রোজকারের এই বন্দি জীবনের কঠিন বেড়াজাল থেকে মুক্তির আনন্দ পেতে চাইছেন? কিংবা ইন্টারনেটের জগৎ থেকে বেড়িয়ে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ব হতে চাইলে এই ১১টি হোটেলকে বেছে নিতে পারেন । শহুরে জীবনযাপন এবং ইন্টারনেটের ছত্রছায়া থেকে মুক্ত হয়ে বিলাসবহুল হোটেলে থেকে প্রকৃতির কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে মেলে ধরার আনন্দটা প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভ্রমণপ্রিয় মানুষের একমাত্র অভিপ্রায়, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রকৃতির অকৃত্রিম সৌন্দর্য এবং নির্জনতার আনন্দ উপভোগ করতে চাইলে এই হোটেলগুলোতে আপনাকে বিশেষভাবে স্বাগত ।
১. কোদাইকানালের এলিফ্যান্ট ভ্যালি ইকো ফার্ম:
আপনি যদি আধুনিক সভ্যতা থেকে কিছুদিনের জন্য মুক্ত হতে চান তাহলে কোদাইকানাল থেকে মাত্র ২০কিমি দূরত্বে পৌঁছে যেতে পারেন এলিফ্যান্ট ভ্যালি ইকো ফার্মে। এই হোটেলটির ইকো ফার্মগুলো পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষনীয়। স্থানীয় মানুষের মত অনুসারে জানা যায়, এই অঞ্চলটি পূর্বে হাতিদের যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল; যা বর্তমানে বিভিন্ন জীবের বাসস্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে । আর তাই জনজাতিবিহীন, শান্ত, নিস্তব্ধ এবং নির্জন পরিবেশের পরিমণ্ডলে এই জায়গাটি আপনার ভ্রমণের একমাত্র কারণ হয়ে উঠবে। এই হোটেলে মোট ২০ টি পরিবেশ সহযোগী বাংলো রয়েছে এবং প্রত্যেকটি বাংলোতে সোলার লাইট এবং জ্বালানি সহযোগে সমস্ত রকম আধুনিক সুযোগ সুবিধা উপলব্ধ রয়েছে ।
২. দ্য তামারা, কুর্গ:
পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চাইলে কুর্গের তামারা হোটেলের বিলাসবহুল কটেজে রাত্রিবাসের প্ল্যানটা বেশ রোমাঞ্চকর হবে। কটেজের ব্যালকনিতে বসে এক কাপ কফির সঙ্গে বিস্তীর্ণ কাব্যিনাকাড এস্টেটের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমঘাট পর্বতমালাকে উপভোগ করার দৃশ্যটা জাস্ট অসাধারণ বলতেই হবে। এছাড়াও এখান থেকে আপনি আরবিকা এবং এলাচের চাষ প্রত্যক্ষ করে আসতে পারেন। ইচ্ছা করলে একটা ছোট্ট ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন রুদ্রাক্ষ ট্রেইল, আর এখানকার অনেক অজানা পাখিদের আড্ডার একমাত্র সাক্ষী থাকতে পারেন আপনিও। দিনের শেষে হোটেলের ষ্টুডিয়ো স্পা থেকে স্পা করিয়ে হালকা আরামের আমেজ নিতে পারেন আপনিও।
৩. হিডেন ভ্যালি রিট্রিট:
নির্জনতায় পরিপূর্ণ কোনও হোটেলে রাত্রিবাস করতে চাইলে হিডেন ভ্যালি রিট্রিটে আপনার জন্য রইল অগ্রিম আমন্ত্রণ। আধুনিকতার ঝাঁ চকচকে জীবনযাত্রা থেকে এক্কেবারে আলাদা এই হোটেলটি কেরালার ওয়েনদে অবস্থিত। রাতের অন্ধকারে বনের নির্জনতার মাঝে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শুনতে শুনতে প্রকৃতির তরফ থেকে শুভ রাত্রি অভিবাদন পেতে চাইলে আপনাকে আসতেই হবে এই হোটেলে।
৪. লিটল ড্রিম, মর্নিং সারপ্রাইস, মানালি:
কোলাহল বিহীন, শান্ত এবং শীতল পরিবেশে পাহাড় পরিবেষ্টিত অঞ্চলে একটা ছোট্ট বাড়ির স্বপ্নটি সমস্ত মানুষের মনেই আনাগোনা করে। কি তাই তো? এমনি একটি স্বপ্নের বাড়িতে বসবাস করে ভ্রমণের দিনগুলো অতিবাহন করতে পৌঁছে যেতে পারেন মানালিতে। মানালি বাস স্ট্যান্ড থেকে মাত্র ১৫মিনিটের দূরত্বে নাসোগী গ্রামে এই হোমস্টেটি অবস্থিত। এখান থেকে মাত্র ৩০০ মিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন প্রবহমান জলপ্রপাতের উদ্দেশ্যে। তাছাড়াও একটি নির্দিষ্ট সময়ে গেলে আপেলের বাগানও পরিদর্শন করতে পারেন।
৫. যোগীদের বাসস্থান, হোম অফ গাইয়াতে রাত্রিবাস:
পর্যটকের ভিড়ে জর্জরিত মানালির মধ্যেই পাহাড়ের উপর আপেল গাছ দ্বারা পরিপূর্ণ কোলাহলবিহীন স্থানে এই হোমস্টেটির অবস্থান। জনমানুষের ভিড়ে এই হোমস্টেটি সহজে নজরবন্দি হবে না। মানালির প্রধান স্থান থেকে প্রায় ২০ মিনিট ট্রেকিং করেই আপনি এই হোমস্টেতে পৌঁছতে পারবেন। জায়গাটির শান্ত এবং নির্জন পরিবেশটি শিল্পী, গীতিকার, লেখক বা যোগীদের জন্য এক্কেবারে আদৰ্শ।
৬. টিপ্পরারির ঔপনিবেশিক বাংলো:
ব্যাঙ্গালুরু থেকে কিছু কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই ঔপনিবেশিক বাংলোটি। এই বাংলোটি দেখার পর আপনার চার্লস ডিকেন্সের উপন্যাসে বর্ণিত বাংলোগুলির কথা মনে পরে যেতে পারে। তৎকালীন যুগের সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্র সহযোগে এই বাংলোর ঘরগুলো সুসজ্জিত রয়েছে। বাংলোটি থেকে সালেম শহরের অসাধারণ দৃশ্যটি প্রত্যক্ষ করা যায়।
৭. দিন্ডিগুল এর কার্ডেমন হাউস:
সমস্ত ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে দিন্ডিগুল অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিত। কার্ডেমন হাউসটি পূর্বে ব্রিটিশ চিকিৎসক ডাক্তার ক্রিস লুকাস এর বাসস্থান ছিল। অথওর গ্রামে অবস্থিত এই এই বাড়িটির ছাদ থেকে বর্ষার জলে নির্ভরকারী লেক কামারজারের দেখা পেতে পারেন। এছাড়াও, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই লেককে কেন্দ্র করে অনেক নাম-না-জানা ফুলের সন্ধান পাবেন। পাহাড় পরিবেষ্টিত লেক, রঙ বেরঙের ফুলের সমাহার, ভ্রমরের গুঞ্জন , নানান রঙের প্রজাপতির যাতাযাত; প্রকৃতির এই সমস্ত রূপগুলোকে মনের ক্যামেরাতে আবদ্ধ করতে এখানে আপনাকে আসতেই হবে।
৮. বান্ধবগড় ট্রি-হাউস হাইডআওয়ে:
আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ হন তাহলে ২১ একর জমির উপর বান্ধভগড় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের ঘন অরণ্যের মাঝে এই ট্রি-হাউসে রাত্রিবাসের পরিকল্পনাটি যে রোমাঞ্চকর হবে, তা বলাই বাহুল্য । আমরা সকলেই জানি সাড়া ভারতের মধ্যে সর্বাধিক বাঘের দেখা মেলে এই বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে। এই ট্রি-হাউসের ব্যালকনি থেকে আপনি অনায়াসেই দেখা পেয়ে যাবেন বাঘের। তাছাড়াও জঙ্গলের সংস্কৃতিকে প্রাণভরে উপভোগ করার জন্য এই জায়গাটি আদৰ্শ একথা বলাই বাহুল্য।
৯. ম্যাঙ্গালোরের সুলতানের ব্যাটারি:
এই সুলতানের ব্যাটারিটি ও আরেকটি ট্রি-হাউস হিসেবে পরিচিত । প্রধান শহর ম্যাঙ্গালোর থেকে প্রায় ৪ কিমি দূরত্বে অবস্থিত টিপু সুলতানের এই ওয়াচ টাওয়ারটি । এখানে থেকে আপনি যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারেন, তেমনি কফি এবং ভ্যানিলা চাষও চাক্ষুস করতে পারেন।
১০. ভাজহুরের সেরেনিটি:
পাহাড়ের কোলে কানাম এস্টেটের মধ্যবর্তীস্থানে এই ভিলাটির অবস্থান। ভিলাটি তৎকালীন স্থাপত্যর পরিমণ্ডলে নির্মিত, তাছাড়া ভিলাটির মধ্যে একটা হেরিটেজ আমেজ রয়েছে। মালাবার অঞ্চলে হাতিদের বিচরণের সাক্ষী থাকতে চাইলে আপনি এই ভিলাটি পরিদর্শনে আসতে পারেন।
১১. আউলি রিসোর্ট:
হিমালয়ের বুকে তুষারাবৃত পরিবেশে রাত্রিবাস করার ইচ্ছে হলে পৌঁছে যেতে পারেন আউলি রিসোর্টে। হিমালয়ের গাড়োয়াল অঞ্চলটি সমস্ত ভ্রমণপ্রেমী মানুষের কাছে স্বর্গ। চারিদিকে বরফাচ্ছন্ন শীতল পরিবেশের পরিমণ্ডলে এই বাংলো থেকে হিমালয় দর্শনের আনন্দটা এককথায় জাস্ট অসাধারণ। সকালে হিমালয়ের পক্ষ থেকে প্রথম অভিবাদনটি পেতে চাইলে অথবা প্রকৃতির কোলে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলে আউলির এই রিসোর্টে আপনার জন্য রইল সাদর আমন্ত্রণ।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)