সাত সকালে আদিত্যর ফোন... আর তার সঙ্গে জোর হুকুম। 'সোহিনী তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে থাক, তোকে নিয়ে আজ বেড়াতে যাব...' গোটা সপ্তাহ জুড়ে একটামাত্র ছুটির দিন, তাতেও এখনও সকালের আলসেমি, মোটা দাগে ল্যাদটুকু ঠিক মতো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সোহিনী, তার উপরে আদিত্যর এমন জরুরি তলব। আচ্ছা মুশকিল। তিরিশের কোটায় পৌঁছে এখন আর ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে উপরি আদিখ্যেতা পোষায় না। তাও আদিত্য যখন বলেছে না করতে পারল না সোহিনী... হয়তো সারপ্রাইজ কোনও গিফ্ট দেবে কিংবা রোমান্টিক লাঞ্চ বা ডিনার। এ তো চেনা ছক। চা খেতে খেতে খবরের কাগজের পাতা উলটাতে উলটাতেই আদির ফোন, সঙ্গে আবারও হুকুমের গলা, 'তোর, বাড়ির কাছেই দাঁড়িয়ে আছি , চলে আয়'। ভালবাসার দিন বলে কথা, কাজেই বেশ মানানসই সাজেই নিজেকে সাজিয়েছে সোহিনী।
বাড়ির মেন গেট খুলে রাস্তার বেরিয়েই সোহিনী যা দেখল, এমন সারপ্রাইজ সে যে পাবে কখনও আশাই করেনি... রাত্রে ক্লান্ত পায়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে নিজের মনেই সোহিনী বলল; 'ভাগ্যিস্ ! আজকে আদি এত সুন্দর প্ল্যানটা করেছিল'...
লেখাটা পড়তে পড়তে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে প্রেমিকাকে কীভাবে চমক দিল আদিত্য? সেই বিষয়গুলো একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে, প্ল্যান তৈরি করে নিতে পারবেন আপনিও।
পথে এবার নামো সাথী
এই ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে আপনার গাড়ি বা বাইকটিকে বাড়ির গ্যারেজেই রেস্ট দিন, আর ফিরে যান কলেজ লাইফের দিনগুলোতে, যখন 'পকেট ভর্তি ক্যাবলামি' আর খুচরো পয়সার শব্দের মধ্যে ছিল একটা নিখাদ ভালবাসা। গাড়িতে নয়, অটো, ট্রামের পথেই হয়ে যাক, রোমান্টিক ডেটিং... আর সব থেকে ভাল হয় যদি সার্দান অ্যাভেনিউ-এর রাস্তা ধরে এলোমেলো পথে হেঁটে চলা, বিকেলের পড়ন্ত রোদ গায়ে মেখে।
এক কাপ চা-এ আমি তোমাকে চাই
ক্লান্তি ভুলতে গলির মোড়ে চা-এর দোকানে দাঁড়িয়ে, মাটির ভাঁড়ে গরম গরম চা-এর কাপে চুমুক দিতে পারেন। নস্টাজিয়ার রোদ গায়ে মেখে ফিরে যেতে পারেন ফেলে আসা দিনগুলোতে। যখন নোটস, ক্লাস, আর সেমেস্টারের মাঝেও ছিল একচিলতে মুক্তির স্বাদ, ছিল ভালবাসার মানুষটার সঙ্গে সময় কাটানোর একধরনের আনন্দ। চা-এর সঙ্গে সঙ্গী হোক প্রজাপতি বিস্কুট।
তুই ফেলে এসেছিস কারে... ও মন, মন রে আমার
কর্পোরেট লাইফের দশটা-সাতটার নিয়মমাফিক রুটিনে, সম্পর্ক বা রিলেশন মেনটেন করার ক্ষেত্রেও চলে আসে একধরনের গতানুগতিক অভ্যাস। কাজেই সেই রুটিনে একধরনের ব্যতিক্রম আনতে চলে যেতে পারেন কলেজের ক্যাম্পাসে, কিংবা কলেজ লাইফে ক্লাস কেটে যেসব জায়গায় ঘুরতে যেতেন সেখানেই একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। আর পাল্লা দিয়ে চলতে পারে আড্ডা আর পুরনো দিনের কথোপকথন।
রাস্তার কোনও সস্তাহোটেলে, বদ্ধ কেবিনে বন্দি দুইজনে
হতেই পারে আপনি এবং আপনার ভালবাসার মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেশ ভালই টাকা রয়েছে। কিন্তু সবসময় অতিরিক্ত বিলাসিতায় কিন্তু রোমান্টিকতা হারিয়ে যায়। কাজেই বেছে নিতে পারেন, সাধারণ, ছিম-ছাম কোনও রেস্তোরাঁকে। যেখানে চারপাশের লাউড মিউজিক এবং দেখনদারিতে হারিয়ে যাবে না আপনার সম্পর্কের রসায়ন। গল্পের মাঝে মাঝে কামড় বসান জিভে জল আনা কাটলেট, ফিস-ফ্রাইতে...
ছিমছাম কোনও উপহার
আপনার প্রেমিক/প্রেমিকা হয়তো বই পড়তে ভালবাসেন, কাজেই তাঁকে আজ বই গিফট করতে পারেন, সেই যেমন আগে উপহার দিতেন। আজকের পুরো দিনটাই কাটান সাধারণ, ছিমছাম পরিবেশে দেখবেন ভালবাসাটাকে নতুন করে উপভোগ করতে পারছেন।
আদিত্য আর সোহিনীর সিক্রেট তো আপনাদেরকে বলেই দিলাম, হাতে এখনও কিছু সময় আছে... প্ল্যানে কোনও চেঞ্জ হবে না কি ?