পথ চলাতে শুধু আনন্দ নয়, থাক জীবনের মানে খুঁজে নেওয়াও! রইল সেইরকমের কয়েকটি জায়গার সন্ধান

Tripoto

বেড়ানো মানে হচ্ছে সেই সব জায়গায় যাওয়া বা বাস্তবের সেই কঠিন দরজা খুলে দেওয়া যার সামনে আপনি কখনও আসেননি। কখনও ভেবেই দেখেননি যে এমন জায়গাও পৃথিবীতে আছে!

১১০০০ ফুট উচ্চতায় থিক্সে গ্রামে নানদের যে থাকার জায়গা আছে সেটা স্বয়ং নির্ভর। প্রতি বছর স্বেচ্ছা সেবকরা সেখানে যান এবং সেখানে সন্ন্যাসীদের তাঁদের হোমস্টে চালাতে সাহায্য করেন। আজ থেকে এক বছর আগে একটি ডাচ সংস্থার সহায়তায় এই হোমস্টে গড়ে ওঠে। লাদাখের এই নানরা চেষ্টা করছেন নিজেরাই কিছু রোজগার করার। ভুলে যাওয়া, অনাদরে অবহেলায় পড়ে থাকা এই অঞ্চলে আশার আলো দেখায় তারস হোমস্টে।

Photo of পথ চলাতে শুধু আনন্দ নয়, থাক জীবনের মানে খুঁজে নেওয়াও! রইল সেইরকমের কয়েকটি জায়গার সন্ধান 1/6 by Doyel Banerjee
এক বছর আগে তোলা একটি ছবি যখন সন্ন্যাসীরা প্রথম এই অঞ্চলে আসেন

আমি এই বছরেই তারস হোমস্টে থেকে ঘুরে এসেছি। আর এখানকার অভিজ্ঞতা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে ভারতের এরকম অন্যান্য জায়গার সন্ধান করতে।

তারস হোমস্টে ছাড়াও সন্ধান রইল এরকম আরও ছয়টি জায়গার যেগুলো আপনাকে সাহায্য করবে আপনার আগামী বেড়ানোর ট্রিপ প্ল্যান করতে এবং জীবনের অন্য মানে খুঁজে নিতে।

১) তারস হোমস্টে

থিক্সে গুম্ফা থেকে অল্প দূরত্বে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাওয়া যায় থিক্সে সন্ন্যাসীদের আস্তানায়। এখানে মূলত ডাচ স্বেচ্ছাসেবকরা আসেন। তবে যে কোনও দেশের মানুষ এখানে আসতে পারেন।

কীভাবে সাহায্য করবেন: আপনি এখানে দীর্ঘদিন থাকতে পারেন। সন্ন্যাসীদের তাঁদের প্রতিদিনের কাজে সাহায্য করতে পারেন এবং বাচ্চাদের পড়াতে পারেন। আপনি যদি হোমস্টেতে অতিথি রূপে থাকেন তাহলে আপনি যেটুকু অর্থ সাহায্য করবেন তার সবটাই সন্ন্যাসীদের কাজে লাগবে।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

Photo of পথ চলাতে শুধু আনন্দ নয়, থাক জীবনের মানে খুঁজে নেওয়াও! রইল সেইরকমের কয়েকটি জায়গার সন্ধান 2/6 by Doyel Banerjee

২) হাজি পাবলিক স্কুল

জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা অঞ্চলের ব্রেসওয়ানাতে অবস্থিত এই হাজি স্কুল। ২০০৯ সালে স্থানীয় হাজি পরিবার এই স্কুল শুরু করেন। এখন এখানে ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রী আছে। ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক যারা এখানে এসে বাচ্চাদের পড়াতে চান তাঁরা এখানে আসতে পারেন। এখানে যাওয়ার পাকা সড়ক এখনও হয়নি। কিন্তু অনেক বাধা থাকার পরেও এখানে বাচ্চাদের উচ্চমানের শিক্ষা দেওয়া হয়।

কীভাবে সাহায্য করবেন: একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আপনাকে এখানে নিয়মিত ক্লাস নিতে হবে স্কুলের সিলেবাস ও শেডিউল মেনে। ক্লাসের মান যাতে আরও উন্নত করা যায় তার জন্য নিয়মিত স্কুল কর্তৃপক্ষকে আপনাকে রিপোর্টও জমা দিতে হবে।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

৩) লাদাখের ফার্মস্টে

বিখ্যাত লাদাখি কঞ্জারভেশনিস্ট সোনম ওয়াংচুক একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি দেখেছিলেন যে তরুণ সম্প্রদায় লাদাখের গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এইসব তরুণদের বাবা মা যারা একা থাকেন এবং অতি কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁদের জন্য ওয়াংচুক দারুণ একটা ব্যবস্থা করেন। তিনি ফায়াং গ্রামে হোমস্টের ব্যবস্থা করে দেন। এখানে বর্তমানে ১২ জন হোস্ট আছেন যারা লাদাখের সাসটেনেবল পর্যটনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

কীভাবে সাহায্য করবেন: স্বেচ্ছাসেবকরা এখানে স্থানীয়দের বাড়িতে থাকতে পারেন এবং তাঁরা যা জানেন অন্যদের শেখাতে পারেন। তার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও শিখতে পারেন যে এই শীতল মরুতে কীভাবে একাকী মায়েরা বেঁচে থাকেন।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

৪) সেবা কাফে

আহমেদাবাদের গান্ধী আশ্রমে সেবা কাফে শুরু হয়েছিল পরীক্ষামূলক ভাবে। দেখা হয়েছিল যে মানুষের সহমর্মিতা নিয়ে কতদূর কাজ করা সম্ভব। এটা শুরু হয়েছিল একটা চক্রের আকারে। একজন স্বেচ্ছাসেবক যদি তাঁর পাশের মানুষটিকে সাহায্য করেন তাহলে সেই মানুষটিকে তাঁর পাশের যে মানুষ কাফেতে খেতে এসেছেন তাঁকে সাহায্য করতে হবে।

কীভাবে সাহায্য করবেন: ছাত্রছাত্রী, যে কোনও পেশার মানুষ বা একজন গৃহবধূও এখানে এসে সাহায্য করতে পারেন। রান্না করা, কাফে পরিষ্কার করা থেকে যে কোনও কাজে সাহায্য করা যায়। যদি আপনি স্বেচ্ছাসেবক না হয়ে শুধুই একজন অতিথি হন তাহলেও অন্য কাউকে সাহায্য করতে পারবেন।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

৫) সিকিম হিমালয়ান অ্যাকাডেমি

এই রেসিডেনশিয়াল স্কুলটি ২০০৩ সালে শুরু হয় কয়েকজন সিকিমিজ শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে। একসময় এই স্কুলে মাত্র ২০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। এখন এই স্কুল ১০০ র ও বেশি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা শেখায়। এইসব ছাত্রছাত্রী আশেপাশের গ্রামের দুঃস্থ পরিবার থেকে আসে।

কীভাবে সাহায্য করবেন: বাচ্চাদের পড়ান, নিজে শিখুন, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন। শুধু যে পড়াতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। আপনি নাচ, গান, আঁকা, হাতের কাজবা যে কোনও প্রকার খেলাধুলোও শেখাতে পারেন।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

৬) রোগপা বেবি কেয়ার সেন্টার

ম্যাকলয়েডগঞ্জের কয়েকটি তিব্বতি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ২০০৫ সালে এই সেন্টার তৈরি হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের রেখে যে সব তিব্বতি বাবা মায়েরা কাজে জান,সেইসব ছেলে মেয়েদের দেখা শোনা করে এই সেন্টার। ৩ বছর পর্যন্ত বয়সী বাচ্চা ও তার কম বয়সী বাচ্চাদের এখানে দেখা শোনা করা হয়।

কীভাবে সাহায্য করবেন: স্বেচ্ছাসেবকরা এখানে এসে বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন নানা ভাবে। বাচ্চাদের খাওয়ানো, গল্প শোনানো থেকে শুরু করে ঘুম পাড়ানো, চান করানো এবং ন্যাপি পাল্টে দেওয়া সব কিছু করা যায়।

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

Photo of পথ চলাতে শুধু আনন্দ নয়, থাক জীবনের মানে খুঁজে নেওয়াও! রইল সেইরকমের কয়েকটি জায়গার সন্ধান 5/6 by Doyel Banerjee
ছবি সৌজন্য রোগপা

৭) দ্য চেন্নাই ট্রেকিং ক্লাব

২০০৮ সালে স্থাপিত চেন্নাই ট্রেকিং ক্লাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা হল ২৭ হাজার! কিন্তু এটা শুধুই একটি এক্সপিডিশন সংস্থা নয়। অন্যান্যদের চেয়ে এই সংস্থা আলাদা কারণ এটি সারা বছর নানা রকম সামাজিক জনকল্যাণমূলক এবং পরিবেশ সংক্রান্ত ভাল কাজ করে থাকে।

কীভাবে সাহায্য করবেন: এই ক্লাবের একজন সদস্য হিসেবে আপনি সংরক্ষণ নিয়ে নানা কাজে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। গাছ লাগানো, জৈব কৃষি, সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার করা, নদী ও হ্রদ পরিষ্কার করা এগুলো করা যায়। তাছাড়া প্রতি বছর এই ক্লাব চেন্নাইয়ের সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার করে এবং গ্রিন ডে পালন করে। আপনি নিজের নাম নথিভুক্ত করে এই কাজে যোগদান করতে পারেন।

Photo of পথ চলাতে শুধু আনন্দ নয়, থাক জীবনের মানে খুঁজে নেওয়াও! রইল সেইরকমের কয়েকটি জায়গার সন্ধান 6/6 by Doyel Banerjee

বিশদ জানতে এখানে ক্লিক করুন

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত/অনুলিখিত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)