আমাদের সকলেই রোড ট্রিপ করতে বেশ পছন্দ করি। ট্যাক্সিতে কিংবা বাসে বসে প্রকৃতি দর্শনের মধ্যে আলাদাই একটা অনুভূতি রয়েছে। সড়কপথে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাত্রার জন্য এবং সময় উপযোগী হওয়ার জন্য আমরা টানেলের শরণাপন্ন হই।
এই টানেলে গাড়ি চালানোর মধ্যে একটা থ্রিলিং ব্যাপার রয়েছে। টানেলের মুখ্য বিশেষত্ব হল এর সাহায্যে আজ প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিও ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেছে।
১. জম্মু কাশ্মীরের ডঃ শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি রোড টানেল
ডঃ শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি রোড টানেলটি ভারতের দীর্ঘতম রোড টানেল হিসেবে পরিচিত। এই টানেলটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করা হয়। চেনাই থেকে ন্যাশ্রী পর্যন্ত বিস্তৃত এই টানেলটি দৈর্ঘ্য প্রায় ৯.৩৪ কিমি। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। এই টানেলের কারণে মাত্র ২ঘণ্টার মধ্যেই জম্মু থেকে শ্রীনগরের পৌঁছে যাওয়ার যায়।
২. হিমাচল প্রদেশের অটল রোড টানেল
ভারতের উচ্চতম টানেল হল অটল রোড টানেল। এই টানেলটি আগে রোটাং টানেল হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তী কালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর নাম অনুসারে পরিচিতি পায়। এই টানেলের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে এবং ২০২০ সালের ৩ অক্টোবরে চালু করা হয়। এই টানেল নির্মাণের মুখ্য উদ্দেশ্যে ছিল মানালি এবং কেলং-এর মধ্যে দূরত্ব কম করা। এই টানেলটি রোটাং পাসের ঠিক নিচে অবস্থিত। এই টানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮.৮ কিমি। এখানে থেকে আপনি পীর পিঞ্জল রেঞ্জ - এর অসাধারণ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারেন।
৩. জম্মু কাশ্মীরের বানিহাল কাজিগুন্ড রোড
বানিহাল কাজিগুন্ড রোড টানেলটিকে নব্য নির্মায়মান টানেলের আখ্যা দেওয়া যায়। জম্মু কাশ্মীরে অবস্থিত এই টানেলটির নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। গত ৪ঠা অগাস্ট ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী নীতিন গডকরি এই টানেলের শুভ উদ্বোধন করেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই টানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮.৫ মিটার। এই টানেল নির্মাণের জন্য বানিহাল থেকে কাজিগুন্ড এর দূরত্ব অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই টানেলটি ১২৪ টি ফ্যান, ২৩৪ টি CCTV ক্যামেরা, এক্সহস্ট সিস্টেম এবং ফায়ারফাইটিং সিস্টেমের সহযোগে নির্মিত।
৪. জম্মু কাশ্মীরের জোজি লা -পাস টানেল
প্রায় ১৪.২ কিমি টানেলটির নির্মাণ কার্য শুরু হয় ২০১৮ সালে এবং ২০২২ সালে এই টানেলের কার্য সম্পন্ন হবে। মনে করা হচ্ছে এই টানেলটি এশিয়ার দীর্ঘতম দ্বি-মুখী টানেল হিসেবে পরিচিতি পাবে। এই টানেলের সাহায্যে ৩ ঘণ্টার জার্নি ১৫ মিনিটে সম্পন্ন করা যাবে । এই টানেলের সাহায্যে কার্গিল এবং শ্রীনগরের দূরত্ব অনেকটাই হ্রাস পাবে।
৫. অরুণাচল প্রদেশের সেলা টানেল
সেলা টানেলটির ও নির্মাণকার্য সম্পন্ন হবে ২০২২ সাল নাগাদ। প্রায় ১২.০৪ কিমি দীর্ঘ এই টানেলটি অরুণাচল প্রদেশের সেলা পাসের মধ্য দিয়ে নির্মাণ করা হবে। এই টানেলের সাহায্যে দিরাং এবং তাওয়াং এর দূরত্ব অনেকখানি কম হবে।
৬. হিমাচল প্রদেশের অট টানেল
২০০৬ সালের অট টানেলটিকে এশিয়ার দীর্ঘতম টানেলের আখ্যায় ভূষিত করা যায় । এর সাহায্যে কুলু থেকে মানালির যাত্রার দূরত্ব হ্রাস পেয়েছে। এই টানেলটি লার্জি ড্যামের নিকটে অবস্থিত । এই টানেলে ফায়ার ফাইটার, CCTV ক্যামেরা ও রয়েছে।
৭. রাজস্থানের ঘাট কী গুনি টানেল
ঘাট কী গুনি টানেলের সাহায্যে জয়পুর থেকে আগ্রা যাত্রার সময় অনেকখানি কম হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২.৮ কিমি দীর্ঘ টানেলের সাহায্যে একটা সুন্দর দৃশ্য এর সাক্ষী থাকতে পারেন। ঝলনা হিলস থেকে রাজকীয় প্যালেসগুলির অবস্থান সমস্ত পর্যটককে মুগ্ধ করে ।
৮. মহারাষ্ট্রের ভাটান টানেল
ভাটান টানেলটি ২০০০ সালে থেকে চালু হয়। প্রায় ১.১৭ কিমি দৈর্ঘ্য যুক্ত এই টানেলটি মুম্বই -পুনে এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত বিস্তৃত। এই টানেল নির্মাণের মুখ্য উদ্দেশ্যে হল - মুম্বই এবং পুনে শহরের মধ্যে ব্যবধান কমানো। এখান থেকে সহযেদ্রি রেঞ্জ এর সুন্দর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারেন।
৯. জম্মু কাশ্মীরের যে মরহ টানেল
যে মরহ টানেলটির নির্মাণ কার্য ২০২১ সালেই সম্পন্ন হবে। প্রায় ৬.৫ কিমি দীর্ঘ এই টানেলটি শ্রীনগর, কার্গিল এবং লাদাখ শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। এই টানেলটির সাহায্যে সারাবছরই যাতায়াত করা সম্ভব হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৬৩৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই টানেলটি জম্মু কাশ্মীরের গান্ডেরবাল জেলার গাঙ্গির অঞ্চলে অবস্থিত।
১০. কেরালার কুঠিরান টানেল
কেরালার কুঠিরান টানেলটি দক্ষিণ ভারতের ৬টি দীর্ঘতম টানেলের মধ্যে অন্যতম। প্রায় ১কিমি দীর্ঘ এই অঞ্চলটি ৪৪ জাতীয় সড়কে অবস্থিত। এই টানেলের জন্য কোচি থেকে কোয়েম্বাটুর শহরের মধ্যে কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া সম্ভবপর হবে। পালাক্কাদ থ্রিসুরগামী টানেলটি ২০২১ সালের জুলাই মাসে চালু করা হয়েছে। এই টানেলের সাহায্যে ভবিষ্যতে তামিলনাড়ু এবং কেরালা রাজ্যের মধ্যে ও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে।
ভারতের এই বিখ্যাত টানেলগুলির সাহায্যে পর্যটকরা একটা সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পারেন । শুধু তাই নয় এই টানেলের সাহায্যে পর্যটকদের ভ্রমণ দ্রুত এবং সহজতম হয়ে উঠেছে।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)