আপনি কি দেশের বাইরে কোনও ঘুরতে যাওয়ার জায়গা খুঁজছেন? কিন্তু ভিসা বা অন্য কোনও সমস্যা আপনার বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছায় একমাত্র বাধা হয়ে উঠছে। তাই তো? এই ব্লগে আপনার জন্য রয়েছে বিদেশ ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ। আর এই ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকদের ভ্রমণের প্ররাম্ভে ভিসারও প্রয়োজন নেই। তাই এই ব্লগটি পড়তে পড়তে পরিকল্পনা করেই ফেলুন আর বেড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতিটা আজই নিয়ে নিন।
১. সেচেলস্:
সমুদ্র তীরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জটি থেকে সমুদ্রের উন্মাদনা, সমুদ্রকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের অবস্থান, চিত্রসদৃশ প্রাকৃতিক দৃশ্য, বড় বড় প্রবালের স্তম্ভ, সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে খেজুর গাছের সারি, সব মিলিয়ে সেচেলস্ ভ্রমণ আপনার কাছে বেশ রমনীয় হয়ে উঠবে।
সেচেলস্ সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য
সেচেলস্ প্রধানত পূর্ব আফ্রিকার একটি সামুদ্রিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত । সেচেলসে্র প্রধান দ্বীপপুঞ্জগুলো হল মাহে, প্রাসলিন এবং লা দিগ। তবে সেচেলস্ বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জটি অবশ্যই মাহে। আর সমস্ত পর্যটকদের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এবং এই অঞ্চলের জনজাতির সিংহভাগ মানুষের বাসস্থান হল মাহে । এখানে ফেরি সার্ভিসের সাহায্যে আপনি কাছকাছি দ্বীপপুঞ্জগুলো থেকে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন । ফেরি সহযোগে মাহে থেকে প্রাসলিন যেতে সময় লাগে প্রায় ৫০ মিনিট মতো এবং প্রাসলিন থেকে লা দিগ পৌঁছতে সময় লাগে ১৫ মিনিট মতো ।
ভিসা
সেচেলস্ প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন। আর এই ভিসার সাহায্যে ৩০ দিন পর্যন্ত এই দ্বীপপুঞ্জে আপনি ভ্রমণ করতে পারেন ।
কী কী করবেন?
১. সাইকেল ভাড়া করে লা দিগ দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন ।
২. লা দিগ - এর অচেনা সমুদ্রসৈকত আনসে সোর্স দার্জেন্ট অথবা আনসে কোকো পরিদর্শন করে আসতে পারেন ।
৩. প্রাসলিন দ্বীপে অবস্থিত আনসে পসেশন এবং কুরিয়াস দ্বীপের পাহাড়গুলোর উচ্চতম শৃঙ্গ থেকে সমগ্র দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রকৃতির রূপে মোহিত হতে পারেন।
৪. উনেস্কোর হেরিটেজ সাইট ভ্যালি দে মাই পৌঁছে প্রসিদ্ধ কোকো দে মের প্লাম বা বিশ্বের সবচেয়ে ভারি বীজের সঙ্গে পরিচয় করে আসতে পারেন ।
৫. সমুদ্রের উন্মাদনা এবং অচেনা সামুদ্রিক জীবের সঙ্গে আলাপ করতে চাইলে আনসে লাজিও, আনসে জর্জেট এবং বিউ ভালন বিচ পরিদর্শন করে আসতে পারেন ।
৬. সামদ্রিক কচ্ছপ পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে নৌকো বিহার করে পৌঁছে যেতে পারেন কুরিয়াস দ্বীপ।
৭. সমুদ্র তরবর্তী কোনও রিসোর্টে থেকেও সামুদ্রিক অঞ্চলের পরিবেশ এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা উপভোগ করতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন?
ভিক্টোরিয়াতে ইছেল্লেস ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর এবং প্রাসলিন আইল্যান্ড বিমানবন্দর নামক দুইটি প্রধান বিমানবন্দর ইছেল্লেসে অবস্থিত। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে আপনি খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন সেচেলেস্। এছাড়াও দিল্লি বিমানবন্দর থেকেও কানেকটিং বিমান সহযোগে আপনি এখানে পৌঁছে যেতে পারেন।
ভ্রমণের শ্রেষ্ট সময়
ইছেল্লেস ভ্রমণের শ্রেষ্ট সময় হিসেবে এপ্রিল থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসটিকে বেছে নিতে পারেন ।
ফিজি
আপনি বিলাস বহুল হোটেলের সঙ্গে নিজস্ব সমুদ্রসৈকতে প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে চান?তাহলে আপনার রোম্যান্টিক জায়গার একমাত্র ডেস্টিনেশন হতে পারে ফিজি। দ্বীপের সৌন্দর্য মুগ্ধ হওয়ার সঙ্গে এখানে আপনি সামুদ্রিক অ্যাডভেঞ্চারগুলোর রোমহর্ষক স্বাদ পেতে পারেন।
ফিজি সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য
অর্চিপেলাগোর ৩৩৩ টি দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে প্রধান দুইটি দ্বীপপুঞ্জ ভিটি লেভু এবং ভানুয়া লেভুকে কেন্দ্র করে ফিজি গঠিত হয়েছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, প্রধানত এই দুইটি দ্বীপপুঞ্জ সমগ্র দেশের ৮০শতাংশ মানুষের বাসস্থান এবং এই দেশের রাজধানী সুভাও, ভিটি লেভু দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত।
ভিসা
এই দেশটি ভারতীয় নাগরিকদের জন্য বিনা ভিসায় ১২০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি দেয়। তবে এই দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্টটির অন্তত ৬ মাসের জন্য বৈধতার প্রয়োজন।
কী কী করবেন?
১. জলজ জীবন যাত্রার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য স্কুবা ড্রাইভিং করতে পারেন ।
২. ভ্রমণের নতুন মাত্রা খুঁজে পেতে সমুদ্রের বুকে ভাসমান বিলাসি বাংলোতে রাত্রিবাস করতে পারেন ।
৩. বিচকম্বার দ্বীপপুঞ্জে সমুদ্রসৈকতের নাইট পার্টিগুলো উপভোগ করতে পারেন ।
৪. স্কাই ড্রাইভিং করে বিখ্যাত প্রবাল প্রাচীর এবং দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রের বহমানতাকে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন ।
৫. ইচ্ছা করলে সমুদ্র তরবর্তী অঞ্চলের জঙ্গলগুলো পরিদর্শন করার প্ল্যানটা ও বেশ থ্রিলিং হবে ।
৬. স্থানীয় উষ্ণ প্রস্রবণ সাবেতোর গরম জলের জলাশয়ে ডুব দিয়ে ক্লান্তি মুক্ত হতে পারেন।
কীভাবে যাবেন ?
কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি যে কোনও বিমানবন্দর থেকে কানেকটিং বিমান সহযোগে ভিটি লেভু দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত নাদি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছে যেতে পারেন । তাছাড়াও, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, টোকিও, হনূলুলু লস আঞ্জেল, সান ফ্রান্সসিস্কো থেকে ফিজি পৌঁছনোর জন্য সরাসরি বিমান পেয়ে যাবেন ।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
এই অঞ্চলের শীতকালীন সময় অর্থাৎ মে থেকে অক্টোবর মাসটি ফিজি ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় । তবে কম খরচে ফিজি ভ্রমণ করতে চাইলে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস সময়ে আসতে পারেন। এই সময়ে তীব্র গরম থাকলেও প্রত্যেকদিন হালকা বৃষ্টি হয়।
৩. সাময়া
আগ্নেয়গিরি, ঘন রেইনফরেস্ট এবং নীলজলরাশির বুকে ভেসে যেতে চাইলে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত সাময়া দ্বীপপুঞ্জে আপনাকে স্বাগত।
সাময়া সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য
এই স্বতন্ত্র দেশটি মূলত দুইটি প্রধান দ্বীপ সাভাই, উপলু এবং চারটি ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জের সমাহারে গঠিত । এই দেশের প্রধান রাজধানী শহরটি হল আপিয়া । এই দেশ সম্পর্কিত সমস্ত রকম তথ্য জানতে হলে সাময়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটিতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন ।
ভিসা
এখানে আপনি বিনা ভিসায় প্রায় ৬০দিন পর্যন্ত সময় ভ্রমণ করতে পারেন। তবে এই দেশ ভ্রমণের আগে যাওয়া এবং ফেরার টিকিটি কনফার্ম থাকতে হবে এবং আপনার পাসপোর্টটি ৬ মাসের জন্য বৈধ থাকতে হবে।
কী কী করবেন?
১. মাউন্ট মাতাভানু আগ্নেয়গিরি পরিদর্শন করতে পারেন। বেশ কিছু বছর আগে আগ্নেয়গিরিটি পুনঃজীবিত হয়ে ধ্বংস করে দেয় প্রায় পাঁচটি গ্রাম। শোনা যায় এই অগ্ন্যুৎপাত চলে প্রায় ৩বছর । অগ্ন্যুৎপাতের আর আগ্নেয়গিরির লাভা পরিবেষ্ঠিত পথ অতিক্রম করে অর্ধ পোড়া স্থানীয় চার্চ ঘুরে আসতে পারেন ।
২. একটা ছোট্ট ট্রেক করে সাময়ার সর্ব বৃহৎ ভলকেনিক ক্র্যাতের লেক লানোতোতে পৌঁছে যেতে পারেন ।
৩. ক্যাপ মুলিনু থেকে নির্জন বিচ এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
৪. রেইন ফরেস্টের গভীরে পাপাশেই জলপ্রপাতের প্রবাহমানতা প্রাণভরে উপভোগ করতে পারেন অথবা আফু আউ ফলস এর জলে নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়ার প্ল্যানটাও কিন্তু মন্দ হবে না।
৫. পিউলা কেভ পুলের জলাশয়ের গভীরে প্রাচীন গুহা ভ্রমণ করে অজানা রহস্যের সন্ধান করতে পারেন ।
৬. সাময়ান বিচগুলোর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলোকে ক্যামেরাবন্দি করতে পারেন ।
৭. রাতে সমুদ্রের রূপ প্রত্যক্ষ করার জন্য সমুদ্র সৈকতের কাছে বাঁশ দ্বারা নির্মিত খড়ের ছাদ যুক্ত বিছানা সহ খালি জায়গাটিগুলোতেও রাত্রিবাস করে অন্য ধরনের ভ্রমণের স্বাদ পেতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন?
ভারত থেকে সাময়া পৌঁছনোর জন্য কোনও সরাসরি বিমান উপলব্ধ নেই। তবে মুম্বই থেকে কানেক্টিং বিমানের সাহায্যে আপনি ফেলেলো ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারেন ।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
পর্যটকদের মতে জুলাই থেকে নভেম্বর সময়টি সাময়া ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় ।
৪. ভানুয়াতু -
নির্জন দ্বীপের বর্ণময় পরিবেশে মধুচন্দ্রিমা তথা ছুটির দিন অতিবাহন করতে চাইলে আপনি ভানুয়াতুকে অনায়াসেই বেছে নিতে পারেন । এখানে আপনি দ্বীপের সৌন্দর্যে মোহিত হওয়ার সঙ্গে সাথেই আগ্নেয়গিরি রূপ পরিদর্শন করতে পারেন এবং দ্বীপের মধ্যে ছোট্ট রোড ট্রিপেরও পরিকল্পনা করতে পারেন।
ভানুয়াতু সম্পর্কিত তথ্য
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তীর্ণ এই দ্বীপ টি ৮০টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। এই অঞ্চলের প্রধান রাজধানী শহর হল হারবারসাইড পোর্ট ভিলা। আর এই শহরের আইল্যান্ড অফ ফেট পর্যটকদের প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই দেশটির মধ্যে মোট ছয়টি প্রধান প্রদেশ রয়েছে। এই দেশ সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে চাইলে ভানুয়াতুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট টি চেক করতে পারেন।
ভিসা
বিনা ভিসায় যে কোনও ভারতীয় নাগরিক ৩০দিন ভানুয়াতু ভ্রমণ করতে পারেন।
কী কী করবেন?
১. জীবন্ত আগ্নেয়গিরিকে চাক্ষুস দেখতে চাইলে নির্দিষ্ট সুরক্ষা বিধি অবলম্বন করে তান্না আইল্যান্ড এর মাউন্ট ইয়াসুর আগ্নেয়গিরি ঘুরে আসতে পারেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী এমনকি বর্তমানেও এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে চলেছে।
২. বাঁশ নির্মিত ব্রিজ ধরে পৌঁছে যেতে পারেন গভীর জঙ্গলে। জঙ্গলের এক্কেবারে গভীরে অবস্থিত প্রাচীন গুহার অজানা ইতিহাস জেনে আসতে পারেন।
৩. পার্বত্য অঞ্চলের ঝর্ণা দ্বারা নির্মিত জলাশয়ের বিশুদ্ধ ঠান্ডা জলে ডুব দিয়ে ভ্রমণের নতুন আনন্দ খুঁজে পেতে পারেন।
৪.সাঁতার কেটে সচল এবং ভূগর্ভস্থ ভানুয়াতুর পোস্ট অফিসটি পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
৫. ফেট দ্বীপপুঞ্জের পূর্বে অবস্থিত সমুদ্র দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত উপহ্রদটি দর্শন করে আসতে পারেন। প্রায় ৬ মিটার গভীর এই হ্রদটির জল কিন্তু বেশ স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার। প্রধানত, সমুদ্রের জল দীর্ঘদিন ধরে জমা হয়ে এই উপহ্রদটি গঠিত হয়েছে।
৬. বাঞ্জি জাম্পিং করতে চাইলে পেন্টেকোস্ট আইল্যান্ড পৌঁছে যেতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
ভারতের যে কোনও শহর দিল্লি, মুম্বাই থেকে কানেকটিং বিমান সহযোগে পৌঁছে যেতে পারেন বাউরফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৬.৬ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন পোর্ট ভিলাতে।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
ভানুয়াতু ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় হল এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস। সমস্ত দ্বীপপুঞ্জ এবং ট্রেক করে রেইন ফরেস্টকে প্রাণভরে উপভোগ করার জন্য এই সময়টি এক্কেবারে আদৰ্শ।
৫. কুক আইল্যান্ড
এই দ্বীপপুঞ্জটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ হাওয়াই এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এই দ্বীপে আপনার জন্য রয়েছে স্বচ্ছ নীল সাগর, প্রবালের প্রাচীর, সামদ্রিক হ্রদ, রুক্ষ্ম পাহাড়, সমুদ্রের অদূরে ঘন অরণ্য ইত্যাদি।
কুক আইল্যান্ড সম্পর্কিত তথ্য
প্রায় ১৫টি দ্বীপের সমাহারে তৈরি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপটি স্বতন্ত্র পরিচালিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। কুক দ্বীপপুঞ্জের সর্ব বৃহৎ আগ্নেয়াগিরি হল রারোতোঙ্গা। আর এই দ্বীপের প্রধান রাজধানী শহর হল অভারুয়া। এই শহরটি এই দ্বীপের প্রধান বাণিজ্যিক এবং সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র।
ভিসা
এই দ্বীপ ভ্রমণের জন্য ভারতীয়দের ৩১ দিনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়াও ৬ মাসের বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসার পৃষ্ঠাগুলো খালি থাকা প্রয়োজন।
কী কী করবেন?
১. প্রবাল এবং জলজ জীবের সন্ধান পেতে প্যাডল বোটের সাহায্যে পৌঁছে যেতে পারেন রারোতোঙ্গার মুড়ি হৃদে।
২. ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন নিডল মাউন্টেনে এবং প্রবহমান উইগমোর জলপ্রপাতের একনিষ্ঠ সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন।
৩. সমুদ্রের মিষ্টি হওয়া গায়ে মেখে মুড়ি বিচ এর নাইট মার্কেট থেকে স্মৃতিচিহ্ন ক্রয় করতে পারেন।
৪. মানিহিকই থেকে এই অঞ্চলের প্রসিদ্ধ কালো মুক্তা সংগ্রহ করতে পারেন।
৫. ছেলেবেলার নস্টালজিয়া পাল তোলা নৌকায় কুক আইল্যান্ড প্রদক্ষিণ করে আসতে পারেন।
৬. কোনও এক রবিবারের সকালে প্রবাল দ্বারা নির্মিত কুক আইল্যান্ড
খ্রিষ্টান চার্চ ভ্রমণ করে স্থানীয় সংস্কৃতিকে উপভোগ করতে পারেন।
৭. প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য রারোতোঙ্গা বিপণী থেকে স্থানীয় ফুলের সুগন্ধ বিশিষ্ট পারফিউম ক্রয় করতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
মুম্বই এবং দিল্লি থেকে কানেকটিং বিমান সহযোগে রারোতোঙ্গা পৌঁছতে পারেন ।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
বছরের যে কোনও সময়েই কুক আইল্যান্ড ভ্রমণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে মে এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর সময়টি এই স্থান ভ্রমণের জন্য আদৰ্শ।
৬. ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড
সবুজ পাহাড় ঘেরা, প্রবালের প্রাচীর দ্বারা পরিপূর্ণ এবং বোটের সমাহারে কোনও দ্বীপপুঞ্জে ছুটি কাটাতে চাইলে পৌঁছে যেতে পারেন ক্যরিবিয়ান আইল্যান্ড-এর স্বর্গ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড -এ...
ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য
এই দ্বীপের কিছুটা অংশ ক্যরিবিয়ান-এর অর্চিপেলাগো আগ্নেয়গিরি এবং ব্রিটিশ ওভার্সেস অঞ্চলের সম্মিলনে গঠিত। দ্বীপের চারটি বৃহৎ এবং কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপের সমাহারে সম্পূর্ণ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের সৃষ্টি। এই দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দ্বীপটি হল তোরতোলা এবং এই দ্বীপের মধ্যেই রাজধানী শহর রেড টাউন অবস্থিত।
ভিসা
পর্যটনের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে ভারতীয় নাগরিকদের ৩১দিনের জন্য বিনা ভিসায় ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয় ।
কী কী করবেন?
১. ভার্জিন গোর্দার উত্তরপশ্চিম প্রান্তে দা-বাথ নামক স্থানে প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত সমুদ্রের জল একত্রিত হয়ে একটি জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।পাথর পরিবেষ্টিত স্বচ্ছ জলের পুলে স্নান করার পরিকল্পনাটা বেশ রোমাঞ্চকর হবে।
২. নৌকোবিহার করে পৌঁছে যেতে পারেন অনেগাদা এবং প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত অশ্বখুরাকৃতি প্রবালের প্রাচীর পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
৩. গোর্দায় জেট স্কি করে অ্যাডভেঞ্চারের নতুন মাত্রা খুঁজে পেতে পারেন।
৪. হেঁটে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড এর রাজধানী শহরটি ঘুরে আসতে পারেন। এখানকার বর্ণময় প্রাচীর এবং ক্যরিবিয়ান মানুষের রঙিন জীবন যাপনের সাক্ষী থাকতে পারেন।
৫. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালীন জাহাজের ধ্বংসস্তূপ পর্যবেক্ষণ করতে স্নোর্কেল-এ সমুদ্রের গভীরে অবস্থিত রনে ন্যাশনাল ম্যারিতম পার্ক ভ্রমণ করে আসতে পারেন।
৬. প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিতি জ্যাকুজি বুব্বলি পুলে স্নান করে ভ্রমণের নতুন আনন্দ খুঁজে পেতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড এর প্রধান বিমানবন্দরটি হল ট্রেরেন্স বি ইন্টারন্যাশনাল লেটসাম বিমানবন্দর, যা বিফ দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত । বিফ দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছনোর জন্য দিল্লি এবং মুম্বই থেকে প্রত্যেকদিন কানেকটিং বিমান উপলব্ধ আছে।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
এই দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় হল মার্চ থেকে মে এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ।
৭. কমরো আইল্যান্ড
প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য এবং সমুদ্রের সিন্গ্ধতাকে উপভোগ করার জন্য কমরো আইল্যান্ড আদর্শ। মরিশাস, মাদাগাস্কার, সেচেলেস্ খুব কাছে এই আইল্যান্ড এর অবস্থান হলেও এখনও সেভাবে পর্যটকদের নজরবন্দি হতে পারেনি।
কমরো আইল্যান্ড সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য
এই দ্বীপপুঞ্জটি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ পূর্বে, মোজাম্বিক-এর পূর্বে এবং মাদাগাস্কারের উত্তর পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত। অর্চিপেলাগোর তিনটি প্রধান দ্বীপের মধ্যে গ্র্যান্ড ক্যামেরন সর্ব বৃহৎ, বাকিগুলি হলো মহেলি এবং অঞ্জয়ান।
ভিসা
ভারতীয় নাগরিকরা এখানে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ভিসার অনুমতি পেয়ে যাবেন। তবে এই ভিসার সাথে প্রয়োজনীয় নথি যেমন ফেরার টিকিট, বৈধ পাসপোর্ট, থাকার জায়গার সঠিক প্রমান পত্র ইত্যাদি উপলব্ধ করতে হবে। এখানে ভ্রমণের আগে থেকে এখানে ভ্রমণের অনুমতি নিয়ে আসাই ভাল।
কী কী করবেন?
১. কমরোর সমুদ্রের তীরে প্রিয় মানুষের সঙ্গে একান্তে বসে সমুদ্রের উচ্ছ্বাসকে উপভোগ করতে পারেন ।
২.অঞ্জয়ান দ্বীপের মুত্সমু শহরের স্বহিলি -সিরাজি শিল্পকলাকে প্রত্যক্ষ করতে পারেন এবং এখানকার বিখ্যাত জলপ্রপাতটি দর্শন করে আসতে পারেন ।
৩. মিটস্যামউলির সফেদ বালির তটে বসে প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হতে পারেন। তাছাড়াও ঐতিহাসিক যুগে সুলতানদের রাজবাড়িগুলো পরিদর্শন করে আসতে পারেন।
৪. মহরে দ্বীপপুঞ্জে ফ্রেঞ্চদের জীবনযাপনের আমেজ খুঁজে পেতে পাবেন।
৫. ছোট্ট ট্রেকের সাহায্যে এই দ্বীপের সক্রিয় এবং জীবন্ত আগ্নেয়গিরি কারথালা দর্শন করে আসতে পারেন।
৬. এই অঞ্চলের প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক শহর মেদিনা এবং বৃহত্তম মসজিদ দু ভেন্দিরেদি প্রদক্ষিণ করতে কমরস অর্চিপেলাগোর রাজধানী শহর মরনিতে পৌঁছে যেতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
ভিস্তারা, এয়ার ইন্ডিয়া, ইথওপিয়ান ইত্যাদি বিমান কোম্পানির কানেকটিং বিমানের সাহায্যে নিউ দিল্লি বা মুম্বাই থেকে মরনিতে অবস্থিত প্রিন্স সাঈদ ইব্রাহিম ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছে যেতে পারেন ।
ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়
কমরো আইল্যান্ড ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় হল জুলাই থেকে নভেম্বর মাস। এই সময়ে এখানকার আবহাওয়া মনোরম থাকে, এবং পর্যটকের তেমন ভিড় থাকে না। তাই এই সময়েই এই আইল্যান্ড ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
তাই আর দেরি না করে চটপট বেড়িয়ে পড়ুন নতুন দেশের সন্ধানে । আর আপনার পরবর্তী ডেস্টিনেশন হিসেবে কোনটি বেছে নিলেন নিচের কমেন্ট বাক্সে লিখে জানতে কিন্তু একদম ভুলবেন না ।