বৈচিত্র সমারোহে ভারতের ভ্রমণ স্থানগুলো মিলিয়ে যদি একটি আলোচনার আয়োজন করা হয় তাহলে এই বিষয়ে তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হবেই | আসমুদ্র হিমাচল থেকে মরুভূমি কিংবা মালভূমি তার নিজস্বতার রঙে স্বমহিমায় বিরাজমান | ভারতের সংস্কৃতি, ধর্ম, ঐতিহ্য, ভাষা- এই বৈচিত্র্যগুলোর মধ্যেও যে কতটা ঐক্য রয়েছে, তা নিজের চোখেও প্রত্যক্ষ করার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন আর যাযাবরের মতো এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য ঘুরে জেনে নিন নিজের দেশের নানা অজানা রহস্য সম্পর্কে |
আমরা প্রত্যেকেই প্রজন্ম অনুসারে যে ভ্রমণ স্থানগুলো সম্পর্কে জেনে আসি, সেই নির্দিষ্ট ভ্রমণ স্থানগুলোকেই আমাদের ভ্রমণ তালিকায় বেছে নিই | ভারতের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণস্থান হিসেবে যে স্থানগুলো সুপরিচিত, আজ এই ব্লগে সেই বিখ্যাত স্থানগুলোর বিকল্প হিসেবে কয়েকটি নতুন ভ্রমণ স্থান সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য রইল | প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই বিকল্পিত ভ্রমণস্থানগুলো কিন্তু ‘ভারতের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ স্থান' এর সম্পূর্ণ অনুরূপ নয় | এই সমস্ত স্থানগুলো তুলনামূলকভাবে কম জনবহুল | আর তাই জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষিত না হওয়ায় এই স্থানগুলো অনেকটাই দূষণমুক্ত এবং ভ্রমণের জন্য আদর্শ |
১. আপনি কি ছুটি কাটানোর জন্য তুষারাবৃত পার্বত্য অঞ্চলের সন্ধান করছেন? লাদাখ-এর প্যাংগং টস- এর পরিবর্তে সিকিম-এর গুরুদংমার লেককে বেছে নিতে পারেন |
বেশ কিছু বছর আগে, বিশেষত থ্রি ইডিয়টস ছবিটি মুক্তির পর লাদাখের প্যাংগং লেক ভ্রমণ, ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছিল | চারিদিকে তুষারাবৃত পাহাড়ে মোড়া লেক তথা প্রকৃতির সৌন্দর্য প্রাণভরে উপভোগ করার অভিজ্ঞতাটি সত্যিই অতুলনীয় |
তবে প্রকৃতির গোপনীয় ভাণ্ডারে এমনি অনেক অজানা সম্পদ আছে যা কিন্তু ভ্রমণপ্রিয় মানুষের লাদাখ ভ্রমণের পরিকল্পনাকেও বাতিল করে দিতে পারে | প্রকৃতি ও তার নিগূঢ়তাকে নিভৃতে উপভোগ করতে পৌঁছে যেতে পারেন পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত গুরুদংমার লেক | সশরীরে আপনার কল্পনার স্বর্গকে প্রতক্ষ্য করতে চাইলে গুরুদংমার লেক আপনার জন্য এক্কেবারে আদর্শ একথা বলতেই হবে| গ্যাংটক থেকে ২ দিনের ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারেন দক্ষিণ সিকিমের এই লেকটিতে | লেকটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭,১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত | এই লেককে কেন্দ্র করে অবস্থিত পর্বতগুলোকে দেখলে আপনার মনে হতেই পারে যে এগুলো সীমান্তে কর্মরত সেনাবাহিনীর মতো আজীবনকাল ধরে রক্ষা করে চলেছে গুরুদংমারকে | গুরুদংমারের পারিপার্শ্বিক তুষারাবৃত পাহাড়, শীতল আবহাওয়া, লেকের শান্ত পরিবেশ, সব কিছু মিলিয়ে এই স্বর্গীয় আমেজটা আপনাকে মুগ্ধ করবেই |
২. গুজরাতের কচ্ছের রনে মরুভূমির বুকে হারিয়ে যেতে চাইলে রাজস্থানের জয়সলমীরের পরিবর্তে গুজরাতের কচ্ছের রনকে বেছে নিতে পারেন
মরুভূমির বর্ণময় সৌন্দর্যের সঙ্গে সাথই ইতিহাসের অব্যক্ত ভঙ্গিমাকে অনুভব করতে জয়সলমীরকে শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়| রাজস্থানের রাজপ্রাসাদ, পাহাড় দ্বারা নির্মিত স্থাপত্য, বিশেষত মরুভূমি অঞ্চল যে কোনও ভ্রমণ প্রিয় মানুষকে আকর্ষণ করে | মরুভূমির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মানুষ নিজের জীবনের বিশেষদিন অর্থাৎ ওয়েডিং ডেস্টিনেশন হিসেবেও এই স্থানটিকে বেছে নেন |
অন্যদিকে, গুজরাটের কচ্ছের রন অঞ্চলটি এমনই মরুভূমি অঞ্চল দ্বারা পূর্ণ হলেও, ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে এখনও তেমন পরিচিতি পায়নি | তবে এই মরুভূমি অঞ্চলটির মধ্যেও রয়েছে নজরকাড়া সৌন্দর্য | এই দিগন্ত বিস্তৃত শুভ্র স্থলভূমির ছবি যে কোনও পর্যটকের মনোরঞ্জনের জন্য যথেষ্ট | এই মরুভূমিটি মূলত সফেদ লবনাক্ত জলাভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে | কচ্ছের রন অঞ্চলের মানুষদের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকার্যগুলো গৃহসজ্জা অথবা তাদের পরিধানে কোমল নৈপুণ্যের সাথে ধরা দেয় | যদি সম্ভবপর হয় তাহলে মরুভূমির বুকে নির্মায়মান ছোট ঘরগুলোতে রাত্রিবাস করে, পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় কচ্ছের রনের মোহনীয় রূপটা প্রত্যক্ষ করতে কিন্তু একদম ভুলবেন না |
৩. মুঘল সাম্রাজ্যের অসাধারন স্থাপত্য কে উপভোগ করতে আগ্রার তাজমহলের পরিবর্তে দিল্লিতে হুমায়ুনের সমাধিকে বেছে নিতে পারেন |
মার্বেল পাথরে পরিপূর্ণ মুঘল সম্রাট সাজাহান নির্মিত এই তাজমহল অবশ্যই ইতিহাসের অসামান্য স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন | ভারতের তথা পৃথিবীর এই আশ্চর্যকে চাক্ষুষ উপভোগ করতে আজও দেশ বিদেশ থেকে অনেক পর্যটকের সমাগম হয় | তবে তাজমহলের দর্শনার্থীর ভিড়, আগ্রার দালালদের অভব্য আচরণ অনেকসময়ই আপনার ভ্রমণের ইচ্ছাটিকে নষ্ট করে দেয় |
দিল্লির নিজামুদ্দিন অঞ্চলে অবস্থিত হুমায়ুনের সমাধিটি ও বিশ্বের কাছে বিখ্যাত স্মৃতিসৌধ হিসেবে পরিচিত | তবে মমতাজের স্মৃতি বিজড়িত তাজমহলের বিশ্বজোড়া খ্যাতির মতো হুমায়ূনের সমাধি তেমন খ্যাতনামা হয়ে উঠতে পারেনি | হুমায়ুনের সমাধিটি প্রধানত লাল বেল-পাথর দ্বারা নির্মিত; তবে তার মধ্যে সূক্ষ্মভাবে মার্বেল পাথর ও অন্যান্য মূল্যবান রত্ন সহকারে সজ্জিত করা হয়েছে | স্মৃতিসৌধটির শিল্পকার্যের অসাধারণত্ব প্রথম দর্শনেই সকল দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করবে | এছাড়াও, চারিদিকে ছোট বড় গাছের সমারোহে এই সমাধিটি বাইরে থেকে দেখতে অনেকটা রাজপ্রাসাদের মতো | ভারতের ইতিহাসের হুমায়ুনের সমাধিটিও অনন্য এক নিদর্শন |
৪. ছবির মতো দৃশ্য সমূহ কে উপভোগ করতে ডালহৌসির খাজিয়ারের পরিবর্তে উত্তরাখণ্ডের স্যালসুরকে বেছে নিতে পারেন
কিছু শতাব্দী আগে ভ্রমণপ্রেমী মানুষ ভারতের সুইজারল্যান্ড হিসেবে খাজিয়ারকে বেছে নিতেন | সুদীর্ঘ চরাভূমি এবং পাহাড় দ্বারা পরিবেষ্টিত এই অঞ্চলটি পর্যটনস্থান হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছিল | কিন্তু বর্তমানে হকারদের উপদ্রব, চরাভূমিতে ঘোড়ার আধিক্য ও পর্যটকদের ভিড় এই অঞ্চলের নিজস্বতাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে|
আপনি যদি এই রকম চিত্রস্বরূপ সদৃশ এবং হিমালয়ের পাদদেশে ছুটি কাটাতে চান তাহলে চলে আসতে পারেন স্যালসুরে | মন্দাকিনী নদীর তীরে ভারত সরকার পরিচালিত টেন্টে থেকে আপনার ভ্রমণের দিনগুলো অনায়াসে কাটাতে পারেন | খোলা আকাশের নিচে চাঁদনী রাতে খরস্রোতা মন্দাকিনীর তীরে বন-ফায়ারের প্ল্যানটা ও কিন্তু মন্দ হবে না |
চারিদিকে সবুজে ঘেরা পাহাড়ের অদূরে উঁকি দেয় শুভ্র তুষারাবৃত হিমালয়ের অন্যতম শৃঙ্গ কেদার | বলাই বাহুল্য, শান্ত নিরিবিলিতে হিমালয়ের পাদদেশে মন্দাকিনীর বুকে রাত্রিবাস এবং ছুটি কাটানোর পরিকল্পনাটি বেশ রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে |
৫. ব্যাক ওয়াটার -এর নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে আলেপ্পি-এর পরিবর্তে কেরলের থাক্কাদুকে বেছে নিতে পারেন
কেরলের প্রসিদ্ধ ব্যাক ওয়াটার পরিদর্শনের জন্য মানুষ পৌঁছে যান আলেপ্পিতে | পাম গাছে পরিপূর্ণ ভেম্বানাদ ব্যাক ওয়াটার-এ বিলাস বহুল নৌকায় ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতাটিকে পর্যটকরা ক্যামেরাবন্দি করেন | কিন্তু আমরা যে কেরলের ব্যাক ওয়াটার ভ্রমণের কল্পনা করে থাকি, সেটি কে বাস্তবায়িত করার জন্য আলেপ্পি যথেষ্ট নয় |
কেরলের ব্যাক ওয়াটার সম্পর্কে বিশদে জানতে পৌঁছে যেতে পারেন উত্তর কেরলে এবং কান্নুর-বালিয়াপারাম্বু ব্যাক ওয়াটার পরিদর্শন করে আসতে পারেন | এই অঞ্চলটি এখনও সেইভাবে পর্যটকদের নজরবন্দি হতে পারেনি, আর তাই এই স্থানটি ভ্রমণের জন্য আদর্শ | পড়ন্ত বিকেলে প্রিয়জনের সঙ্গে বিলাসবহুল নৌকায় একান্তে প্রকৃতির শোভা দেখতে কিংবা আপনার কোনও বিশেষ দিনে হাউস বোর্টে ব্যাক ওয়াটার-এর স্রোতের সঙ্গে ভেসে যেতে চাইলে চলে আসুন থাক্কাদু|
৬. বাঘকে সচক্ষে দেখতে উত্তরাখণ্ডের জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কের পরিবর্তে মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় ন্যাশনাল পার্ককে বেছে নিতে পারেন
বিলুপ্তপ্রায় বিখ্যাত বেঙ্গল টাইগার কে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে ১৯৩৬ সালে জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কটি নির্মিত হয় | এই বাঘ ছাড়াও, এই অঞ্চলটি অনেক চেনা অচেনা গাছপালা এবং পশুপাখি দের জন্য বেশ পরিচিত | বন দপ্তর পরিচালিত এই জঙ্গল সাফারির সাহায্যে সহজেই এই ন্যাশনাল পার্কটি ভ্রমণ করা যায় | কিন্তু, জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে এখানে সবসময় বাঘের দেখা পাওয়ার সুযোগ হয় না |
তবে শুধু বাঘ দেখার জন্য আপনি বান্ধবগড় ন্যাশনাল পার্কটিকে বেছে নিতে পারেন | জঙ্গল সাফারিতে গেলেই আপনি দেখা পেতে পারেন হলদে ধূসর বর্ণের বাঘের | প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এখানকার বাঘগুলোর আকার সাধারণত ছোট হয় | এছাড়াও, এই ন্যাশনাল পার্কটিতে অজানা গাছপালা ও পশুপাখির সন্ধান পেয়ে যাবেন | আর হ্যাঁ, ফেরার পথে বাঘের দর্শন পেলে ক্যামেরা বন্দি করতে একদম ভুলবেন না |
৭. লেক পরিবেষ্টিত ভূখণ্ড পরিদর্শন করতে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের পরিবর্তে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংকে বেছে নিতে পারেন
স্কুলের গরমের ছুটির গন্তব্য স্থানগুলো মনে পড়ে? শৈল শহর ভ্রমণের একমাত্র ঠিকানা হিসেবে বেছে নেওয়া হত নৈনিতালকে | নৈনিলেককে সাক্ষী রেখে নৌকোবিহার বা পড়ন্ত বিকেলে সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে লেকের ছবিটা আজও স্মৃতির পাতায় অমলিন রয়েছে | তাই নয় কি?
তবে, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং অঞ্চলটিও কিন্তু আপনার ভ্রমণের অন্যতম গন্তব্যস্থল হয়ে উঠতে পারে | চিন সীমান্তে অবস্থিত এই অঞ্চলটিতে মোট ১০৯ টি লেক রয়েছে | তুষারাবৃত পাহাড় পরিবেষ্টিত এই লেকের দৃশ্যপটটিকে খালি চোখে পর্যবেক্ষণ করতে কিন্তু অসাধারণ লাগবে |সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২,০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত এই লেককে কেন্দ্র করে একটা পিকনিক এর প্ল্যান করলে ভ্রমণের আনন্দটা দ্বিগুণ হয়ে উঠতে পারে |
৮. কোনও নির্জন সমুদ্রে ঘুরতে গোয়ার পরিবর্তে কর্ণাটকের গোকর্ণকে বেছে নিতে পারেন
ভারতের শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ স্থানের মধ্যে গোয়া অন্যতম | সমুদ্র স্নান থেকে বিচ পার্টি কিংবা নাইট আউট এর একমাত্র ঠিকানা হিসেবে গোয়াকে বেছে নেওয়া হয় | সমুদ্র ও নাইট লাইফের সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্যই প্রতি বছর এই রাজ্যটিতে দেশি এবং বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করা যায় |
নির্জন সমুদ্রের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পৌঁছে যেতে পারেন গোকর্ণ | সমুদ্রের ঢেউয়ের স্রোতে ভাসতে চাইলে অথবা কোনও রৌদ্র ঝলমলে দিনে সমুদ্র সৈকতে একাকী বসে কোনও উপন্যাস পড়তে চাইলে, বা একটা বোটের সাহায্যে মধ্য-সমুদ্রের রূপ পরিদর্শন করতে পৌঁছে যেতে পারেন কর্ণাটকের সীমান্তে অবস্থিত এই গোকর্ণতে |
৯. দক্ষিণ ভারতীয় স্থাপত্যের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানতে কর্ণাটকের হাম্পির পরিবর্তে হাসানের হয়সালেশ্বরা মন্দিরকে বেছে নিতে পারেন
রাজা কৃষ্ণদেবরায়-এর রাজধানী হাম্পিতে রাজা ও তার ঐতিহ্যবাহী রাজত্ব সম্পর্কে নানান কাহিনির সন্ধান পাওয়া যায়| সূর্যাস্তের পর তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে অবস্থিত এই স্থাপত্যের দৃশ্যটা যে কোনও ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে রোমাঞ্চিত করে | তাছাড়া, পাথরের তৈরি স্থাপত্যগুলো ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একমাত্র নিদর্শন তা বলার অপেক্ষা রাখে না |
কিন্তু ভারতীয় স্থাপত্য এবং সৌন্দর্য্যকে নিবিড় ভাবে প্রত্যক্ষ করতে চাইলে হাম্পি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন হয়সালা রাজার হাসান জেলায় | এখানকার প্রসিদ্ধ কান্নাদিগা রাজত্বটি পরিদর্শন করে নিতে পারেন | তৎকালীন রাজার বিখ্যাত রাজধানীগুলো হলো বেলুড় ও হালবিদু | প্রধানত এই দুই রাজধানীর স্থাপত্যগুলো এবং প্রধানত হয়সালেশ্বরা মন্দিরটি পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু | এই অঞ্চলের স্থাপত্যগুলো মূলত মন্দির গঠনের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে | বর্তমানে এই অঞ্চলকে পর্যটনস্থান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ভারত সরকার এই অসাধারণ স্থাপত্যগুলোর সংরক্ষণের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন |
১০. পরিষ্কার স্বচ্ছ জলে রাফটিং করতে উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশ এর পরিবর্তে তীর্থান কে বেছে নিতে পারেন
নদীর স্বচ্ছ জলে রাফটিং করার একমাত্র স্থান হিসেবে অনেকে ঋষিকেশ কে বেছে নেন | হিমালয়ের পাদদেশে খরস্রোতা নদীর স্রোতের সাথে ভেসে যাওয়ার অনুভূতিটা এক্কেবারে অন্যরকম | ঋষিকেশে গেলে দেখতে পাবেন গঙ্গা নদীর তীরে বেশ কয়েক কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে তাঁবু খাটানো রয়েছে | যারা রাফটিং করতে চান বা প্রথমবার রাফটিং-এর স্বাদ পেতে চান চান, সেই সমস্ত অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী মানুষ পোঁছে যান ঋষিকেশে | কিন্তু বর্তমানে পর্যটকের ভিড়ে এই শহরটির প্রকৃত সৌন্দর্য লুপ্ত হতে চলেছে |
আর তাই রাফটিং এর জন্য হিমালয়ের পাদদেশে কুলু জেলায় অবস্থিত তীর্থান ভ্যালিকে বেছে নিতে পারেন | তবে রাফটিং ছাড়াও, এই জায়গাটি ভ্রমণ প্রিয় মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ ভ্রমণস্থান হিসেবে পরিচিত | মূলত, তীর্থান নদীর নাম অনুসারেই এই ভ্যালির নামকরণ হয়েছে |পাহাড়ি নদীর স্রোতে ভাসতে কিংবা এই নৈসর্গিক দৃশ্যপটকে কেন্দ্র করে দূরের শুভ্র তুষারাবৃত হিমালয়ের শৃঙ্গকে ক্যামেরাবন্দি করতে চাইলে অথবা একটা ট্রেক করে হিমালয়ের শৃঙ্গের সাথে পরিচয় করতে তীর্থানে আপনাকে স্বাগত |