পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে...

Tripoto
Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... 1/4 by Deya Das
ছবি সংগৃহীত

পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের সেনাবাহিনিগুলির মধ্যে একটা সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়; সেটি হল নীরবতা। ব্যস্ততম শহর হোক কিংবা ছোট্ট কোনও গ্রাম, সেনানিবাসগুলিতে অদ্ভুত নীরবতা এবং নির্জনতা উপলব্ধি করা যায়। তবে সেনাবাহিনিগুলির প্রধান কাজ হল দেশের জনগণকে সুরক্ষা প্রদান করা এবং নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা করা। এই ধরণের একটি সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করার লোভটা কিন্তু এক্কেবারে মিস করা যায় না।

রুটিনমাফিক এবং আধুনিক জনজীবনের কঠিন বেড়াজাল দূরে সরিয়ে ঘুরে আসুন শৈল শহর কালিম্পং থেকে ৪০ কিমি অবস্থিত তাকদাহ নামক এই সেনানিবাসটিতে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪,০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত এই ক্যান্টনমেন্টটি হতে পারে আপনার ব্যস্ততম শহর থেকে কিছুদিনের জন্য হারিয়ে যাওয়ার জন্য সেরা ঠিকানা। প্রায় ১৯০০ সালে বা তার ও আগে ব্রিটিশ উপনিবেশের সময় এখানে একটি মিলিটারি ক্যান্টনমেন্ট-এর অবস্থান ছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা দেশ ছেড়ে চলে গেলে এই জায়গাটি একটি বিখ্যাত শৈল শহরে পরিণত হয়। তৎকালীন কলোনিয়াল বাংলো এখন পরিণতি পেয়েছে একটি বুটিক হোমস্টের। এখনকার সুসজ্জিত ট্রেইল, ঘন অরণ্যের সমাবেশ এবং অদ্ভুত নিস্তব্ধতা আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

আর্ট ক্যাফে

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... 2/4 by Deya Das
ছবি সংগৃহীত

O' 10টিক

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... 3/4 by Deya Das
রকমারি আহার (ছবি সংগৃহীত)

ক্যাফে রিফুয়েল

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... 4/4 by Deya Das
ভোজনরসিকদের জন্য সঠিক ঠিকানা (ছবি সংগৃহীত)

কেন আপনি তাকদাহকে ভ্রমণ স্থান হিসেবে বেছে নেবেন

নির্জন পরিবেশে আপনি ঘুরতে পারেন (ছবি সংগৃহীত)

তাকদাহ একটি প্রত্যন্ত গ্রাম এবং পর্যটকদের ভিড় এখানে চোখে পড়ার মতো নয়, তবে এখানে আপনি জীবনের সেরা অভিজ্ঞতার স্বাদ আস্বাদন করে নিতে পারেন।

১. চা উৎপাদনের পদ্ধতি জেনে নিতে পারেন -

চা-প্রেমী মানুষদের জন্য (ছবি সংগৃহীত)

Photo of Takdah, West Bengal, India by Deya Das

আমরা সকলেই জানি চা উৎপাদনের ক্ষেত্রে দার্জিলিং-এর চা সর্বোৎকৃষ্ট। তবে তাকদাহ অঞ্চলেও সর্বত্র চা বাগান রয়েছে। এখানকার প্রধান চা বাগানগুলি হল রুঙলি রালিয়ত, গিয়েল্লে, নামরিং, জিংলাম, পূমোঙ, এবং তিস্তা ভ্যালি এস্টেট। আপনি হেঁটেও এই বাগানগুলি দেখে আসতে পারেন আবার একটা ট্যাক্সি ভাড়া করেও, সব চা বাগানগুলি ভ্রমণ করতে পারেন। আবার আপনি যদি গ্রীষ্মের ছুটিতে তাকদাহ ভ্রমণে যান, তাহলে আপনার সকালের চা-এর নির্মাণকেন্দ্রটি স্বচক্ষে দর্শন করে আসতে পারেন।

২. দাছেন পেমা শোলিং মনেস্ট্রির আধ্যাত্মিক উপলব্ধি -

ছবি সংগৃহীত

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

১৯৮৫ সালে নির্মিত এই মনেস্ট্রিটি শুধুমাত্র বৌদ্ধদের নিংমা গোষ্ঠীদের জন্য তৈরী হয়েছিল। তবে এখানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ হল মনেস্ট্রি থেকে চা বাগানের সুন্দর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা। নিজেকে ধ্যানস্থ করার জন্য এবং আত্মশুদ্ধির জন্য এই স্থানটি এক্কেবারে আদৰ্শ।

৩. অর্কিড সেন্টার থেকে অর্কিড সমন্ধে জ্ঞান লাভ করতে পারেন-

অর্কিড ফুলের বাহারি শোভা (ছবি সংগৃহীত)

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

ফুলগাছ প্রেমী সমস্ত মানুষকে এখানকার অর্কিড সেন্টার-এ স্বাগত । এখানে হিমালয়ের কোলে রং-বেরঙের অর্কিডের চাষ দেখে আসতে পারেন। ফুলের শোভায় সুসজ্জিত অর্কিড সেন্টার প্রাঙ্গনটিকে ক্যামেরাবন্দি করতে কিন্তু ভুলবেন না ।

৪.তাকদাহ-এর প্রাচীনত্বকে ফিরে দেখা -

ছবি সংগৃহীত

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

যেহেতু তাকদাহ ঔপনিবেশিক সময়ের ক্যান্টনমেন্ট ছিল, তাই এই অঞ্চলে রাস্তার দুই ধারে অনেক প্রাচীন প্রাচীন বাংলো লক্ষনীয়। এই সমস্ত বাংলোগুলি অসাধারণ স্থাপত্যের এক একটি বিরল নিদর্শন। তবে বেশিরভাগ স্থাপত্য ধ্বংস হয়ে গেছে, আর যেগুলি রয়েছে সেই গুলি বর্তমানে গেস্ট হাউস, চার্চ কিংবা কোনও দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

৫. পাহাড়ি গ্রামের পরিচয় পেতে পৌঁছে যান দোকান দারা -

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

প্রত্যেক সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তাকদাহতে একটি হাটের আয়োজন করা হয়, যা দোকানদারা নামে পরিচিত। কাছাকাছি গ্রাম থেকে বহু মানুষের আনাগোনা লক্ষ করা যায় শাকসব্জি বা অন্য কোনও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করার উদ্দেশ্যে। গ্রামের এই হাটকে ক্যামেরাবন্দি করে নিতে পারেন কিংবা স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে পরিচয় করে নিতে পারেন।

খাদ্য

তাকদাহ ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চল হওয়ার কারণে এখানে রেস্টুরেন্ট-এর তেমন সুবিধা নেই। খাদ্যরসিক পর্যটকরা রসনা তৃপ্তির জন্য ঘণ্টা দেড়েকের দূরত্বে অবস্থিত কালিম্পংকে বেছে নিতে পারেন। কালিম্পং -এ আপনি বাঙালি, তিব্বতীয়, চাইনিস্ সমস্ত ধরণের খাদ্যে চেখে দেখার সুযোগ পেয়ে যাবেন।

তাকদাহ ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় -

এই অঞ্চলে অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে বর্ষাকালে এখানে ভ্রমণের প্ল্যান না করাই ভাল। তাকদাহ ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় হল অক্টোবর থেকে মার্চ মাস। এই সময় আবহাওয়া খুবই অনুকূল থাকে।

কীভাবে যাবেন

বিমানে - তাকদাহ এর নিকটতম বিমানবন্দর হল বাগডোগরা। প্রতিদিন নিউ দিল্লি থেকে বাগডোগরা পৌঁছানোর জন্য অনেকগুলি বিমান উপলব্ধ আছে। দুই ঘণ্টার এই যাত্রার জন্য বিমানভাড়া পড়বে ৩,৫০০ টাকা মতো। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে মাত্র তিন ঘণ্টা দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান গন্তব্যে।

ট্রেনে - দিল্লি থেকে ট্রেনে চেপে পৌঁছে যান নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। স্টেশন থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে ঘণ্টা তিনেক দূরত্বে পৌঁছে যান তাকদাহ।

বাসস্থান -

তাকদাহ এর উপনিবেশিক বাংলোগুলি বর্তমানে হোমস্টে বা গেস্ট হাউসে পরিণত হয়েছে। তবে এই হোমস্টেগুলি আপনার বাড়ির অন্দরমহলের মতোই আরামদায়ক।

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

সলস্টোনে রাত্রিবাসের খরচ ২০০০ টাকা। এখানে একটি রুমে ৫ জন অতিথি রাত্রিবাস করতে পারেন। একটা এক্সট্রা খাটের জন্য আপনাকে অতিরিক্ত মাসুল দিতে হবে।

স্টে-at-দ্য-রিসোর্ট এ দুজন মানুষের রাত্রিবাসের খরচ ৫০০০ টাকা। এই খরচ অথিতিদের জন্য প্রাতঃরাশও অন্তর্ভূক্ত।

Photo of পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসন কালের এই সেনানিবাসটি ছুটি কাটানোর শ্রেষ্ঠ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে... by Deya Das

৭৬ মাইলস-এ দুজন মানুষের রাত্রিবাসের খরচ ৪০০০ টাকা, এই খরচটির সঙ্গে প্রাতঃরাশও যুক্ত রয়েছে ।

এই ঐতিহাসিক ভ্রমণস্থানটি আপনার কেমন লাগল সেটি আমাদের লিখে জানাতে পারেন।

নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।

বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।

(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)

Further Reads