আমাদের রোজকার কর্মব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙে মোবাইলের অ্যালার্ম অথবা কোনও ইম্পর্টেন্ট মেলে। তারপরেই শুরু হয় সারাদিন নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে যন্ত্রমানব তৈরি হয়ে যাওয়া এ যেন এক নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এই সবকিছুর বাইরেও তো একটা জীবন আছে। ধরুন কোনও একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে পর্দা খুলে সামনে দেখলেন নন্দাদেবী তার কোলে সূয্যিমামার উজ্জ্বল রোদ্দুরকে খেলা করাচ্ছে।
কিংবা ধরুন হঠাৎ করে এমন এক জায়গায় পৌঁছে গেলেন যেখানে চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ। আর তার মাঝখানে তুষারঝড়ে আপনি দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন আপনার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দেওয়ার জন্য। কী ভাবতেই ভালো লাগছে তাই না? কিন্তু সমস্যা হল এইরকম জায়গা কোথায় আছে সেটা হয়তো মনে করতে পারছেন না। চিন্তা নেই! আপনার এই সমস্যার সমাধান করতেও এগিয়ে এসেছে ট্রিপটো বাংলা।
ভারতের উত্তরাখণ্ডের নীলকণ্ঠ, নামা পর্বত, নন্দাদেবী পর্বতমালার মাঝে ২৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শুভ্র প্রস্তর তুষারে ঢাকা হিল স্টেশন আউলি, যেখানে রয়েছে এশিয়ার দীর্ঘতম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম রোপওয়ে স্টেশন (৩.৭৫ কিমি)। আউলি উত্তরাখণ্ডের হিমালয় পর্বতমালার চামোলি জেলায় অবস্থিত। গড়ওয়ালিতে আউলি ‘বুগিয়াল’ নামে পরিচিত, যার অর্থ হলো তৃণভূমি। আউলি উপত্যকায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিপন্ন প্রজাতির ফুল, উদ্ভিদ(প্রায় ৫২০ রকমের) দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও সংযুক্ত ও গাছের বন দ্বারা ঘেরা উপত্যকাটি পর্যটকদের এক মনোরম দৃশ্য প্রদান করে। শীতকালীন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের এক অন্যতম জায়গা এই আউলি। শীতকালে এখানে এক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
আউলির অন্যতম আকর্ষণ-
আউলির অন্যতম আকর্ষণ হল কেবিল কার, যার মাধ্যমে আপনি ৫ নম্বর টাওয়ার থেকে নন্দাদেবী, দ্রোণাগিরি, ত্রিশূল পঞ্চচুল্লী, নন্দাকোট পর্বতশৃঙ্গগুলি দেখতে পাবেন। এছাড়াও হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ-এর সঙ্গে যুক্ত এখানে একটি হিন্দু মন্দিরের রয়েছে। চেয়ার লিফ্ট পয়েন্ট এর সামনের গেট দিয়ে গেলে নন্দাদেবী ছাড়াও গৌরী, হাতি পর্বত, কামেট, নীলকান্ত প্রভৃতি পর্বতশৃঙ্গগুলি দেখতে পাবেন। শীতকালে এখানে আসলে আইস স্কেটিং এবং স্কিইং অবশ্যই করবেন। এখানে স্কেটিং শেখানোর জন্য স্কুলে রয়েছে এখানে শীতের পোশাক, স্কেটিংয়ের সরঞ্জাম ভাড়া পাওয়া যায়।
ভ্রমণের আদর্শ সময়-
আউলি ঘোরার সবথেকে ভালো সময় ডিসেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কারণ এই সময় তুষার ঝড় দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন শীতকালীন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস সেখানে তখন অনুষ্ঠিত হয়।
থাকবার জায়গা-
• দ্যা হিমালয়ান অবদ
• হোটেল মানিক রিসোর্ট
• হোটেল মাউন্ট ভিউ
• হোটেল আউলি ডি
• দ্যা স্লিপিং বিউটি
• হিমালয়ের ইকো লজ এন্ড ক্যাম্পস
পথ নির্দেশনা-
• আউলির সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর দেরাদুন। প্রথমে দেরাদুন পৌঁছে, সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে আউলি পৌঁছনো যায়।
• এছাড়াও ট্রেনে করে প্রথমে ঋষিকেশ বা দেরাদুন পৌঁছনো যায়। সেখান থেকে গাড়িতে।
• অথবা প্রথমে গাড়িতে করে যোশীমঠ পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে বাকি রাস্তা রোপওয়ে করে আউলি পৌঁছনো যায়। সময় লাগে ২৫ মিনিট এবং মাথাপিছু ভাড়া মোটামোটি ৭৫০-১০০০ টাকা।
বদ্রীনাথ অথবা হেমকুণ্ড কিংবা ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স যাওয়ার পথে আউলি দেখে নেওয়া যায়।
সতর্কতা-
আউলিতে রোপওয়ে যাত্রার সময় আপনার নিজের ব্যাগপত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে রাখবেন। আর ঘুরে বেড়ানোর সময় যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র নিজের সঙ্গে রাখুন।
এরকম আরও সুন্দর সুন্দর অজানা জায়গার খোঁজ পেতে চোখ রাখুন আমাদের ট্রিপটো বাংলার পেজে https://www.tripoto.com/bn।