ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট

Tripoto

আয়তনের নিরিখে পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম দেশ ভারতবর্ষ, ভারতবর্ষেই মিশে রয়েছে সহস্রাধিক জনসংস্কৃতির নিদর্শন। কিন্তু শুধু সাংস্কৃতিক বৈচিত্রই নয়, ভারতবর্ষে আছে বেশ কতগুলি বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভও বিশেষভাবে আমাদের চোখে পড়ে। এই বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভগুলো প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে এমনটা বলা যায়, ভারতবর্ষের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনধারণ, অরণ্য ও বনাঞ্চল সংরক্ষণের পিছনেও এই বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভগুলোর অবদান অনস্বীকার্য।

ভারতবর্ষের বিভিন্ন বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ ও জাতীয় উদ্যানগুলিতে কিছু নির্দিষ্ট উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের দেখা পাওয়া যায়, যেমন বিলুপ্তপ্রায় এশিয়ান বাঘ। এই তালিকার প্রতিটি রিসার্ভ কোনও না কোনও বিপন্নপ্রায় উদ্ভিদ বা প্রাণী গোষ্ঠীর প্রাকৃতিক জন্মস্থল ও আবাসভূমি হিসেবে স্বীকৃত।

আসুন, জেনে নি ভারতবর্ষের বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের কথা

১. অর্চনামালাই-অমরকণ্টক বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ

দক্ষিণভারতীয় উপদ্বীপের জলবিভাজিকা বা ওয়াটারশেড অঞ্চল হল অর্চমাকমার-অমরকণ্টক বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ। ইউনেস্কো সংস্থা স্বীকৃত বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ও গুরুত্বপূর্ণ বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের তালিকায় এটি নবতম সংযোজন। ভারতবর্ষে বেশ কিছু অন্য রিসার্ভের মতোই, এটিও মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগঢ় রাজ্যের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। ঘন জঙ্গল এবং আঞ্চলিক উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলে পরিপূর্ণ এই বনাঞ্চল থেকেই উৎপত্তি হয়েছে মধ্যভারতের প্রাণসঞ্চারী নর্মদা, জহিল্লা এবং শোন, এই তিন নদীর।

কী কী করবেন : অবশ্যই ঘুরে দেখুন প্রাচীন কালাচুরি মন্দির, যার স্থাপত্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রাচীন মধ্যভারতীয় সভ্যতার নিদর্শন। বর্ষাকালে স্ফটিকস্বচ্ছ জলপ্রপাতের ছোঁয়ায় প্রকৃতি হয়ে ওঠে অনন্য সুন্দর। অমরকণ্টকের নর্মদা নদীর পবিত্র উৎসস্থলে অবস্থিত নর্মদা উদ্গম মন্দিরটি ঘুরে আসতে কিন্তু ভুলবেন না।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 1/10 by Aninda De
স্থাপত্যশৈলীর এক অপরূপ নিদর্শন (ছবি : সংগৃহীত)

২. অগস্ত্যমালাই বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার উল্লেখ না করলে কোনও বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের তালিকাই পূর্ণতা পায় না। এই ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত হেরিটেজ সাইটটি দু 'ভাগে বিভক্ত। তার-ই এক ভাগ এবং আরও তিনটে জাতীয় উদ্যানকে নিয়ে গড়ে উঠেছে অগস্ত্যমালাই বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার আর্দ্র পর্ণমোচী বাস্তুঅঞ্চল, মন্তানে রেন ফরেস্ট এবং শোলা মিলিয়ে গড়ে ওঠা এই অঞ্চলে আছে প্রায় ২০০০ প্রকার ভেষজ-ওষধি উদ্ভিদ, এশিয়ান হাতির মতন প্রায় ৫০টি বিপন্নপ্রায় প্রাণী প্রজাতি এবং পৃথিবীর অন্যতম আদিম জনজাতি, কণিকারান মানুষদের বাসস্থান।

কী কী করবেন : থেনমালাতে পাবেন জিপ-লাইনিং আর ক্যাম্পিং এর মতন অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ। মিউজ়িয়মে গিয়ে দেখে নিতে পারেন কণিকারান জনজাতির ইতিহাস ও জীবনশৈলীর গল্প, জানতে পারবেন বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ ঘোষণার আগে থেকেই কীভাবে তারা নিজেদের বাসভূমির সংরক্ষণ করে চলেছে। হাইক করে যেতে পারেন অগস্ত্যমালাই বায়োস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়ায় অবস্থিত অগস্ত্যকুড়াম মন্দিরে - সেখান থেকে দেখতে পাবেন সম্পূর্ণ জঙ্গলের প্যানোরামিক ভিউ।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 2/10 by Aninda De
বিলুপ্তপ্রায় এশিয়ান হাতির ছবি ( ছবি : সংগৃহীত)

৩. কোল্ড ডেজার্ড (পিন ভ্যালি জাতীয় উদ্যান এবং নিকটবর্তী অঞ্চল, চন্দ্রতাল এবং সার্চু ও কিব্বের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য)

ভারতবর্ষের বিভিন্ন রিসার্ভের মধ্যে শীতল মরুভূমি বা কোল্ড ডেজার্ড অঞ্চলটি সম্ভবত সবচেয়ে অসাধারণ। পশ্চিম হিমালয়ের পাদদেশে হিমাচল প্রদেশ এবং পাকিস্তানের স্কার্দু অঞ্চলের মধ্যে এই রিসার্ভের ব্যাপ্তি। কিন্তু এখানকার ভূপ্রকৃতি সুউচ্চ হিমালয় মরুভূমির মতো, বিরল পাহাড়ি জীববৈচিত্রে ভরপুর। স্নো-লেপার্ড এই অঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জীবের নিদর্শন বলা যায় এবং একইসঙ্গে সংরক্ষণের যোগ্য। প্রাচীন ভারতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের পিছনেও এই অঞ্চলের ভূমিকা রয়েছে। ৭৭০০ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত এই সুবিশাল এই রিসার্ভের অংশ হিসেবে অন্তর্গত হয়েছে পিন ভ্যালি জাতীয় উদ্যান, চন্দ্রতাল এবং সার্চু ও কিব্বের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।

কী কী করবেন : পিন ভ্যালি থেকে পিন ভাবা পাস হয়ে পার্বতী ভ্যালি যাওয়ার ১০ দিনের ট্রেক হল এই অঞ্চলের আদিম সৌন্দর্য উপভোগ করার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়। মানালি বা কিব্বের থেকে লম্বা রোড ট্রিপের মাধ্যমে ঘুরে যেতে পারেন কিব্বের গ্রাম (এশিয়ার সর্বোচ্চ গ্রাম যেখানে বাসিন্দারা সারাবছর থাকেন)। যাওয়ার পথে কিন্তু অবিশ্বাস্য সুন্দর কি মনেস্ট্রি একবার অবশ্যই ঘুরে যাবেন।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 3/10 by Aninda De
পাহাড়ি উপত্যকা ভূমি জুড়ে প্রকৃতির মনোরম বিস্তৃতি (ছবি সংগৃহীত)

৪. মান্নার উপসাগর (গাল্ফ অফ মান্নার)

ভারতবর্ষের দক্ষিণ-পূর্বতম অঞ্চল এবং শ্রীলঙ্কার পশ্চিম তটের মধ্যে, ভারত মহাসাগরের লাক্ষাদ্বীপ সমুদ্রের মধ্যে বয়ে চলেছে এই অগভীর মান্নার উপসাগর। শুধু ভারতবর্ষ নয়, এই বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের একটি অংশ শ্রীলঙ্কার-ও অন্তর্গত। মান্নার উপসাগর ও দ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কার পালক উপসাগরের মধ্যে রয়েছে রামসেতু নামে পরিচিত ঐতিহাসিক চুনাপাথরের সেতু। প্রায় ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মান্নার উপসাগরের নদীতীর থেকে মুক্ত সংগ্রহ করে স্থানীয়রা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

কী কী করবেন : ঘুরে আসতে পারেন পরিত্যক্ত ধানুশকোড়ি গ্রাম থেকে। সুনামি ও হারিকেন থেকে বাঁচতে এখানকার বাসিন্দারা হঠাৎ করেই গ্রাম ছেড়ে চলে যান। মান্নার দ্বীপে গিয়ে ঐতিহাসিক রামসেতু ভ্রমণও করতে পারেন, দেখবেন কীভাবে এতদিনের মিথোলজি বা পুরাণ বাস্তব হয়ে উঠেছে চোখের সামনে।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 4/10 by Aninda De
মান্নার উপসাগরের মনোরম সৌন্দর্য (ছবি : সংগৃহীত)

৫. গ্রেট নিকোবর বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ

গ্রেট নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ৮৫% অংশ জুড়ে এই গ্রেট নিকোবর বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ। এই অঞ্চলের ১২ কিলোমিটার বেশি অংশ জুড়ে রয়েছে ফরেস্ট বাফার জ়োন, যা এখানকার বিরল জীববৈচিত্র রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি অপরিহার্য। পর্যটকদের এর ভিতরে প্রবেশের অনুমতি নেই, বাফার জ়োনের ভেতরে বসবাস করেন স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্যরা, যাদের জীবনযাত্রা তাদের শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যকে আজও সমান ভাবে ধরে রেখেছে। ক্যাম্পবেল 'বে জাতীয় উদ্যান' এবং 'গ্যালাথিয়া জাতীয় উদ্যান'-ও এই রিসার্ভের অন্তর্গত।

কী কী করবেন : গ্রেট নিকোবর দ্বীপ থেকে সহজেই আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে যেতে পারেন। রাধানগর বা হ্যাভলক বিচে পাবেন হরেক রকম ওয়াটার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করার সুযোগ। বারতাং দ্বীপে গিয়ে দেখে আসতে পারেন বিভিন্ন লাইমস্টোন গুহা, ছোট কেভিং অভিযানের ব্যবস্থাও এখানে করা হয়।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 5/10 by Aninda De
সাগরের উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য (ছবি : সংগৃহীত)

৬. নন্দা দেবী জাতীয় উদ্যান

উত্তরাখণ্ডের বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ নন্দা দেবী জাতীয় উদ্যানের কেন্দ্রস্থলে বিরাজমান সুউচ্চ নন্দা দেবী শৃঙ্গ (২৫,৬৪৬ ফিট)। এই উদ্যানের সবথেকে জনপ্রিয় অংশ, ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স, বর্তমানে একটি ঘোষিত ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার, স্নো-লেপার্ড, ব্রাউন বিয়ারের মতো বেশ কিছু বিপন্ন প্রাণিপ্রজাতির অভয়ারণ্যেও সন্ধান পাওয়া যাবে। নন্দা দেবী পর্বতমালার বিশাল পরিসরের মধ্যে রয়েছে প্রায় ২৫টি শৃঙ্গ, ফলে পর্বতারোহী ও ট্রেকারদের কাছে হয়ে উঠেছে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ডেস্টিনেশন।

কী কী করবেন : নদী পারাপার করা থেকে ভারতবর্ষের পবিত্রতম মন্দির ভ্রমণ, নন্দা দেবী জাতীয় উদ্যানের মধ্যে সমস্ত কিছু করার জন্যে অংশগ্রহণ করতে পারেন ১১ দিনের একটি ট্রেকের মাধ্যমে। তবে প্রয়োজন পড়লে এই কঠিন ট্রেকটি না করে শুধুমাত্র তীর্থস্থান গুলিও ঘুরে দেখতে পারেন।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 6/10 by Aninda De
ট্রেকিং পথের মনোরম উপত্যকা সৌন্দর্য (ছবি : সংগৃহীত)

৭. নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ

আগেই বলেছি, পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ছাড়া ভারতবর্ষের কোনও রায়ো রিসার্ভের তালিকা সম্পূর্ণ হতেই পারে না। নীলগিরি পর্বত এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অংশ মিলিয়ে, ৬০০০ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি স্থান জুড়ে রয়েছে সুবিশাল এই বায়োস্ফিয়ার। কেরালা, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকের মা বিভাজিত এই রিসার্ভ-ই সম্ভবত ভারতের সর্ববৃহৎ রিসার্ভ।

কী কী করবেন : এই রিসার্ভের প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে চলুন কর্ণাটক হতে তামিলনাড়ু পর্যন্ত রোড ট্রিপে। উটি বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং স্থানীয় চা-বাগান গুলোতে গেলে দেখতে পাবেন নীলগিরি ও পশ্চিমঘাটের উদ্ভিদবৈচিত্রের নিদর্শন। পাইকারা লেক এবং স্থানীয় আকর্ষণীয় জলপ্রপাত গুলিও প্রকৃতি প্রেমিকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে থাকে।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 7/10 by Aninda De
নীলগিরি পর্বতমালা থেকে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের দৃশ্য (ছবি : সংগৃহীত)

৮. নকরেক জাতীয় উদ্যান

মেঘালয়ার পশ্চিম গারো পর্বতমালা থেকে বেশ কিছুটা দূরে ভারতের বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের উত্তর-পূর্ব অংশে এটির অবস্থান। মেঘালয়া ও তার পার্শ্ববর্তি অঞ্চলের জীববৈচিত্রের অন্যতম হটস্পট হল নকরেক উদ্যান। নকরেকে এখনও দেখা মেলে ভারতবর্ষের অবশিষ্ট লাল প্যান্ডাদের। ভারতবর্ষের বাকি অংশে আজ রেড প্যান্ডারা দুঃখজনক ভাবে অবলুপ্ত। তবে ১৯৬০ সাল থেকে রেড প্যান্ডাদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সফলভাবে করে আসছে নকরেক। বেশ কিছু বাঘ ও এশিয়ান হাতিদের-ও দেখা মেলে এখানে।

কী কী করবেন : একদিনের ট্রেকে ঘুরে আসেন নকরেক জাতীয় উদ্যানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ থেকে। হাইকিং-এর মাধ্যমে আপনি যেতে পারেন রংবাদ দারে জলপ্রপাত-ও। বালপাকরাম জাতীয় উদ্যানের মধ্যে দিয়ে অনায়াসেই ঘুরে আসতে পারবেন সিজু গুহা থেকে। সুদীর্ঘ ও জলে-ভরা এই দুর্গম গুহাপথে যাত্রা মধ্যে দিয়ে নিতে পারেন অ্যাডভেঞ্চারের আস্বাদ।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 8/10 by Aninda De
পাথুরে এবং সবুজ উপত্যকাভূমি (ছবি : সংগৃহীত)

৯. পাঁচমারি বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ

মধ্য প্রদেশের সাতপুর পর্বতমালার মাঝে বিরাজ করছে পাঁচমারি বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ। ১৯৯০ সালে পাঁচমারি অঞ্চল, বরি অভয়ারণ্য এবং সাতপুরা জাতীয় উদ্যানকে ইউনেস্কো একসাথে বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হিসেবে ঘোষণা করে।

কী কী করবেন : কথিত আছে পাঁচমারি অভয়ারণ্যের পাঁচটি গুহাই হল মহাভারতের বিখ্যাত গুহা, যেখানে নির্বাসন কালে পান্ডবরা ছিলেন। এই পান্ডব গুহাসমূহ এই অঞ্চলের একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। তবে এই অঞ্চলের ইতিহাস কিন্তু পান্ডবদের থেকেও আরও অনেক প্রাচীন, মহাদেব পর্বতের বিভিন্ন গুহাগুলোতে যে কেভ পেন্টিং বা গুহাচিত্রের নিদর্শন পাওয়া যায়, তার আনুমানিক বয়স প্রায় ১০০০০ বছরেরও বেশি।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 9/10 by Aninda De
পাঁচমারি বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভের অংশ (ছবি : সংগৃহীত)

১০ . সুন্দরবন

সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং মিঠে জলের জলাভূমিকে ভারতবর্ষ তথা সমগ্র বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময় বলে গণ্য করা হয়, কারণ এখানকার বিশেষ ভৌগোলিক আবহাওয়া এবং বাস্তুমণ্ডলের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠেছে অনন্যসুন্দর উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল। ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশের সুন্দরবন অঞ্চল একত্রে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ টাইডাল ম্যানগ্রোভ অরণ্য। প্রায় ১০০০০ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গা জুড়ে এই অঞ্চলের বিস্তৃতি, এই অংশেই সন্ধান মিলবে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের।

কী কী করবেন : সুন্দরবনের ভূমিদেবী বনবিবির মন্দির এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী বনবিবির আশীর্বাদ সঙ্গে থাকলে, বাঘের হাত থেকেও প্রাণ বেঁচে যাবে। সুন্দরবনের ইতিহাস বিপুল এবং চিত্তাকর্ষক, কিন্তু প্রতিবছরই বন্যার কারণে এই অঞ্চলের বিশেষ ক্ষতি হয়, কাজেই ইতিহাস বলার মতো লোকেদের বড়োই অভাব রয়েছে। সেই ইতিহাসের নিদর্শন চাক্ষুস দেখতে চাইলে যেতে পারেন ৪০০ বছর পুরনো নেতিধোপানি মন্দিরে।

Photo of ভারতবর্ষের ১০ টি বিখ্যাত বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ট্যুরিস্ট স্পট 10/10 by Aninda De
সুন্দরবনের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার (ছবি : সংগৃহীত)

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যাবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত/অনুলিখিত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads