উত্তর- পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যটিকে রূপকথার রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত করলে কোনও ভুল হবে না। ডবল ডেকার ব্রিজ সহ মাওলিংলং গ্রাম এই রাজ্যটিকে সমৃদ্ধ করছে। তবে মেঘালয় ভ্রমণের ইতি কিন্তু এখানেই নয়। বর্তমানে ইউনাইটেড নেশস ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন (UNWTO) কর্তৃপক্ষ মেঘালয়ের কংথঙ্গ গ্রামটিকে শ্রেষ্ঠ ভ্রমণসুলভ গ্রামের শিরোপায় ভূষিত করেছেন ।
গত ৮ই সেপ্টেম্বর মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনর্ড কে সংমা টুইট করে ভারতবাসীদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন - UNWTO কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে' শ্রেষ্ঠ ভ্রমণসুলভ গ্রাম ' নামক একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় মেঘালয়ের কংথঙ্গ গ্রামটি জয়ী হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি আমাদের দেশ থেকে কংথঙ্গ ছাড়াও আরও দুইটি গ্রাম এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল ।
কংথঙ্গ গ্রাম
প্রকৃতপক্ষে কংথঙ্গ গ্রামটি শিলং শহরের এর ৬০ কিমি দক্ষিণে খাট-আর -স্নগ অঞ্চলে অবস্থিত। এই গ্রামটি উত্তর-পূর্ব ভারতের গ্রাম্য প্রকৃতির একটা অসামান্য দৃশ্যর সাক্ষী থাকা যায়।
কেন এই গ্রামটিকে শ্রেষ্ঠ ভ্রমণসুলভ গ্রাম হিসেবে বেছে নিলেন UNWTO?
UNWTO এর কর্তৃপক্ষের মতে এই প্রতিযোগিতার জন্য আমরা এমন এক গ্রামের সন্ধান করছিলাম, যেটি ভ্রমণের জন্য সুরক্ষিত হবে এবং পর্যটকরা গ্রামের ঐতিহ্য, রীতিনীতি সম্পর্কে বিশদে জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। এছাড়াও UNWTO এর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের মুখ্য উদ্দেশ্যে ছিল গ্রাম্য অঞ্চলের উন্নতির কারণে ঠিক কোন গ্রাম পর্যটনের জন্য আধুনিকতা এবং অভিনবত্বকে গুরুত্ব দিয়েছেন সেই বিষয়ে নজর রাখা । কংথঙ্গ গ্রামটি শিক্ষা জগতের ক্ষেত্রে বেশ উন্নত, লিঙ্গ বৈষম্যতা, সাংস্কৃতিক ভেদাভেদ এখানে নেই। গ্ৰামটি নিজেদের ঐতিহ্যকে সম্মান করে, এখানকার খাবার ও বেশ সুস্বাদু। এই সমস্ত কিছুর জন্যই কংথঙ্গকে শ্রেষ্ঠ ভ্রমসুলভ গ্রাম হিসেবে বেছে নিয়েছেন UNWTO।
কংথঙ্গ গ্রামের বৈশিষ্ট্য
এই গ্রামটি নিজেদের ঐতিহ্য এবং রীতিনীতিকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চায়। এই প্রসঙ্গে একটা ঘটনার উল্লেখ করতেই হয়। এই গ্ৰামে কোনও শিশু জন্মগ্রহণ করলে গ্রামবাসীরা সেই সদ্যজাত শিশুকে একটি সুর উপহার দেন। সেই সুরটি কেবলমাত্র সেই নির্দিষ্ট শিশুটির জন্য ব্যবহারযোগ্য। এই কারণেই কংথঙ্গ গ্রামকে হুইস্টলিং ভিলেজ হিসেবে ও চিহ্নিত করা হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডলের এই গ্রামকে শুভেচ্ছা প্রদান - অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং রাজ্য সভার সদস্য রাকেশ সিনহা ২০১৯ সালে কংথঙ্গ গ্রামমে দত্তক নেন। সেই জন্য সীতারমণ এবং রাকেশ সিনহা এই গ্রামকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়াও আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্যান্য মন্ত্রী মন্ডলী মেঘালয় তথা কংথঙ্গকে বিশেষভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আশা করা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই কংথঙ্গ গ্রামটি পর্যটকদের কাছে মেঘালয়ে ভ্রমণের নয়া সংযোজন হয়ে উঠবে।