সকল ভ্রমণ পিপাসু মানুষ বছরের শেষ কিংবা নতুন বছরের প্রথম মাসে সপ্তাহখানেকের ছুটির পরিকল্পনা করেন। কিন্তু পরিকল্পনা করলেই তো হল না, ছুটির অবসর না পেলে সমস্ত পরিকল্পনা জাস্ট এক মিনিটে ভেস্তে যেতে পারে। আপনার ক্ষেত্রেও যদি এমনটাই ঘটে থাকে তাহলে ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তাহখানেকের ছুটি নিয়ে এই ভ্রমণের প্ল্যানটা করে ফেলতে পারেন।
এখানে ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত ভ্রমণের কয়েকটা শ্রেষ্ঠ ঠিকানা রইল। চট করে ব্লগটা পড়ে ফেলুন আর আপনার ফেব্রুয়ারি মাসের ট্রাভেল ডেস্টিনেশনের প্ল্যানটা রেডি করে নিন।
বন্যপ্রাণ এবং অরণ্য যদি আপনার একমাত্র ভালোবাসার জায়গা হয়ে থাকে, তাহলে ফেব্রুয়ারি মাসে অসমের কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণের প্ল্যান করে ফেলতে পারেন। এই অভয়ারণ্যটি প্রধানত বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত। ভ্রমণার্থীদের জন্য এই অভয়ারণ্যটি নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত খোলা থাকে। এখানে গণ্ডার ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পশু এবং নানান ধরণের পাখিদের দেখা পাওয়া যায়; আর সেই কারণেই পশুপ্রেমী মানুষের কাছে এই অভয়ারণ্যটিকে স্বর্গ বললেও কোনও ভুল হবে না। তবে সম্পূর্ণ অভয়ারণ্য ভ্রমণ এবং অজানা পশুদের সন্ধান পাওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসটা এক্কেবারে আদর্শ। এই সময় এখানকার তাপমাত্রা ২৫ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকে।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
অনেক অচেনা পশু এবং পাখীদের সাথে আলাপ করে আসতে পারেন, বনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে বনের মধ্যে রাত্রিবাসের প্ল্যান করতে পারেন, মাজুলি দ্বীপপুঞ্জ ঘুরে দেখতে পারেন, শিবসাগরের স্থাপত্যশিল্পের কারুকার্য দেখে মুগ্ধ হতে পারেন এবং অসমের বিখ্যাত চা বাগান পরিক্রমা করে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
কাজিরাঙা পৌঁছনোর জন্য সবচেয়ে সহজ পথটি হল বিমানযাত্রা। ভারতের যে কোনও জায়গা থেকে পৌঁছে যান গুয়াহাটি বিমানবন্দর। বিমানবন্দর থেকে একটা ছোট গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন অভয়ারণ্যে। আর অভয়ারন্যের নিকটতম রেলস্টেশনটি হল হেলেম, যা অভয়ারণ্য থেকে ৩০কিমি দূরে অবস্থিত।
কোথায় থাকবেন
বনের মধ্যে রাত্রিবাস করতে চাইলে নেচার হান্ট ইকো ক্যাম্পে থাকতে পারেন, আর আপনি যদি বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাস করতে চান তাহলে ইনফিনিটি রিসোর্ট কাজিরাঙাকে বেছে নিতে পারেন।
আগ্রা ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হল তাজমহল। আর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে তাজমহলকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ তাজ মহোৎসব পালিত হয়। এই সময় এখানে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংস্কৃতি, শিল্পকলা এবং খাদ্যাভ্যাস মিলিয়ে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ফেব্রুয়ারী মাসে আগ্রা ভ্রমণে গিয়ে এই বর্ণময় এবং ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি উপভোগ করতে কিন্তু একদম মিস করবেন না। এই সময় এখানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ১০ডিগ্রি থাকে।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
আগ্রার দর্শনীয় স্থানগুলো হল আগ্রা ফোর্ট, ইতমাদ - উদ -দৌলার সমাধি, জামা মসজিদ ইত্যাদি। এছাড়াও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে তাজ মিউজিয়ামও ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন -
ভারতের যে কোনও ছোট বড় শহর থেকে ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারেন আগ্রা। আগ্রার নিকটতম বিমানবন্দর নিউ দিল্লিতে অবস্থিত। বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পৌঁছে যেতে পারেন আগ্রা।
কোথায় থাকবেন -
সম্রাটদের মতো বিলাসিতায় থাকতে হলে ওবেরোয় অমরভিলা আগ্রাতে রাত্রিবাস করতে পারেন। এছাড়াও, কম খরচে দ্য কোরাল ট্রি হোমস্টেকেও ভ্রমণকালীন বাসস্থান হিসেবে বেছে নিতে পারেন ।
পাহাড়ের কোলে শান্ত এবং নিস্তব্ধতায় রোমান্টিক সময় কাটাতে হলে চলে আসতে পারেন কুর্গ। স্কট উপনিবেশিকতার সময় এই কুর্গ এর সাথে স্কটিশরা তাদের স্কটল্যান্ডের একটা নিবিড় সাদৃশ্য খুঁজে পান। আর তাই সম্পূর্ণ শহরটিকেই স্কটিশরা নিজেদের দেশের মতো করে সাজিয়ে তোলেন। বর্তমানে কুর্গ ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিত। ফেব্রুয়ারি মাসটি কুর্গ ভ্রমণের জন্য আদর্শ। সকালের দিকের তাপমাত্রা ২০ডিগ্রি থাকলেও রাতে এখানকার গড় তাপমাত্রা থাকে ৮- ১০ডিগ্রির মতো।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
কুর্গ থেকে ওয়েনদ ওয়াইল্ডলাইফ স্যানচ্যুয়ারি ভ্রমণ করে আসতে পারেন কিংবা দক্ষিণী ইতিহাস সম্পর্কে জানতে মাদিকেরি ফোর্টও ঘুরে আসতে পারেন, অথবা একদিনের ট্রিপে নিঃসর্গধামা জলপ্রপাত পরিদর্শন করে আসতে পারেন কিংবা কটে বেট্টা এবং নানান মশলার চাষ দেখে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
বিমানে গেলে কুর্গ এর নিকটতম বিমান হল ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দর। বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে ১৬০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান গন্তব্যে। এছাড়াও কুর্গ পৌঁছনোর জন্য রেল এবং সড়কপথেরও যথেষ্ট সুবিধা আছে।
কোথায় থাকবেন
স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার সাক্ষী থাকতে ছেত্তি হোমস্টেতে রাত্রিবাস করতে পারেন। অথবা বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাস করতে চাইলে দ্য তামারা কুর্গ হোটেলটিকে বেছে নিতে পারেন ।
আপনি কি জানেন উটি শৈলশহরটির আসল নাম হল ওটাকামুন্ড? প্রকৃতপক্ষে উটি নামটি এই শহরের ডাকনাম বললেও ভুল হবে না। দাক্ষিণাত্যের অন্যতম প্রধান পর্বতমালা নীলগিরিকে কেন্দ্র করে এই শহরটি গড়ে উঠেছে। সবুজে ঘেরা পাহাড়, শীতল আবহাওয়া, স্নিগ্ধ পরিবেশ ইত্যাদি মিলিয়ে উটি ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ স্থানের আখ্যায় ভূষিত। ফেব্রুয়ারি মাসে এই অঞ্চলের সকালের তাপমাত্রা ১৫ডিগ্রি এবং রাতের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি থাকে।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
উটি লেকের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে বোটিং ট্রাই করতে পারেন, প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর রূপকে প্রাণভরে আস্বাদন করতে নীলগিরি রেলওয়ের ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেন সফর করতে পারেন, আবার ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন দোদ্দাবেত্তা শৃঙ্গতে। এখানকার বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিদর্শন করে আসতে পারেন। এছাড়াও প্রাচীনকালে নির্মিত পাথরের বাড়িগুলোও দর্শন করে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
উটির নিকটতম বিমানবন্দর হল কোয়েম্বাটুর, এখান থেকে ছোট গাড়ি ভাড়া করে ৮৮কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন গন্তব্যে। উটির নিকটতম রেল স্টেশনটি হল মেট্টুপাল্যুম, যা শহর থেকে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত। এছাড়াও, সড়কপথেও আপনি উটি পৌঁছতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
উটি শৈল শহরের নতুন অভিজ্ঞতা খুঁজে পেতে যস্টেল উটি-তে থাকতে পারেন, তাছাড়াও বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাস করতে লেপার্ড রক ওয়াইল্ডরনেস রিসোর্টে থাকতে পারেন।
মহারাষ্ট্রের পাঁচগানী মালভূমি অঞ্চলের শৈলশহর হল মহাবালেশ্বর। তিব্বতের পর এই মালভূমি অঞ্চলটি দ্বিতীয় বৃহত্তম মালভূমি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এই আগ্নেয় মালভূমি অঞ্চলটি সারাবছরই সবুজ তৃণভূমি দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। আগ্নেয়গিরির লাভা নির্মিত এই স্থানটি বর্তমানে ভ্রমণপিপাসু মানুষের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে তাপমাত্রা থাকে ২০ডিগ্রির মধ্যে।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
এখান থেকে আপনি স্ট্রবেরি বাগান দেখে আসতে পারেন, ম্যাপ্র ফুড গার্ডেন থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন, বোটিং করে ভেন্না লেক পরিদর্শন করে আসতে পারেন, আবার ট্রেকিং বা পাঁচগানী দর্শনও করে আসতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন
মহাবালেশ্বর ভ্রমণের জন্য রেলপথই আদর্শ। নিকটতম রেল স্টেশনটি ৬০ কিমি দূরে ওয়াঠারে অবস্থিত।
কোথায় থাকবেন
মহাবালেশ্বরে বিলাস বহুল হোটেলে থাকতে চাইলে বেল্লা ভিস্তা রিসোর্ট-কে বেছে নিতে পারেন, এছাড়াও সুলভ মূল্যের নির্ভানা ইন হোটেলটিও বেশ ভাল।
হিমালয়ের পাদদেশে ছুটি কাটাতে চাইলে লাচেনকে বেছে নিতে পারেন। লেপচা সম্প্রদায় পরিবেষ্টিত এই অঞ্চলটি লাচুং এবং গুরুদংমার লেকের জন্যও বিখ্যাত। সিকিমের এই অঞ্চলের লেপচা সম্প্রদায়ের নিয়ম কানুনগুলো এখানে দিজুমসা নামে পরিচিত। ফেব্রুয়ারি মাসটি লাচেন ভ্রমণের জন্য আদর্শ। এই সময় এখানকার তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি থেকে -১০ ডিগ্রি পর্যন্ত থাকে ।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
লাচেন থেকে আপনি লাচুং মনেস্ট্রি দর্শন করে আসতে পারেন, লেপচা সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রাকে উপভোগ করতে পারেন, গুরুদোয়ারা নানক লামা দর্শন করে আসতে পারেন অথবা ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন ইউম সামডং।
কীভাবে যাবেন
লাচেন এর নিকটতম বিমানবন্দর হল বাগডোগরা। বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি বা বাস ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন গন্তব্যে। নিকটতম রেল স্টেশন হলো দার্জিলিং রেল স্টেশন, যা সিকিম থেকে ১৭১কিমি দূরে অবস্থিত।
কোথায় থাকবেন
বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাস করার জন্য আপেল ভ্যালি ইন-কে বেছে নিতে পারেন, আবার অল্প খরচে অলিম্পস ইন হোটেলেও রাত্রিবাস করতে পারেন।
ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ভ্রমণের জন্য ওডিশাকে বেছে নিতে পারেন। বিশেষত সূর্য মন্দিরের আধ্যাত্মিক রহস্য উন্মোচনের এবং সর্বোপরি মন্দিরের সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্য ওডিশা শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিত। রথের আকারে নির্মিত এই মন্দিরটি অসাধারণ স্থাপত্যর বিরল নিদর্শন। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির ১৯ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত এখানে কোনার্ক ডান্স ফেস্টিভ্যাল আয়োজিত হয়। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে মন্দিরের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য আপনিও জেনে নিতে পারেন। ফেব্রুয়ারী মাসে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা থাকে ২৫ ডিগ্রি থেকে ৩১.৪ ডিগ্রি।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
কোনার্কের সূর্য মন্দির পরিদর্শন করতে পারেন, কোনার্ক ডান্স ফেস্টিভ্যাল এর অংশগ্রহণ করতে পারেন, বালুকখণ্ড কোনার্ক ওয়াইল্ড লাইফ স্যানচ্যুয়ারি ভ্রমণ করতে পারেন কিংবা সমুদ্রের উন্মাদনাকে উপভোগ করতে রমাচান্দি সৈকত ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
নিকটতম বিমানবন্দর হল ভুবনেশ্বর, যা এই স্থান থেকে ৬৪ কিমি দূরে অবস্থিত। অন্যদিকে নিকটতম রেলস্টেশনটি ৩১কিমি অদূরে পুরীতে অবস্থিত। এছাড়াও ভারতের যে কোনও স্থান থেকে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন গন্তব্যে।
কোথায় থাকবেন
প্রকৃতিকে উপভোগ করার জন্য লোটাস রিসোর্টকে বেছে নিতে পারেন, এছাড়াও কম খরচে লাবণ্য লজে রাত্রিবাস করতে পারেন ।
ঐতিহ্যবাহী রণ উৎসবের সাক্ষী থাকতে পৌঁছে যেতে পারেন কচ্ছের রণ-এ। শিল্পকলা, সঙ্গীত, নৃত্য ইত্যাদি প্রদর্শনীর অংশীদার হতে চাইলে আপনাকে এখানে আসতেই হবে। প্রায় দুই মাস ব্যাপী এই উৎসব শেষ হয় ফেব্রুয়ারির ২০তারিখে। স্থানীয় মানুষের কারুকার্য্য ছাড়াও পূর্ণিমার রাতে সাদা মরুভূমির বর্ণময় শোভার প্রত্যক্ষদর্শী থাকতে পারেন। আবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ওয়াইল্ড অ্যাস স্যানচ্যুয়ারি। এই সময় কচ্ছ অঞ্চল ঠান্ডা আবহাওয়া দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। ফেব্রুয়ারীতে কচ্ছ এর তাপমাত্রা থাকে ১২ ডিগ্রি থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
রণ উৎসব দেখা এবং ওয়াইল্ড অ্যাস স্যানচ্যুয়ারি ভ্রমণ ছাড়াও মণ্ডবি সৈকত ঘুরে আসতে পারেন এবং প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে ধোলাভিরা পরিদর্শন করে আসতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন
কচ্ছ পৌঁছনোর জন্য নিকটতম রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দরটি ভুজ (৭৬ কিমি)-এ অবস্থিত। মুম্বাই, আমেদাবাদ, চেন্নাই এবং রায়পুর থেকে প্রতিদিন সরাসরি বিমান উপলব্ধ আছে। যে কোনও ছোট - বড় রেল স্টেশন থেকেও আপনি ভুজ পৌঁছতে পারেন। গুজরাটের যে কোনও স্থান থেকেও আপনি বাস সহযোগে সড়কপথে কচ্ছ পৌঁছতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
কম খরচে ভুজে ক্লিক হোটেলে রাত্রিবাস করতে পারেন, এছাড়াও ধোর্দ-তে কুটির ক্র্যাফট ভিলেজ রিসোর্টটিকে রাত্রিবাসের জন্য বেছে নিতে পারেন ।
জনবহুল শহর মুম্বইও ফেব্রুয়ারি মাসের কালা ঘোড়া উৎসবের জন্য বিখ্যাত। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে আপনিও নিজের সৃজনশীলতাকে প্রস্ফুটিত করে তুলতে পারেন। কালা ঘোড়া প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় মুম্বইয়ের আবহাওয়াও খুব মনোরম থাকে। ফেব্রুয়ারি মাসে মুম্বইয়ের তাপমাত্রা থাকে ২০.৫ ডিগ্রি থেকে ৩২ডিগ্রি পর্যন্ত।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
মুম্বই-এর বিখ্যাত গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া এবং এলিফ্যান্টা কেভ ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ ভ্রমণ করে আসতে পারেন, পৃথ্বী থিয়েটারে নাটক দেখে আসতে পারেন, চোর-বাজার থেকে সস্তায় জিনিস পত্র কিনে নিয়ে যেতে পারেন, ডক-ইয়ার্ড ভ্রমণ করে আসতে পারেন, সঞ্জয় গান্ধী ন্যাশনাল পার্ক পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
ভারতের যে কোনও শহর থেকে পৌঁছে যেতে পারেন মুম্বাই বিমান বন্দর। কিংবা ট্রেনে গেলে নেমে পড়ুন ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস-এ। এছাড়াও সড়কপথেও মুম্বাই পৌঁছে যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
মুম্বই শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকতে চাইলে ট্রাইডেন্ট নরিম্যান পয়েন্ট-এ রাত্রিবাস করতে পারেন, এছাড়াও সুবা প্যালেসকেও ভ্রমণ কালীন বাসস্থান হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
কংক্রিটের জঙ্গল থেকে মুক্ত হতে পৌঁছে যেতে পারেন মধ্যপ্রদেশের ওরচ্ছা এবং পান্না-তে। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে ওরচ্ছা বেশ আকর্ষণীয়। তাছাড়াও ওরচ্ছা এবং পান্না অঞ্চলে রয়েছে অনেকগুলো ভ্রমণ স্থান। ফেব্রুয়ারি মাসে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা থাকে ৬ডিগ্রি থেকে ২৫ডিগ্রি পর্যন্ত।
কী কী করবেন এবং দেখবেন
এখান থেকে পান্না টাইগার রিসার্ভ ভ্রমণ করে আসতে পারেন, একদিনের ট্রিপে প্রন্নাথ জি মিউজিয়াম দেখে আসতে পারেন, ওরচ্ছা মন্দিরগুলো পরিদর্শন করে আসতে পারেন, ওরচ্ছা ফোর্ট-এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে পারেন, অথবা বেটোয়া নদীতে রাফটিং করতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন
ওরচ্ছা পৌঁছনোর জন্য নিকটতম রেল স্টেশন হল ঝাঁসি, যা ১৬ কিমি দূরে অবস্থিত। নিকটতম বিমানবন্দরটি ১২৫ কিমি দূরে গোয়ালিওর-এ অবস্থিত ।