আচ্ছা বলুন তো কোনও উপন্যাস পড়তে গিয়ে বা সিনেমা দেখতে গিয়ে আপনি হঠাৎ করে কোনও অজানা ভ্রমণ ডেস্টিনেশনের খোঁজ পেয়েছেন? কিছু দিন আগে একটি উপন্যাসের মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডের একটি শহরের খোঁজ পেলাম। আমার মনে হয় দেবভূমি উত্তরাখণ্ড রাজ্যটি ভারতের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণস্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এমন সুন্দর শহরকে আমার ভ্রমণতালিকাগুলির মধ্যে জুড়ে নিলাম।
চলুন এই শহরটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত এই শহরের নাম হল পিঠরাগড়।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যটা অনেকটা রূপকথার রাজ্যের মতো। এতদিন আমি ভাবতাম হারশীল ভ্যালি, ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স - এ ট্রেক, ল্যান্ডর বাজার দর্শন কিংবা রাস্কিন বন্ডের লেখনীগুলির বাস্তব প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়ায় নামই হল উত্তরাখণ্ড।
কিন্তু পিঠরাগড় সম্পর্কে জানার পর ভাবছি উত্তরাখণ্ডে আরও কতই না গুপ্তভ্রমণ স্থান রয়েছে। কিন্তু এই শহরের প্রধান দর্শনীয় স্থান হল 'গোর্খা কেল্লা ' বা 'লন্ডন ফোর্ট '। এককথায় বলতে গেলে পিঠরাগড়ের সমস্ত সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে এই কেল্লায়।
এই চোখ ধাঁধানো কেল্লাটি মূল শহর থেকে একটু দূরে। ১৭০০ সালে গোর্খাবাহিনী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই এই কেল্লা নির্মাণ করা হয়। ব্রিটিশ শাসনকালীন সময়ে এই কেল্লার নামকরণ করা হয় লন্ডন ফোর্ট হিসেবে। তবে বর্তমানে এটি পিঠরাগড় ফোর্ট নামেই পরিচিত। ব্যক্তিগতভাবে আমার কেল্লা বা প্যালেস দর্শন তেমন পছন্দ না হলেও, পিঠরাগড় ফোর্টটি কিন্তু আমার ফোর্ট সম্পর্কে ধারণাটির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এই কেল্লা দর্শনের পর আমি সত্যিই মুগ্ধ।
একদা রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানকে রাই পিঠরা নামে অভিহিত করা হতো এবং সেখান থেকেই এই শহরের নাম পিঠরাগড়। এছাড়া এই শহরটি নেপাল এবং চিন সীমান্তে অবস্থিত, সেই কারণে গোর্খা সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। এখান থেকে মুক্তেশ্বর, কৌশানি ইত্যাদি স্থানগুলি দর্শন করে আসা যায়। প্রাচীন হিমালয়ান শহরের ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনাকে আসতেই হবে পিঠরাগড়।
কীভাবে যাবেন?
বিমানে - নিকটতম বিমানবন্দর হল পান্থনগর , এই শহর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ২০০ কিমি।
ট্রেনে - নিকটতম রেল স্টেশন হল - টনকপুর। পিঠরাগড় থেকে টনকপুর রেল স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিমি।
সড়কপথে - নৈনিতাল থেকে আলমোড়া হয়ে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে পিঠরাগড় পৌঁছে যাওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক। দিল্লি থেকে এই শহরের দূরত্ব প্রায় ৪৫০ কিমি।