ভারতের মানুষজন যে কোনও উৎসব কিংবা আনন্দকে বিশেষভাবে উপভোগ করার জন্য লেট নাইট পার্টি এবং ড্রিঙ্কস -এর আয়োজন করে থাকেন। এমনকি ভ্রমণের ক্ষেত্রে ও ড্রিঙ্কস এর আয়োজন না হলে সম্পূর্ণ ভ্রমণের উন্মাদনাটাই অধরা থেকে যায়। ভারতের প্রায় সর্বত্রই মদ্যপান আইনানুগ হলেও, গুজরাট রাজ্যটি কিন্তু মদ্যপানের বিরোধী।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই রাজ্যে ১৯৬০ সাল থেকেই মদ্যপান নিষিদ্ধ। কিন্ত এই বিধিনিষেধের কারণ কী? এই রাজ্যটি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর আদর্শকে নিষ্ঠাভরে পালন করে। গান্ধীজি মনে করতেন আমাদের সমাজে সমস্যার মূল কারণ হল মদ্যপান। আর এই রাজ্যটি গান্ধীজির মতবাদে বিশ্বাসী। আমরা সকলেই জানি গুজরাট রাজ্যটি গান্ধীজির জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত।
কী ভাবছেন, তাহলে গুজরাট রাজ্যটি কীভাবে পর্যটনের উপযোগী?
পর্যটকদের জন্য এই রাজ্যে শর্তসাপেক্ষে মদ্যপানের অনুমতি রয়েছে। প্রথমত এই রাজ্যে মদ্যপানের জন্য legal liquor license অর্থাৎ মদ্যপানের জন্য বৈধ লাইসেন্স - এর প্রয়োজন। তবে এই লাইসেন্স -এর বিনিময়ে ৪টি পার্মিট যেমন - ট্যুরিস্ট পার্মিট, ভিসিটর পার্মিট, হেলথ পার্মিট, এবং গ্রুপ পার্মিটের প্রয়োজন হবে।
কীভাবে লিগাল লিকার লাইসেন্স -এর জন্য আবেদন করবেন?
এই লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আপনি অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই আবেদন করতে পারেন।
অফলাইনে আবেদনের পদ্ধতি - অফলাইনে আবেদন করতে চাইলে গুজরাট সরকারের অফিসে গিয়ে আপনাকে দেখা করে আবেদন করতে হবে। তবে অফলাইনের তুলনায় অনলাইনে আবেদন করাই সঠিক কাজ হবে।
অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি - প্রথমে গভর্নমেন্ট অফ গুজরাট এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের ই-পার্মিট ( e - permit )পেজে আপনার প্রয়োজনীয় নথিগুলি আপলোড করুন। এক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট, ট্রেন বা বিমানের টিকিট, হোটেলের বিল / আপনি যদি গুজরাটে কোনও পরিচিতের বাড়িতে থাকেন, সেক্ষেত্রে সেই বাড়ির ঠিকানা সহ আপনার পাসপোর্ট সাইজ ফটো আপলোড করে সাবমিট করুন। লাইসেন্স পাওয়ার পর বৈধ লিকারের বিপণী থেকে আপনি আইনতগতভাবে ওয়াইন কিনতে পারেন ।
এখন প্রশ্ন হল গুজরাটে বৈধ লিকার শপ কীভাবে খুঁজে পাবেন?
গুজরাটে রাজপথে বা অলিগলিতে কোনও রকম ওয়াইন শপ নেই। তাই গুজরাট সরকার কর্তৃপক্ষের অনুমতি(লাইসেন্স) প্রাপ্তির পরই আপনি সুরা বা মদ কেনার অনুমতি পাবেন। বৈধ লিকার বিপণীর সন্ধান করলে deshgujarat.com এই ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন।
গুজরাটে মদ এবং মদ্যপান সম্পর্কে কিছু নিষেধাজ্ঞা
১.যেহেতু এই রাজ্যে মদ্যপান আইনবিরুদ্ধ কাজ। আইনের বাইরে গিয়ে যদি কোনও মানুষ মদ বিক্রি করেন তাহলে ২০০৯ সালের গুজরাট অ্যামেন্ডমেন্ট-এর ধারা ৬৫ এ অনুযায়ী সেই বিক্রেতার মৃত্যুদণ্ডও পর্যন্ত হতে পারে।
২. পর্যটকরা ও যদি গুজরাট সরকারের বিনা অনুমতিতে মদ বা সুরা বহন করে গুজরাটে নিয়ে আসেন তাহলেও সেটি গুরুতর অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হবে ।
৩. এমনকি গুজরাটের ৫ষ্টার, ৭ষ্টার হোটেল গুলিতেও সরকারি লাইসেন্স ছাড়া মদ্যপানের অনুমতি নেই।
প্রকৃতপক্ষে মদ এবং মদ্যপান গুজরাটে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হলেও, পর্যটকরা সরকারি লাইসেন্স-এর সহযোগিতায় নির্ভয়ে এবং নির্দ্বিধায় মদ্যপান করতে পারেন।