ট্রেন সফরে বিদেশ যাত্রা করতে চান? তাহলে ভারতীয় রেলের এই চারটি স্পেশাল ট্রেন সম্পর্কে জেনে নিন

Tripoto

যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং আনন্দদায়ক যাত্রা একমাত্র ট্রেন যাত্রার মধ্যেই রয়েছে । তাছাড়াও, কোনও দেশকে নিবিড়ভাবে পরিচয় করার জন্য কিন্তু ট্রেনই একমাত্র ভরসা । ভারতের মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন হোক কিংবা সিমলার ট্রয় ট্রেন, এই সমস্ত যাত্রার মধ্যে আমরা সকলেই বিভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। কিন্তু আন্তর্জাতিক ট্রেন যাত্রার কথা ভাবলে প্রথমেই আমরা কল্পনা করে ফেলি ইউরোপের দেশগুলোর ট্রেন যাত্রার কথা। ইউরোপকে গভীরভাবে চেনা এবং ইউরোপ ভ্রমণের জন্য ইউরেল যে এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এখন কিন্তু আন্তর্জাতিক ট্রেন যাত্রাকে উপভোগ করার জন্য আপনার ইউরোপ যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। ভারতীয় রেলের হাত ধরে ভারতের সৌন্দর্যকে প্রগাঢ়তার সঙ্গে উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যেতে পারেন নতুন দেশে। কি সন্দেহ হচ্ছে? আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন এটা এক্কেবারেই অবিশ্বাস্য, তাই তো? তাহলে আপনার ভাবনাটা সম্পূর্ণ ভুল, সত্যি সত্যিই ভারতীয় রেলের সহায়তায় আপনি অনায়াসেই একটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রিপে ঘুরে আসতে পারেন। এই প্রসঙ্গে বিশদে জানতে সম্পূর্ণ ব্লগটা চট করে পড়ে নিন ।

ভারত থেকে পাকিস্তান ভ্রমণ

ভারত থেকে পাকিস্তান যাওয়ার জন্য বর্তমানে দুটি ট্রেন উপলব্ধ রয়েছে, আর সেই ট্রেনগুলো হল সমঝোতা এক্সপ্রেস এবং থর লিংক এক্সপ্রেস । তবে ভারত পাকিস্তান রুটের এই দুটি ট্রেনের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতনামা ট্রেনটি হল সমঝোতা এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি অমৃতসরের আটারি জংশন থেকে যাত্রা শুরু করে এবং পাকিস্তানের লাহোর স্টেশনে এই ট্রেনের শেষ গন্তব্য। অন্যদিকে থর লিংক এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয় ভারতের যোধপুরে অবস্থিত স্টেশন ভগৎ-কি-কোঠি থেকে এবং শেষ হয় পাকিস্তানের করাচি ক্যানরোনমেন্ট - এ।

সমঝোতা এক্সপ্রেস

সমঝোতা এক্সপ্রেস ট্রেনের নম্বরটি হল - ১৪৬০৭। এই ট্রেনে যাত্রা করতে চাইলে আপনাকে অফলাইনে অমৃতসরের আটারি জংশনের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হবে। টিকিট কাটার আগে আপনাকে পাকিস্তানের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এই ভিসার অনুমতি পাওয়ার পরেই আপনি এই ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। ট্রেনটি ভারত থেকে ছাড়ে সকাল ১১.৩০ মিনিটে প্রায় ২৭ কিমি দূরত্ব (সময় লাগে ৪ ঘণ্টা ১০মিনিট ) অতিক্রম করে লাহোরে পৌঁছায় বিকাল ৩.৪০মিনিটে। যাত্রাপথে কেবলমাত্র পঞ্জাবের ওয়াগা স্টেশনেই এই ট্রেনটি নির্দিষ্টসময়ের জন্য থামে। এই ট্রেনটি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং বৃহস্পতিবার উপলব্ধ রয়েছে।

থর লিংক এক্সপ্রেস

থর লিংক এক্সপ্রেস ট্রেনের নম্বরটি হল - ১৪৮৯০। এই ট্রেনে টিকিট বুকিং -এর ক্ষেত্রেও বৈধ পাকিস্তান ভিসার বিনিময়ে আপনার পাকিস্তান যাত্রার জন্য টিকিট মিলবে। ট্রেনটির যাত্রা ভারতের ভগৎ-কি কোঠি থেকে শুরু করে বালত্রা-বার্মের, মানবাও ইত্যাদি বর্ডার সংলগ্ন স্টেশন অতিক্রম করে হায়দ্রাবাদ -খাখরাপুর ব্রাঞ্চ লাইন এবং করাচি- পেশোয়ার রেল লাইন ধরে পাকিস্তান পৌছয়। এই ট্রেনটি প্রতি শনিবার রাত ১টায় ভারত থেকে ছাড়ে প্রায় ৩৮১ কিমি ( সময় লাগে ১২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ) পথ অতিক্রম করে পাকিস্তানের করাচি ক্যান্টনমেন্ট - এ পৌছায় দুপুর ২.১৫ তে এবং জিরো পয়েন্টে পৌঁছয় পরদিন দুপুর ২.৩০ মিনিটে।

ভারত থেকে বাংলাদেশ ভ্রমণ

ভারত বাংলাদেশ যাওয়ার জন্যও ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে দুটি ট্রেন উপলব্ধ আছে - মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস । মৈত্রী এক্সপ্রেসের সূচনা হয় ২০০৮ সালে। শতাব্দী প্রাচীন এই ট্রেনটি এখনও পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য প্রধান ট্রেন হিসেবে পরিচিত। এই ট্রেনটির যাত্রাপথটি হল কলকাতা থেকে ঢাকা। বন্ধন এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটির শুভ উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এবং ট্রেনটি যাত্রাপথ হলো কলকাতা থেকে খুলনা।

মৈত্রী এক্সপ্রেস

বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার সঙ্গে পরিচয় করতে চাইলে এই ট্রেন চেপে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন বাংলাদেশ। ট্রেনটি সপ্তাহের ৬দিন উপলব্ধ আছে। এই যাত্রাপথে দুটি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট রয়েছে- একটি গেদে (ভারতে) এবং অন্যটি দর্শনাতে (বাংলাদেশে ) অবস্থিত। ট্রেনটি সকাল ৭.১০মিনিটে কলকাতা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় ৩৭৫ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে ঢাকা পৌঁছায় বিকাল ৪.০৫ মিনিটে। এই ট্রেনে ভ্রমণ করার আগে আপনার বৈধ বাংলাদেশ ভিসার প্রয়োজন। আর ভিসার সঠিক পত্রটি থাকলেই আপনি এই ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। এই টিকিটও আপনাকে অফলাইনেই কাটতে হবে । প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই ট্রেনটি অনেক মানুষের কাছে অজানা, ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আহরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশর সৌন্দর্য নিবিড় ভাবে পরিদর্শন করার জন্য এই ট্রেনটি আদৰ্শ ।

বন্ধন এক্সপ্রেস

প্রাথমিকভাবে, এই ট্রেনটি দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস হিসেবে পরিচিত ছিল ।২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বন্ধন এক্সপ্রেসের শুভ সূচনা করেন। ট্রেনটি কলকাতা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে দমদম, বনগাঁ স্টেশন অতিক্রম করে প্রথমেই ভারত বাংলাদেশ বর্ডার পেট্রাপোলে পৌঁছয়। এখানে চেকপোস্ট থেকে সমস্ত নথি চেক করার পর ট্রেনটি ঝিকারগাচ্ছা এবং যাশোর অতিক্রম করে খুলনায় পৌঁছয় । এই ট্রেনে টিকিট কাটার আগে সঠিক ভিসা এবং পাসপোর্ট-এর প্রমাণপত্রের প্রয়োজন ।

ট্রেন সফর করে প্রথম আন্তর্জাতিক ভ্রমণ হিসেবে কোন দেশটিকে বেছে নিলেন, নিচে কমেন্ট বাক্সে আমাদের লিখে জানাতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads