মহারাষ্ট্রের পুনে জেলাতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৫১৪ ফুট উচ্চতায় সহ্যাদ্রি পর্বতমালার চূড়ায় মুরুম্বাদেবী ডঙ্গার নামে একটি দুর্গ অবস্থান করছে। বর্তমানে যা রাজগড় দুর্গ হিসেবে জনপ্রিয়। আজও এই জায়গায় প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, জলাশয় এবং গুহা প্রভৃতি দেখতে পাওয়া যায়। জানা যায়, রাজগড় দুর্গের ঠিক পাশে অবস্থিত টর্ণা নামক একটি প্রাচীন দুর্গ থেকে খুঁজে পাওয়া মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী দিয়ে রাজগড় কেল্লাটি নির্মাণ করা হয়।
কেল্লার ইতিহাস-
রাজগড় কেল্লার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের জীবন কাহিনি। ১৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী মহারাজ এই দুর্গটি দখল করেন। তখন থেকে এই মারাঠা মহারাজ প্রায় ২৬ বছর ধরে কেল্লায় রাজত্ব করেন। তাই নয়, ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দে ২৪শে ফেব্রুয়ারি ছত্রপতি শিবাজীর পুত্র রাজারামের-ও জন্ম হয় এই কেল্লায়। এছাড়া ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী-পত্নী সাঁইবাঈ-এর মৃত্যু, আগ্রা থেকে মহারাজের প্রত্যাবর্তন প্রভৃতির সমস্ত ঘটনায় সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই কেল্লা। প্রায় ১০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা ব্যয় করে কেল্লাটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।
১৬৬৫ সালে মুঘল সেনাপতি প্রথম জয় সিংহের সঙ্গে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের পুরন্দর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী শিবাজী মহারাজ যে ১২টি কেল্লার দায়িত্ব নিয়েছেন রাজগড় তার মধ্যে অন্যতম। ১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী মহারাজকে হত্যা করে মুঘলরা কেল্লা দখল করেন। রাজগড় কেল্লা বহুবার হস্তান্তরের পর অবশেষে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশদের দখলে চলে আসে।
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্ব-
• বর্ষাকালে দুর্গটি সৌন্দর্য আরও দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। তাই বেশিরভাগ পর্যটকরা বর্ষাকালে এখানে ঘুরতে আসেন।
• কখনও কখনও ঘুরতে এসে তারা এই দুর্গে রাত্রিযাপন করেন। কারণ একদিনে দুর্গটি ঘুরে দেখা প্রায় অসম্ভব।
• দুর্গের ভিতর অবস্থিত পদ্মাবতী মন্দিরে মোটামুটি ৫০ জন মানুষ অনায়াসে থাকতে পারেন।
• কেল্লায় জলের কোন অভাব নেই। কারণ সারা বছর বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা হয়।
বিশেষ আকর্ষণ-
রাজগড় কেল্লা থেকে সর্ব ঋতুতে সর্বোচ্চ উচ্চতা সম্পন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এছাড়াও এই জায়গাটিতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের চাক্ষুষ দর্শন মেলে।
রাজগড় কেল্লার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হল ট্রেকিং। এই দুর্গম পথ পেরিয়ে বহু পর্যটক কখনও হেঁটে আবার কখনও বাইকে করে দুর্গে এসে পৌঁছান। আর এই ট্রেকিং সবথেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায় বর্ষাকালে।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(Tripoto বাংলা এখন Telegram-এও ফলো করুন এই লিঙ্কে https://t.me/tripotobangla)