নাগাল্যান্ডে এই উপজাতির একই ঘরে দুই দেশের সীমান্তরেখা...

Tripoto
Photo of নাগাল্যান্ডে এই উপজাতির একই ঘরে দুই দেশের সীমান্তরেখা... 1/3 by Aninda De
পাহাড়ে ঘেরা শান্ত-স্নিগ্ধ প্রকৃতির রেখা (ছবি সংগৃহীত)

নাগাল্যান্ডের ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠা মন জেলার রয়েছে এক অন্য আকর্ষণ। এই জেলার বিভিন্ন গ্রামে, যার মধ্যে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য লংওয়া গ্রাম, খুঁজে পাবেন কনিয়াক জনজাতির মানুষজনদের। তবে কনিয়াক জনজাতির মানুষজনদের মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাঁরা কিন্তু শুধুমাত্র ভারতবর্ষের নাগরিক তা নন। তাঁদের কাছে রয়েছে ভারতবর্ষ এবং মায়ানমারের দ্বৈত নাগরিকত্ব বা ডুয়াল সিটিজেনশিপ।

কনিয়াক জনজাতির বৈশিষ্ট্য

Photo of নাগাল্যান্ডে এই উপজাতির একই ঘরে দুই দেশের সীমান্তরেখা... 2/3 by Aninda De
উপজাতি গোষ্ঠীর আদিম পরিচিতি (ছবি সংগৃহীত)

ডিমাপুর থেকে প্রায় অর্ধেক দিন বা নাগাল্যান্ডের সীমানা থেকে ঘণ্টা চারেকের ড্রাইভিং দূরত্বে রয়েছে এই মন জেলা, আর মন জেলার প্রধান মন শহর থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লংওয়া গ্রাম। নাগাল্যান্ড অর্থাৎ ভারতের ভিতরে কনিয়াক জনজাতির মানুষদের সেরকম দেখা না গেলেও, মায়ানমার সীমানা পেরিয়েই অবস্থিত প্রায় ২৭টি কনিয়াক গ্রাম। উল্লেখযোগ্য, এই গ্রামের ভিতর দিয়েই আবার চলে গেছে ভারত এবং মায়ানমারের বর্ডার বা সীমানা। সেই সীমানা দ্বিখণ্ডিত করেছে কনিয়াক জনজাতির জননেতার নিজস্ব বাড়ি। বাড়ির একদিক রয়েছে ভারতে, অপরদিক অন্যদেশে।

অর্থাৎ একই বাড়ির ভিতরে রয়েছে দুই দেশের মাটি। হয়তো কারও রান্নাঘর ভারতবর্ষে, কিন্তু তাঁর অন্দরমহল রয়েছে প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারের মাটিতে। তবে এখানকার বাসিন্দাদের ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে যাওয়া আসার জন্য ভিসার প্রয়োজন হয় না। বেশ কিছু এই গ্রামের মানুষ মায়ানমারের বিভিন্ন স্থানীয় দোকানে বা মায়ানমার সৈন্যবাহিনির সাথেও কর্মরত। মিলে মিশে দুই দেশের মাঝে এইভাবেই দিন কাটাচ্ছেন কনিয়াক গোষ্ঠীর মানুষজন।

মন রাজ্যের সংস্কৃতি

মন যাওয়ার সবথেকে ভালো সময় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে, যখন অনুষ্ঠিত হয় বাৎসরিক আওলিয়ং উৎসব। এই সময় গ্রামের অধিবাসীরা তাদের সাংস্কৃতিক পোশাক আশাক এবং গয়নাগাটি পরিধান করেন। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম বা জেলা থেকেও ছুটে আসেন বহু মানুষ, সকলে মিলে একসাথে আনন্দউৎসব উদযাপন করে কাটান উৎসবের এই কয়েকটি দিন।

Photo of নাগাল্যান্ডে এই উপজাতির একই ঘরে দুই দেশের সীমান্তরেখা... 3/3 by Aninda De
মন রাজ্যের সাংস্কৃতিক পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবে (ছবি সংগৃহীত)

মন জেলায় বেড়াতে যাওয়ার অন্যতম আকর্ষণ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা শান্তিপূর্ণ পাহাড়ি আবহাওয়াই শুধু নয়, এখানের বিভিন্ন জনজাতির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য কে কাছ থেকে দেখার সুযোগ অন্য কোথাও পাবেন না। বহু বৃদ্ধ অধিবাসীদের সারা মুখে উল্কি আঁকা দেখতে পাবেন, দেখতে পাবেন তাদের গলায় ঝুলছে এমন কিছু নেকলেস, যার সঙ্গে আটকে রয়েছে কতগুলি ব্রোঞ্জ বা অন্য ধাতুর তৈরি মানুষের মাথার আকৃতি। আসলে যতগুলি এরকম মাথা দেখবেন, বৃদ্ধ মানুষটি নিজের জীবনকালে অতগুলি মানুষকে হত্যা করেছেন। শিউরে ওঠার মতো ব্যাপার হলেও, এই আদিম জনসমাজে এটাই স্বাভাবিক।

মনে কোথায় থাকবেন

থাকতে পারেন হেলসা কটেজ বা হেলসা রিসোর্টে, উভয় জায়গাতেই রাত কাটানোর বন্দোবস্ত আছে। আগে থেকে জানালে করা হয় খাওয়ার ব্যবস্থাও।

ইনার লাইন পারমিট

নাগাল্যান্ডে যেতে চাইলে ইনার লাইন পারমিট থাকা বাধ্যতামূলক। যথাসময়ে এই পারমিটটি না পেলে আপনাকে নাগাল্যান্ডে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

করোনা বিষয়ক নিয়মাবলী

কোভিড ১৯ এর প্রকোপের কারণে ভ্রমণ নির্দেশাবলী পরিবর্তনশীল। মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভ্যাক্সিন গ্রহণ করুন। ভ্রমণ করার আগে মেঘালয়ের তৎকালীন এন্ট্রি রুলসগুলি অবশ্যই জেনে নিন।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(Tripoto বাংলা এখন Telegram-এও ফলো করুন এই লিঙ্কে https://t.me/tripotobangla)

Further Reads