জলপ্রপাত শব্দটি আপনার কর্ণগহ্ববরে প্রবেশ করলেই মনে মধ্যে যে ছবিগুলি প্রতিফলিত হয় তার মধ্যে অন্যতম হল ঝরনার কলকল শব্দ, টপটপ করে জল পরার শব্দ, জলপ্রপাতের আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশের নিস্তব্ধতা আর সর্বোপরি ছবি তোলার আনন্দ। কখনও কখনও স্রোতস্বিনী জলপ্রপাতের জলধারাকে দেখলে মনে হয় সমস্ত বাধা পেরিয়ে উন্মুক্ত প্রেমিকার মত ছুটে চলেছে। জলপ্রপাতের এইরূপ আচরণ কিন্তু খুবই স্বাভাবিক। তবে আমি যদি আপনাকে বলি প্রবল গ্রীষ্মের দাবদাহে শুকিয়ে যাওয়া যাওয়া একটি জলপ্রপাতকেও এক অদ্ভুত সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে তাহলে কী বিশ্বাস করবেন? বিশ্বাস হচ্ছে না তো আমার কথা! তবে এটাই বাস্তব। ক'দিন আগেই আমি এমন একটা জায়গায় ঘুরতে যাই, যেখানে এই রকমই একটি বিস্ময়ের সম্মুখীন হই। আজ আমার সেই অভিজ্ঞতায় আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। ভিন্নরূপে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে এটি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই।
রানকুন্য নামের এই শুকনো জলপ্রপাতটি ইন্দোর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে পেডমি নামক একটি ছোট্ট গ্রামে অবস্থিত। আমার জীবনে দেখা অন্যতম বৃহৎ জলপ্রপাতগুলির মধ্যে এটি একটি। তবে বর্তমানে বিশেষ কারণের জন্য এটি অনাবৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আমার পরবর্তী ব্লগের জন্য গাড়ি করে ঘোরাঘুরি করতে করতে সড়ক পথ ধরে পেডমি গিয়ে পৌঁছোলে অন্য একটি জলপ্রপাতের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ ঘটে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় তখন এই জলপ্রপাতটির অবস্থা মৃতপ্রায়। এমত অবস্থায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে যখন আমরা ফিরে আসছিলাম ঠিক তখনই হঠাৎ করে একটি চায়ের দোকানে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়। তাদের মধ্যেই একজন আমাদের পথনির্দেশকের মত সাহায্য করেন এবং এই সেই জায়গা যেখানে আমাদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে আমাদের রক্ষাকর্তা সুনীল জির, যার সাহায্যে আমরা এই অপূর্ব সুন্দর অনাবৃত রত্নভাণ্ডারের খোঁজ পাই। আমরা আমাদের গাড়িটি সেই চায়ের দোকানের সামনে রেখে তার বাইকে উঠে বসলাম। কিছুক্ষণের জন্য সোজা রাস্তায় চলার পর হঠাৎ করে বাইকটি একটা বাঁক নিল। সত্যি কথা বলতে, ঠিক এরপর থেকেই একটু ভয় লাগতে শুরু করল। বাঁকটি অনুসরণ করে আমরা এক গভীর জঙ্গলে পৌঁছে গেলাম। খুব ভুল না হলে সেই সময়টা সূর্যাস্তের সমসাময়িক ছিল বলেই আমার মনে হয়, যার ফলে প্রথমদিকে এই জায়গাটিকে আমার খুব একটা সুবিধার বলে মনে হয়নি।
ক্রমেই আমরা সেই ঘন ভয়ংকর জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশের পর এক অদ্ভুত জিনিস দেখতে পেলাম। দূরে পর্বতমালার সৌন্দর্য দেখে আমার চোখ ধাঁধিয়ে গেল।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আবহাওয়ার এক অদ্ভুত পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। ঘন কালো মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মাঝখান দিয়ে মেঘরাশিগুলি যেন মাথার ওপর দিয়ে ভেসে যেতে লাগল। আর ঠিক এই ভাবে কিছুক্ষণ হাঁটার পরে অবশেষে আমরা আমাদের সেই গন্তব্যর কাছে পৌঁছে গেলাম যেটি খুঁজে পাওয়ার জন্য এতক্ষণ আমরা উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম।
দেখা মিলল সেই রানকুন্য জলপ্রপাতের। আমি বলে বোঝাতে পারবো না শুষ্ক অবস্থাতেও এই জলপ্রপাতটি কতটা সৌন্দর্যবর্ধন করে। সবেগে থেকে বয়ে আসা ঝর্ণার জলের শব্দ তখন হাওয়াই পরিণত হয়েছে, সঙ্গে বিভিন্ন শব্দগুলিও পরিবর্তিত হয় যেন এক শান্ত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। আমার তোলা ছবিগুলোও হয়ত সেই একই কথা বলছে। এই জায়গার ঝর্ণার জল শুকিয়ে গিয়ে সেখানকার মৃদু শীতল বাতাস আপনাকে খুব স্পর্শকাতর করে তুলবে। সবশেষে এইসব দেখে এই ঝর্না এই পরিবেশের প্রেমে না পরে আপনি থাকতেই পারবেন না। আর এটাই হল রানকুন্য-র এক অসীম ক্ষমতা।
নিজের বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ট্রিপোটোর সঙ্গে ভাগ করে নিন আর সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য পর্যটকদের অনুপ্রাণিত করুন।
বিনামূল্যে বেড়াতে যেতে চান? ক্রেডিট জমা করুন আর ট্রিপোটোর হোটেল স্টে আর ভেকেশন প্যাকেজে সেগুলো ব্যবহার করুন।
(এটি একটি অনুবাদকৃত আর্টিকেল। আসল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন!)