
পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর জেলার কিছু গ্রামে আয়োজিত হয় এক বিশেষ নৃত্য। একে বলা হয় গোমিরা। এই নাচের এক বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। এই নাচের মাধ্যমে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করা হয় যাতে তিনি অশুভ শক্তি সরিয়ে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন।
এই নাচের উৎস

এই নাচ করার সময় মুখোশ পরা হয়। তাই একে মুখোশ নাচও বলা যেতে পারে। মূলত গ্রাম চণ্ডী এই দুই শব্দ থেকে গোমিরা শব্দের জন্ম হয়েছে। গ্রাম চণ্ডী হলেন এক স্থানীয় দেবী যিনি গ্রামকে রক্ষা করেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে গামার গাছের নাম থেকে এই নাচের নাম হয়েছে। গামার গাছ দিয়েই এই নাচের মুখোশ তৈরি হয়।
তবে কবে এবং কীভাবে এই নাচের শুরু হল তার কোনও ঐতিহাসিক দলিল পাওয়া যায়না। সম্ভবত কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে এই নাচের ইতিহাস। মুখোশ এই নাচের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
কীভাবে হয় এই নাচ

এই নাচে আদি শক্তির আরাধনা করা হয়। আবাহন করা হয় শিবেরও। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ থেকে শুরু করে আষাঢ় মাস পর্যন্ত এই নাচ হয়। কারণ এই সময় গ্রামের মানুষরা ঘরে ফসল তোলেন। আবার যখন আম তোলার সময় আসে তখন আমাত কালী পুজো করার সময় এই নাচ করা হয়। শ্মশান কালীর পুজোর সময়ও এই নাচ করা হয়।
আসলে এই নাচের প্রকৃত কোনও সময় নেই। গ্রামে বিভিন্ন নাচের দল আছে যারা ভিন্ন সময়ে এই নাচ করেন। এই নাচ দুই ভাগে বিভক্ত। গোমিরা নাচ রাম বনবাস। গোমিরা নাচ হচ্ছে পুরনো ধারার নাচ। যেখানে মূল চরিত্রে থাকেন বুড়ো-বুড়ি, শ্মশান কালী, মসান কালী, ডাকিনী, বাঘ ও নৃসিংহ অবতার। রাম বনবাসে রামের কাহিনি শোনানো হয়। এই গানের জন্য কোনও গান বা কবিতা থাকে না। ঢাকের তালে তালে নাচের মাধ্যমে পুরোটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
মনে করা হয় যে যে শিল্পীরা এই নাচ করেন তাঁদের মাঝেমধ্যে ভর হয়। তখন গোমিরা ঘট থেকে শান্তির জল ছিটিয়ে শান্ত করা হয় তাঁদের।
কারা করেন এই নাচ?

এই নাচ করেন গ্রামের পুরুষরা। এরাই মুখোশের মাধ্যমে নারী ও অন্যান্য জন্তু সাজেন। এমনি সময় এই নৃত্যশিল্পীরা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।
কারা তৈরি করেন নাচের মুখোশ

গ্রামের মানুষই তৈরি করেন এই মুখোশ। সাধারণত কোনও দেব দেবীর কাছে মানত করা থাকলে সেটা যদি পূর্ণ হয় তাহলে এই মুখোশ তৈরি করে দেন গ্রামের মানুষরা।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।