এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায়

Tripoto
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 1/14 by Deya Das
উত্তরাখণ্ডের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকার সৌন্দর্য নিঃসন্দেহে অভাবনীয় (ছবি সংগৃহীত)

উত্তরাখণ্ড বলতেই আমরা মূলত সুবিশাল বরফাচ্ছন্ন পর্বতশৃঙ্গকেই কল্পনা করে থাকি | কিন্তু উত্তরাখণ্ডের লুকনো সম্পদ হল এখানকার অভয়ারণ্যগুলো | আর এই অভয়ারণ্যগুলোর মধ্যে ভ্রমণকারীদের প্রথম পছন্দ হল বিনসার অভয়ারণ্য| বিনসারের অচেনা বন্য জগতের সাথে আলাপ করতে চান? প্রকৃতির অজানা রহস্যের গুপ্ত সন্ধান করতে আজই চলে আসুন, ট্রি অফ লাইফ-গ্র্যান্ড ওক ম্যানোর-এ |

স্বাধীনতার আগে এই প্রাসাদটি ব্রিটিশদের নিজস্ব বাসস্থান হিসেবে পরিচিত ছিল | কুমায়ুনের তৎকালীন কমিশনার হেনরি রামসে বহুদিন এই প্রাসাদের স্থায়ী বসবাসকারী ছিলেন| প্রাসাদটির সুবিশাল দালান, পুরনো কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র, আরামদায়ক ফায়ার প্লেস, সমস্তকিছুর মধ্যেই প্রাচীনতার ছোঁয়া রয়েছে | প্রাসাদটি এক্কেবারে অভিয়ারণ্যের মধ্যে অবস্থিত | এই বন্য জীবন, প্রকৃতির নির্জনতা, জোনাকির আলোর ফুলঝুরি চাক্ষুস দেখার অভিজ্ঞতার একদম মিস করবেন না|

কাদের জন্য উপযোগী:

Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 2/14 by Deya Das
চোখ ধাঁধানো সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ (ছবি সংগৃহীত)

বন্যজীবন ও জঙ্গল অর্থাৎ আদিম জীবনধারণ যারা ভালোবাসেন, সেই সমস্ত পর্যটকদের ট্রি অফ লাইফ - ট্রি গ্রান্ড ওক ম্যানোর-এ স্বাগত | এখানে আপনি আপনার প্রিয় মানুষের সঙ্গেও আসতে পারেন; আবার পরিবারের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে এলে আপনার রোমাঞ্চকর যাত্রাটি আরও সুখকর হয়ে উঠতে পারে |

উপযুক্ত সময়:

অভয়ারণ্যের দৃশ্যাবলী বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম | তবে পর্যটকরা বিনসার বেড়ানোর জন্য মার্চ থেকে জুন অর্থাৎ শীতের শেষ ও বর্ষার আগের সময়টাকেই শ্রেষ্ঠ সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন | তবে বরফাবৃত জঙ্গল দেখতে চাইলে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী মধ্যে যে কোনও সময়ই আপনি যেতে পারেন |

বিনসারের ট্রি অফ লাইফ সম্পর্কে কিছু তথ্য:

Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 3/14 by Deya Das
পড়ন্ত বিকেলের আলোয় আলোকিত প্রকৃতি (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 4/14 by Deya Das
প্রতিটি ঘরের সঙ্গে সংযুক্ত বারান্দা (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 5/14 by Deya Das
অন্দরসজ্জা (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 6/14 by Deya Das
আসবাবপত্র সজ্জিত অন্দর (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 7/14 by Deya Das
ভোরের আলোয় আলোকিত অট্টালিকা (ছবি সংগৃহীত)

প্রায় ৩০০ বছর পুরনো এক ওক গাছের স্মৃতিকে অনুসরণ করেই প্রাসাদটির নাম “ট্রি অফ লাইফ- গ্রান্ড ওক ম্যানোর” বেছে নেয়া হয়েছে | প্রায় ১৫০ বছর পুরনো এই অট্টালিকাটি বিনসার অভয়ারণ্যের গভীরে এবং কুমায়ুন পর্বতশৃঙ্গের পাদদেশে অবস্থিত | ১৮৫৬ সালে কুমায়ুনের ব্রিটিশ কমিশনার হেনরি রামসে নিজের বাসস্থান হিসেবে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন যেটি পরবর্তী কালে একটি বিলাসবহুল হোটেল হিসেবে পরিচিতি পায় | হোটেলটির ৪কিমি ব্যাসার্ধ্যের মধ্যে আর কোনও লোকালয়ের চিহ্ন নেই |

এবার হোটেলটির অন্দরসজ্জা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক | গ্রান্ড ওক ম্যানোর-এ সব মিলিয়ে মোট ৯ টি ঘর বা কক্ষ রয়েছে এবং সব কক্ষগুলো তৎকালীন ব্রিটিশ অফিসারদের নাম অনুযায়ী নামাঙ্কিত করা... পর্যটকদের মধ্যে রোমাঞ্চকর আবেদন নিয়ে আসে অবশ্যই |

প্রত্যেকটি কক্ষে নিজস্ব স্নানঘর, বিশালাকার ব্যালকনি, ফায়ারপ্লেস ছাড়াও সমস্ত রকম আধুনিক সুযোগ সুবিধা আছে | ঘরগুলোর সুবিশাল আয়তন, প্রাচীন আসবাবপত্র, বিশালাকৃতি জানালা, এই সমস্ত কিছুর মধ্যে আপনার মনে হতেই পারে কেউ যেন ঐতিহাসিকতার আলতো প্রলেপ মাখিয়ে দিয়েছে | সকালে সরাসরি সূর্যের থেকে সুপ্রভাত অভিবাদন এবং নির্জন রাতের ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ শুনতে শুনতে একটা দিন কাটাতে চাইলে আজই চলে আসুন গ্রান্ড ওক ম্যানোর-এ |

খরচ:

দুজনের রাত্রিবাসের খরচ প্রায় ৫৪০০ টাকা থেকে শুরু |

আহার:

Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 8/14 by Deya Das
প্রাতঃরাশ (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 9/14 by Deya Das
সকালের ব্রেকফাস্ট পর্বেও রয়েছে প্রকৃতির নিপুণ স্পর্শ (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 10/14 by Deya Das
প্রকৃতি যেন প্রতি মুহূর্তে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করে চলেছে (ছবি সংগৃহীত)

গ্র্যান্ড ওক ম্যানোর-লোকালয় থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন | তাই হোটেলটিতে ফসল ও শাক-সবজি ফলনের সু-বন্দোবস্ত আছে | সুতরাং এখানে অতিথি হয়ে এসে আপনি কেবলমাত্র তাজা এবং বিশুদ্ধ আহারাদি আশা করতে পারেন | হোটেলের রন্ধনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক কর্মচারী যথেষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ | এক বন্য পরিবেশে নির্ভেজাল ভারতীয় খাদ্যের স্বাদ নিতে চাইলে চটপট বেড়িয়ে পড়ুন আর পৌঁছে যান গ্র্যান্ড ওক ম্যানোর-এ |

প্রধান আকর্ষণ:

ঘোরচুলা বা জিরো পয়েন্ট ভ্রমণ:

ঘোরচুলা বা জিরো পয়েন্ট যেতে চাইলে, সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন হোটেলের মালিক সিংহু ও শিখার সাথে | আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী বেছে নিন ঘোরচুলা ট্রিপ বা জিরো পয়েন্ট ট্রিপ আর আর প্রত্যক্ষ করে আসুন সুউচ্চ পর্বতের সৌন্দর্য্য | এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, জিরো পয়েন্ট হলো বিনসারের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, যার উচ্চতা প্রায় ৭৮০০ ফিট | ট্রেক করে জিরো পয়েন্ট-এর উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে আপনি পেয়ে যাবেন ওক আর রডোডেনড্রন ঘন জঙ্গল| এছাড়াও আপনার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে হরিণের ডাক, অজানা পাখির গুঞ্জন; এবং একই সাথে দেখা পেতে পারেন বিভিন্ন অচেনা পশুর |

অন্যদিকে, বরফাবৃত শ্বেতশুভ্র হিমালয়ের ও পঞ্চচুল্লির সাথে একান্তে পরিচয় করতে চাইলে আপনাকে বেছে নিতেই হবে ঘোরচুলা ট্রেক | এই ট্রেক ও আপনার সাথে ওক আর রডোডেনড্রন এর সাক্ষাৎ অবশ্যই করাবে |

পাহাড়ি গ্রামে ভ্রমণ:

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাতঃভ্রমণের বেড়িয়ে পড়ুন পাহাড়ি গ্রাম এর উদ্দেশ্যে | ওক আর সিডার-এর ঘন জঙ্গল পেরিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন এক ছোট্ট গ্রাম কাঠদড়া-তে | একদিকে গ্রামের মানুষের সহজ জীবনযাত্রা এবং অন্যদিকে পাহাড়ে বসবাস করার কঠিন জীবন কাহিনীর জ্বলন্ত প্রতিছব্বি আপনার সামনে স্বমহিমায় ধরা দেবে | এই গ্রামের একমাত্র জীবিকা হলো চাষবাস | এখানে দেখতে পাবেন কীভাবে তারা বেঁচে থাকার তাগিদে পাহাড়ের মধ্যবর্তী জায়গাটিকেই চাষের জমি হিসেবে বেছে নিয়েছেন |

জাগেশ্বর মন্দির দর্শন:

কুমায়ুন অঞ্চলের জাগেশ্বর মন্দিরটি হল পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ | দ্বাদশ শতাব্দীর এই প্রাচীন মন্দিরটি অসাধারণ স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন | সিডার অরণ্যের ভিতর জাগেশ্বর মন্দির ছাড়াও আরও এই ধরণের ১৫০টির উপর মন্দির রয়েছে | একদিনের ট্রিপে এই গভীর অরণ্যের ভিতর মন্দির প্রদক্ষিণ করার সুযোগ একদম হাতছাড়া করবেন না |

যোগা প্রশিক্ষণ:

আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্য সম্মন্ধে সচেতন হন অথবা মানসিক শান্তি লাভ করতে চান তাহলে অবশ্যই স্থানীয় যোগা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন | হোটেলের মালিক এবং কর্মচারীবৃন্দ এই সমস্ত কিছুর এ আয়োজন আপনার জন্য করে দিতে পারেন |

Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 11/14 by Deya Das
বরফে ঢাকা প্রাকৃতিক পরিবেশ (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 12/14 by Deya Das
গোধূলি রঙে মায়াময় প্রকৃতি (ছবি সংগৃহীত)
Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 13/14 by Deya Das
নিরালা নিভৃত অবসর যাপনের পথ পাবেন এখানেই (ছবি সংগৃহীত)

কীভাবে পৌঁছবেন:

Photo of এক রোমাঞ্চকর জীবনের সাক্ষী থাকতে অবশ্যই ঘুরে আসুন বিনসারের শতাব্দী প্রাচীন এই অট্টালিকায় 14/14 by Deya Das
প্রকৃতির অকৃপণ স্পর্শ (ছবি সংগৃহীত)

বিমানে: কুমায়ুন অঞ্চলের নিকটতম বিমানবন্দরটি হল পান্থনগর বিমানবন্দর | বিমানবন্দর থেকে গ্র্যান্ড ওক ম্যানোর-এর দূরত্ব প্রায় ১৫২ কিমি | ভারতের যে কোনও ছোট বড়ো শহর থেকে সহজেই পৌঁছে যান দিল্লি এয়ারপোর্ট,তারপর দিল্লি থেকে সরাসরি বিমানে চেপে পৌঁছে যান পান্থনগর | বিমানবন্দরে পৌঁছে ট্যাক্সি ভাড়া করে সোজা পৌঁছে যেতে পারেন আপনার গন্তব্যে |

সড়কপথে: প্রথমে উত্তর ভারতের যেকোনো জায়গা থেকে বাসে করে পৌঁছে যান কাঠগোদাম | তারপর সেখান থেকে ছোট গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান গ্রান্ড ওক ম্যানোর-এ | অথবা হোটেলে জানিয়ে রাখলে তারাও কাঠগোদাম থেকে গাড়ি ব্যবস্থা করে দিতে পারে |

ট্রেনে: ট্রেনে যেতে চাইলে প্রথমে কাঠগোদাম স্টেশনে পৌঁছে একটি ছোট গাড়ি ভাড়া করে ১১৯ কিমি দূরত্ব পেরিয়েই পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার গন্তব্যে | অথবা হোটেলে জানিয়ে রাখলে তারাও গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে পারে |

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত/অনুলিখিত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads