ঐতিহ্যবাহী ভারত যেমন ঐতিহাসিকভাবে জনপ্রিয় ঠিক তেমনি সাংস্কৃতিকভাবে ও জনপ্রিয়তার স্থান করে নিয়েছে । ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিকে সংস্কৃতির পীঠস্থান বললে খুব ভুল হবে না । তবে ঐতিহ্যবাহী পটচিত্র শিল্পের জন্য ওড়িশার হেরিটেজ ক্র্যাফট ভিলেজ বলতে রঘুরাজপুর বিশেষভাবে পরিচিত ।
অবস্থান
রঘুরাজপুর গ্রামটি ওড়িশার বিখ্যাত তীর্থক্ষেত্র পুরীর শহর থেকে ১৪ কিমি অদূরে ভার্গবি নদীর দক্ষিণে অবস্থিত ।এছাড়াও ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর শহর থেকে ভায়া চন্দনপুর হয়ে ও রঘুরাজপুর পৌঁছনো যায় ।
রঘুরাজপুর শহর সম্পর্কে কিছু তথ্য
• ১৯৯৮ সালের এই গ্রামের শিল্প সংক্রান্ত একটি প্রজেক্ট -এর সূচনা করেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ (INTACH) । প্রায় দুই বছরের রিসার্চ -এর পর ২০০০ সালে এই গ্রামটি একটি হেরিটেজ ক্র্যাফট গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পায় ।
• বর্তমানে এই গ্রামটিতে মোট ১২০টি বাড়ি সহযোগে গোটা রঘুরাজপুর গ্রামে পরিণত হয়েছে ।
• সমগ্র গ্ৰাম জুড়েই পটচিত্র ছাড়াও মুখোশ, পাথরের মূর্তি, কাঠের খেলনা নির্মাণ এবং নির্মাণ প্রক্রিয়া দর্শনের সুযোগ থাকে ।
রঘুরাজপুরের দর্শনীয় স্থান
রঘুরাজপুর গ্রামটিতে গ্রাম্য পরিবেশকে উপভোগ করা ছাড়াও এই গ্রামের হিন্দু মন্দিরগুলি যেমন - ভুয়াশুনি, রাধামোহন, গোপীনাথ, লক্ষীনারায়ণ, গৌরাঙ্গ দেবের মন্দির ভ্রমণ করে নিতে পারেন ।তবে এই গ্রামের জনপ্রিয়তা পটচিত্রের জন্যই । তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক পটচিত্র কী?
পটচিত্র কী?
রঘুরাজপুর গ্রামের মুখ্য শিল্প হলো - পটচিত্র । এই পটচিত্র শিল্পের আধার হলো রথযাত্রা উৎসব । আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই পটচিত্র প্রভু জগন্নাথদেবকে উৎসর্গ করেই অঙ্কন করা হয় ।
পটচিত্রের বৈশিষ্ট্য
সাধারণত পটচিত্র কোনও কাপড়ের উপর বা শুকনো তালপাতার উপর অঙ্কন করা হয়। অঙ্কনের ক্ষেত্রে প্রথমে চক এবং আঠার মিশ্রণে এক ধরণের রং নির্মাণ করে আঁকা হয় । এক্ষেত্রে পৌরাণিক দেব-দেবীর মূর্তি, গাছ-পালা, ফুল, পশু-পাখিই অঙ্কনরীতির প্রধান বিষয়বস্তু হয়ে থাকে। অনেক সময় ওড়িশার বিখ্যাত সম্বলপুরী শাড়িতেও পটচিত্র শিল্প অঙ্কন করা থাকে ।
কীভাবে যাবেন রঘুরাজপুর?
হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপে পৌঁছে যান ভুবনেশ্বর কিংবা পুরী সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান গন্তব্যে ।
ভারতের এই লৌকিক সংস্কৃতি দ্বারা আপনি কতটা মুগ্ধ হলেন আমাদের লিখে জানাতে কিন্তু ভুলবেন না ।