প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে স্বর্গ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে যে স্থানটি সেটি হল হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলার অন্তর্গত বাঞ্জার নামক শহর। ‘ভ্যালি অফ গড’ অর্থাৎ উপত্যকার দেবতা হিসেবে পরিচিত এই বাঞ্জার শুধুমাত্র ভ্রমণকারীদের ক্লান্তি দূর করবে তা নয়, এখানে রয়েছে বিভিন্ন রকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার সুযোগও। এই শহরটিকে কেউ কেউ আবার তীর্থন উপত্যকা বলেও চেনেন, কারণ এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তীর্থন নদীটি।
একঘেয়েমি দূর করার বা পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য , এই জায়গাটি কিন্তু বরাবরই ভ্রমণকারীদের ছুটি কাটানোর উপযুক্ত স্থান। এই জায়গাটি শুধুমাত্র আপনাকে নয়নাভিরাম দৃশ্যই উপহার দেবে তাই নয়, এখানকার আভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য এবং থাকবার উপযুক্ত আয়োজন সমানভাবে আপনার চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে বাধ্য। কাল্বরি নদীর উপত্যকায় সৃষ্টি হওয়া ঘন সবুজ অরণ্য এবং পর্বত শৃঙ্গের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ‘গন ফিশিং কটেজ’ এখানকার আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র।
অবস্থান:
দেউড়ি গ্রাম, কাল্বরি রোড, ভি.পি.ও. কাল্বরি, তেহসিল বাঞ্জার, জেলা কুলু, ১৭৫১২৩ বাঞ্জার, ভারতবর্ষ।
উপযোগিতা:
আভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই জায়গাতে রয়েছে ভ্রমণকারীদের জন্য থাকবার আধুনিক ব্যবস্থাপনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে যদি আপনি কাঠের কারুকার্য এবং পাথরের তৈরি বিভিন্ন নকশা কাটা বস্তু দ্বারা সজ্জিত আবাসনের স্বাদ আস্বাদন করতে চান, তাহলে বলব ‘গন ফিশিং কটেজ’ আপনার জন্য একবারে উপযুক্ত জায়গা।
জায়গাটি সম্বন্ধে কিছু তথ্য:
কাল্বরি নদীর তীরে অবস্থিত গন ফিশিং কটেজকে ঘিরে রয়েছে এক অভূতপূর্ব সুন্দর অর্কিড ফুলের বাগান, সঙ্গে রয়েছে ধাপ চাষ করার জায়গা এবং দেবদারু গাছের বন।
গ্রেট হিমালয়ান ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে প্রকৃতির কোলে গড়ে উঠেছে ইকো জোন সমন্বিত এই কটেজগুলো। কটেজগুলোতে আসলে আপনি খুঁজে পাবেন উপত্যকার এক জাঁকজমকপূর্ণ চিত্র।
অরণ্যের মধ্যে অবস্থিত কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি দুটি শয়নকক্ষ এবং আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম দ্বারা গঠিত ও রান্নাঘরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই কটেজগুলো; যেখানে আপনি সকাল এবং সন্ধ্যায় বসে চা পান করতে পারবেন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে উপভোগের কথা মাথায় রেখে কটেজগুলো তৈরি করা হয়েছে এবং পুরনো জিনিসের দ্বারা সুসজ্জিত ঘরগুলো কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেজে উঠেছে। এই ঘরগুলোতে বেশ বড় আকারের ঘুলঘুলি এবং যথেষ্ট পরিমাণে সূর্য রশ্মি চলাচলের পথ।
ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য যদি আপনি প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা অপরূপ সৌন্দর্য বিস্তারকারী বিলাসবহুল একটি জায়গার অনুসন্ধান করেন, তাহলে বলব এই স্থানটি আপনার জন্য একেবারে যথোপযুক্ত।
খাবার-দাবার:
সকালে এই কটেজগুলোতে আপনাকে ব্যুফের মাধ্যমে প্রাতঃরাশ পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও এখানকার প্রতিটি রান্নাঘরে মাইক্রোওভেনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে।
করণীয় বিষয়বস্তু:
গ্রেট হিমালয়ান ন্যাশনাল পার্কে ট্রেক:
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলোতে ট্রেক করার চেয়ে ভাল কিছুই নেই। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এ যেন এক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতার অন্যতম পন্থা; যেখানে আপনার পথ চলার প্রতিটি পদক্ষেপে ধরা দেবে ঘন সবুজ বন, প্রস্ফুটিত ফুল, খরস্রোতা নদীর প্রবহমান শব্দ এবং পাখির কলতান।
মাছ ধরার আনন্দ:
স্রোতস্বিনী নদীগুলোর মধ্যে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ এই তীর্থন নদী উপত্যকায় এসে আপনি উপভোগ করতে পারবেন। গন ফিশিং কটেজে থাকলে আপনি কাল্বরি নদীর জলে মাছ ধরার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন, তবে বলে রাখি এখানে কিন্তু মিষ্টি জলের মাছ পাওয়া খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়। চাইলে আপনি এখানে মাছ ধরার জন্য এখানকার কর্তৃপক্ষ কাছ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তির ব্যবস্থা করে নিতে পারেন।
খরচ খরচাদি:
আপনার ইচ্ছে মতো আপনি এখানে নিজস্ব ঘর অথবা সম্পূর্ণ জায়গাটি নির্বাচন করতে পারেন। নিজস্ব ঘরের জন্য প্রতিরাতের ভাড়া ৬০০০ টাকা আর সম্পূর্ণ জায়গাটি যদি আপনি নিতে চান তাহলে সেটি ১২০০০ টাকা।