আমাদের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ থাকে, আমাদের মধ্যে কেউ খেতে ভালবাসি, কেউ আবার ঘুরতে যেতে, কেউ কেউ আবার নিছকই বাড়িতে থাকতেই পছন্দ করে থাকি... কিন্তু ২০২০-সালে মহামারীর এই প্রকোপে আমাদের প্রত্যেকেরই অবস্থা কম-বেশি একই রকমের। আমরা প্রত্যেকেই ঘরবন্দি। ঘরের মধ্যে থেকেই চলছে আমাদের ছোট ছোট ইচ্ছাপূরণের তালিকা।
এখন যদি আপনাকে কিংবা আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় ২০২০ সাল আপনার কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ তাহলে বোধহয় এই বছরের জন্য সেরার সেরা উত্তরটা দেওয়া হবে না। কারণ এই বছরটা সবার কাছেই বেশ কিছু খারাপ খবরই নিয়ে এসেছে, তবে খারাপের মধ্যেও একটা-দুটো ভাল খবর ইতি-উতি ছড়ানো থাকে তা ভুলে গেলে চলবে না। ঠিক তেমনই একটা খবর হতে পারে সংযুক্ত আরব আমির শাহির নিবাসী ডাঃ খওলা আল রোমাইথিয়ার বিশ্বভ্রমণের নজির। খবরটা শুনে অনেকেরই হয়তো বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংশয় হতে পারে কারণ-একে মহামারী, দু'য়ে লকডাইন, এই পরিস্থিতিতে বিশ্বভ্রমণ? কিঞ্চিত স্বপ্ন কল্পই বটে।
তবে আল রোমাইথিয়া সোলো ট্রিপের মধ্যে দিয়ে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছেন। তিনি মাত্র তিনদিন, ১৪ ঘণ্টা, ৪৬ মিনিটের মধ্যে প্রায় সাতটি মহাদেশ পাড়ি দিয়ে এই অসাধ্যকে সম্ভব করতে পেরেছেন। শুধুমাত্র তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের জন্য পেয়েছেন যথাযোগ্য স্বীকৃতি। তাঁর নাম প্রকাশিত হতে চলেছে গিনিস বুকে। তিনি স্বল্পতম সময়ে এই কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছেন, তাই তাঁকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
সংবাদপত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অভিজ্ঞতা এবং যাত্রাপথের বর্ণনা করতে গিয়ে খওলা আল রোমাইথিয়া জানিয়েছেন যে, তাঁর যাত্রাপথটি খুব একটা সুগম ছিল না। নিরবিচ্ছিন্নভাবে ফ্লাইটে যাতায়াতের ফলে শারীরিক ধকল অনেকটাই সামলাতে হয়েছে তাঁকে কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি পেরেছেন সব রকমের প্রতিকূলতাকে জয় করতে।
সম্মানজনক এই খেতাবটি জয় করতে প্রায় ২০৮টি দেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তাঁর যাত্রা এসে শেষ হয়।
তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে গিয়ে তিনি অফিসিয়াল শংসাপত্রের সঙ্গে একটি পোস্ট ভাগ করেছেন, তিনি বলেছিলেন, “আমি সবসময় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে মুগ্ধ হয়েছি। আমি যা করেছি সেই সকল বিষয়ের নিরিখে এই শংসাপত্রটি বহন করা খুব ভারি মনে হয়েছিল। তবে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।"
তাঁর ক্লান্তিকর যাত্রার আরও বিশদ বর্ণনা করে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে, অনেক সময় এমন ঘটনা ঘটেছিল যখন তিনি নিজের এই ইচ্ছাটুকু ছেড়ে দেওয়ার কথাও চিন্তা করেছিলেন, তিনি আরও বলেছেন, "... আমি শেষ লক্ষ্যটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য এবং আমার যাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য উত্সাহিত করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ তাঁদের"
আল রোমাইথি এই দেশগুলোর ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে এবং অন্যান্য মানুষকেও অসাধারণ রেকর্ড-ব্রেকিং মাইলফলক অর্জনে সক্ষম করে তুলতে, তিনি ২০৮ টি দেশ ও দেশ নির্ভর অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে এই যাত্রা করেছিলেন।