুকে ভাসতে ভাসতে কলকাতা কিংবা হাওড়া শহরকে নতুন করে চিনে নিন। পড়ন্ত বিকেলে প্রিয় মানুষের সঙ্গে একত্রে সূর্যাস্ত দেখতে চাইলে অথবা সন্ধেবেলায় ডিনার ডেটের জন্য এই ক্রুজ রেস্তোরাঁটিতে ভ্রমণের প্ল্যান করতে পারেন।

ভিভাদা ক্রুজ এবং ক্রস ইন্ডিয়া ক্রুজ এই শহরের শ্রেষ্ঠ রিভার ক্রুজ হিসেবে পরিচিত, অতিথিদের জন্য এখানে নিরামিষ এবং আমিষ দুইই পরিবেশন করা হয়। ভিভাদা ক্রুজ কর্তৃপক্ষের বিখ্যাত ক্রুজগুলি হল পরমহংস, মিলেনিয়াম, মৎসকন্যা, অস্পিসিয়াস এবং জলদূত। অন্যদিকে ক্রস ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের বিখ্যাত ক্রুজগুলি হল ডিজয়ার, মৎসকন্যা, পরমহংস, মিলেনিয়াম, রিভিয়েরা, সুমঙ্গল এবং অস্পিসিয়াস। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি মৎসকন্যা এবং অস্পিসিয়াস আপনারা নির্দ্বিধায় বুক করতে পারেন।

খরচ -

শুধুমাত্র ব্রেকফাস্ট এবং সান্ধ্যকালীন স্ন্যাক্স এর জন্য মাথাপিছু খরচ পড়বে ১০৫০ টাকা। আর আপনি যদি ক্রুজে লাঞ্চ এবং ডিনার ও সারতে চান সেক্ষেত্রে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১৫৭৫ টাকা । ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে অস্পিসিয়াস ক্রুজ অতিথিদের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করেছিল। প্রিয় মানুষের সাথে ভ্যালেন্টাইন ডে এর মতো বিশেষ দিন কাটানোর জন্য দুজন মানুষের খরচ পড়বে ৩৫৪০ টাকা।

৩. দ্বীপপুঞ্জে রোদের ঝিলিমিলি খেলা উপভোগ করতে পারেন -

যানজটে এবং ব্যস্ততায় পরিপূর্ণ কলকাতা শহরের সঙ্গে আমরা প্রত্যেকেই পরিচিত। কিন্তু কলকাতা শহরের নির্জনতাকে কখনও উপভোগ করেছেন? কিংবা বিষণ্ণ দুপুরে শান্ত দ্বীপের মধ্যে হঠাৎ এক ঝাঁক পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হতে এবং কলকাতা শহরের প্রকৃতিকে প্রাণভরে উপভোগ করার জন্য পৌঁছে যেতে পারেন ক্যাফে একান্তে। ইকো পার্কে কৃত্রিমভাবে নির্মিত দ্বীপে অবস্থিত একটি হাউসবোট ক্যাফে, ক্যাফে একান্তে নামে পরিচিত। এই বোটটি ইকো পার্কের একটা নির্দিষ্ট ঘাট থেকে ছেড়ে কটেজ পর্যন্ত অতিথিদের নিয়ে যায়। স্ন্যাক্স সহযোগে এক কাপ কফির সঙ্গে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করার প্ল্যান বেশ রোমাঞ্চকর হতে পারে। প্রকৃতির প্রেমে মুগ্ধ হয়ে এখানে রাত্রিবাসের জন্য কটেজগুলিকে বেছে নিতে পারেন।

সময়সীমা -

পর্যটকদের জন্য ক্যাফে একান্তে মঙ্গলবার থেকে রবিবার দুপুর ১টা থেকে রাত ১০.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে । সোমবার এই ক্যাফেটি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

৪.কলকাতা গেট থেকে একটি অসাধারণ চিত্রাকর্ষক দৃশ্যের সাক্ষাৎ পেতে পারেন -

মাটি থেকে প্রায় ২৫মিটার উচ্চতায় অবস্থিত একটি ঝুলন্ত রেস্তোরাঁর অন্য নাম কলকাতা গেট বা বিশ্ব বাংলা গেট। এই ধরণের নতুন চিন্তাভাবনা এবং পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্কিটেকটরা একটা ধন্যবাদজ্ঞাপনের যথার্থ অংশীদার। বৃত্তাকার আকৃতির এই রেস্তোরাঁর মধ্যে একটি গ্যালারি এবং একটি বিপণী রয়েছে। রেস্তোরাঁর একদিকে রয়েছে মেট্রো রেল এবং অন্যদিকে আকাশচুম্বী অট্টালিকা। এই রেস্তোরাঁ থেকে নীল আকাশের বিস্তৃতিকে উপভোগ করতে পারেন। তাছাড়াও, সূর্যাস্তের সময় ক্যানভাসে আঁকা দৃশ্যপটের প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে উঠতেই পারেন। এই রোম্যান্টিক অভিজ্ঞতাটি আপনার ভ্যালেন্টাইন-ডে কে আরও মধুময় করে তুলতে পারে।

সময়সীমা -

এই রেস্তোরাঁটি সম্পূর্ণ ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ অর্থাৎ ৮ ই ফেব্রুয়ারী থেকে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৪৫ মিনিট অবধি দর্শকদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে খোলা আছে। সোমবার এই রেস্তোরাঁটি বন্ধ থাকে।

৫. ঘোড়ার গাড়িতে চেপে প্রাচীন কলকাতার স্মৃতি রোমন্থন করতে পারেন -

প্রাচীন কলকাতার স্মৃতি কে পুনরায় ফিরে পেতে চাইলে এয়ার কন্ডিশনার ঘোড়ার গাড়ির রেস্তোরাঁটি ট্রাই করে দেখতে পারেন। শ্রী সুদীপ শীল মহাশয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ধারণার জন্যই একটি ঘোড়ার গাড়ি চলমান রেস্তোরাঁতে পরিণত হয়েছে। এই ঘোড়ার গাড়ির অন্দরসজ্জার মধ্যেও রয়েছে রাজকীয় স্বাদ।

Photo of কলকাতার বুকে অন্যরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পৌঁছে যেতে পারেন এই ৫টি নতুন স্বাদের রেস্তোরাঁতে 2/2 by Deya Das

স্থান -

এই ঘোড়ার গাড়িটি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে রেস কোর্স এর দক্ষিণের প্রবেশদ্বার হয়ে ফোর্ট উইলিয়াম ঘুরিয়ে আপনাকে স্ট্যান্ডে ফিরিয়ে আনবে। অনেকসময় এই রাইড এর সাহায্যে আপনি প্রিন্সেপ ঘাট ও ঘুরে আসতে পারেন তবে সেটি অনুরোধ সাপেক্ষ। আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা প্রিন্সেপ ঘাটে সময় কাটাতে পারেন।

খরচ

• শুধুমাত্র ফোর্ট উইলিয়ামে ঘোরার জন্য খরচ - ৫০০ টাকা

• প্রিন্সেপ ঘাট পর্যন্ত ঘোরার খরচ - ১৫০০ টাকা

• এয়ার কন্ডিশনার ঘোড়ার গাড়িতে রাইড করার খরচ - ১২০০ টাকা

• সাধারণ ঘোড়ার গাড়িতে রাইড করার খরচ - ৫০০ টাকা

• ১ঘন্টার জন্য এয়ার কন্ডিশনার ঘোড়ার গাড়িতে রাইড করার খরচ - ৬০০০ টাকা

• সারারাত ঘোড়ার গাড়িতে রাইড করার খরচ-১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা।

বুকিং -

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পৌঁছে ঘোড়ার গাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বললে ঘোড়ার গাড়ির রেস্তোরাঁর সম্পর্কে বিশদে সমস্ত তথ্য পেয়ে যাবেন।

কলকাতা শহরের মধ্যে থেকেই রূপকথার রাজত্ব থেকে ঘুরে আসার প্ল্যানটা কেমন ছিল আমাদের জানাতে কিন্তু ভুলবেন না ।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads