সাধারণত সপ্তাহের শেষের ছুটির দিনগুলো ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের কাছে ভীষণ প্রিয়, এই ফাঁকে একটা ছোট্ট ছুটি কাটানোর গন্তব্য বেছে নিতেও বা ক্ষতি কীসের? কর্ম ব্যস্ত দিনের ব্যস্ততা, চিন্তা ভাবনা কাটাতে এবং নতুন উদ্দ্যমে আবার কাজে ফেরার ইচ্ছা জোগাতে এই ছোট্ট ছুটির দিনগুলো অনেক সময় ম্যাজিকের মতোই কাজ করে | অনেক সময়-ই আবার এই ছুটি কাটানোর পরিকল্পনাটা শেষ মুহূর্তে ঠিক করে ফেলার কারণে পছন্দ মতো হোটেল ভাড়া বা যানবাহনের সুবিধা কিংবা অতিরিক্ত খরচের জন্য পিছিয়ে পড়তে হয় | আপনিও কি কখনও এই ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ? তাহলে আপনার চিন্তা দূর করতে সমস্ত তথ্য শেয়ার করা হল |
মেক মাই ট্রিপ কিন্তু আপনার মতো সমস্ত ভ্রমণ পিপাসুদের এই শেষ মুহূর্তে বেড়ানোর পরিকল্পনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে | মেক মাই ট্রিপের সৌজন্যে সপ্তাহের শেষের দিনগুলোতে ভারতের যে কোনও পর্যটন স্থানে আপনি অত্যন্ত সহজেই ঘুরে আসতে পারেন | অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর থেকে রোড ট্রিপ অথবা কোনও অফ্বিট পর্যটনস্থান বা যে কোনও ভ্রমণস্থানের প্রত্যক্ষদর্শী হতে হতে চাইলে চটপট বুক করে নিন মেক মাই ট্রিপ-এর উইকএন্ড গেট অ্যাওয়ের তালিকাভুক্ত পর্যটনস্থানগুলোকে আর ব্যাগ গুছিয়ে নিশ্চিতে বেড়িয়ে পড়ুন আপনার পছন্দের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে|
আপনার ভ্রমণের সুবিধার্তে জানিয়ে রাখি, মেক মাই ট্রিপ ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ভারতের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ভ্রমণ স্থানকে সপ্তাহান্তের সেরা পর্যটন ঠিকানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং আপনি এই সমস্ত স্থানগুলো এখন এক্কেবারে সুলভ মূল্যে ঘুরে আসতে পারেন মেক মাই ট্রিপের সঙ্গে |
সপ্তাহান্তের সেরা পর্যটন ঠিকানার প্রথমেই যে নামটি অনায়াসেই আমাদের মাথায় উঁকি দেয়, সেটি হল কুর্গ | দক্ষিণ ভারতের এই শৈল শহরটির স্থানীয় নাম হল কোদাগু| বেঙ্গালুরু থেকে ২৬০ কিমি দূরে অবস্থিত এই স্থানটির প্রাকৃতিক দৃশ্যটি কিন্তু অসাধারণ |এই শৈল শহর নিকটবর্তী দর্শনীয়স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি জলপ্রপাত, নাগারহোল ন্যাশনাল পার্ক, একটি ভিউ পয়েন্ট, কয়েকটি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান এবং আরও রয়েছে হাইকিং ট্রেইল | কুর্গে পৌঁছনোর যাত্রাটি নির্ঝঞ্ঝাট হওয়ার কারণে জায়গাটিকে উইকেন্ড গেট অ্যাওয়ে হিসেবে বেছে নেওয়া হয় | প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আপনি আপনার গাড়ি ড্রাইভ করেও পৌঁছে যেতে পারেন কুর্গে | বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সাথে ছুটি কাটানোর জন্য এই স্থানটি এক্কেবারে আদর্শ বলতেই হবে|
কুর্গ ভ্রমণবৃত্তান্ত -
প্রথম দিন - বেঙ্গালুরু থেকে একটি বাস নিয়ে পৌঁছে যান কুর্গ |
দ্বিতীয় দিন- কুর্গের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ |
তৃতীয় দিন - কুর্গ ভ্রমণ শেষ করে ফিরে যান আপনার গন্তব্যে |
খরচের সারাংশ:
বেঙ্গালুরু থেকে কুর্গ বাস যাত্রা
হোটেলে রাত্রিবাস
প্রাতঃরাশ
বিখ্যাত এবং দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ
সময়:
বেঙ্গালুরু থেকে কুর্গ পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা |
খরচ:
বেঙ্গালুরু থেকে কুর্গ ভ্রমণ-এর খরচ জনপ্রতি ৪,৭৯২ টাকা |
ভ্রমণপ্রিয় মানুষ সাধারণত উত্তর ভারতের শৈল শহরগুলোকেই শ্রেষ্ঠ শৈল শহর হিসেবে গণ্য করেন | কিন্তু পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সহায়াদ্রী রেঞ্জের নিকটবর্তী মহাবালেশ্বর স্থানটিও পর্বতপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় | মুম্বই থেকে ২৬০ কিমি দূরে এই পর্বতমালাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত | মহাবালেশ্বরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গেই কৃত্রিম ভ্রমণস্থান গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে |মহাবালেশ্বরের নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থানগুলো হল- ভেন্না লেক, মহাবালেশ্বর মন্দির, প্রতাপগড় ফোর্ট, ম্যাপরো উদ্যান, লিঙ্গমালা জলপ্রপাত, তাপলার শিবসাগর লেক, ব্যাবিংটন পয়েন্ট বিভিন্ন স্থানগুলো আপনার ভ্রমণের আনন্দকে আরও মনোরম করে তোলার পক্ষে যথেষ্ট|
মহাবালেশ্বর ভ্রমণবৃত্তান্ত :
প্রথম দিন: মুম্বই থেকে গাড়ি ড্রাইভ করে পৌঁছে যান মহাবালেশ্বর |
দ্বিতীয় দিন: এসইউভি গাড়িতে করে মহাবালেশ্বর পরিক্রমা |
তৃতীয় দিন: মহাবালেশ্বর থেকে হোটেল চেক আউট করে পৌঁছে যান নিজের গন্তব্যে |
খরচের সারাংশ:
মুম্বাই থেকে তিনদিনের জন্য এসইউভি ভাড়া করে নিজে ড্রাইভ করে ভ্রমণের সুযোগটা বেছে নিতে পারেন |
হোটেলে রাত্রিবাস
সময়:
মুম্বই থেকে মহাবালেশ্বর পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৭ ঘণ্টা |
খরচ:
মেকমাইট্রিপের সৌজন্যে মুম্বই থেকে এই ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি প্রায় ৯,১৪১ টাকা |
১৯৩৬ সালে স্থাপিত, প্রসিদ্ধ এই ন্যাশনাল পার্কটি উত্তরাখণ্ডের রামনগরে অবস্থিত | এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, জিম করবেট ভারতে প্রথম ন্যাশনাল পার্ক | এই অভয়ারণ্যটি বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণীর প্রধান বাসস্থান হিসেবে পরিচিত | এছাড়াও, এই পার্কটির মধ্যে বহু বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেখা পাওয়া যায় | এই অভয়ারণ্যটি পশুপ্রেমী মানুষ ও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারদের কাছে অন্যরকম অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ এনে দেয় | এখানে জঙ্গল সাফারি করলে আপনি বাঘ, হায়েনা, হরিণ, চিতা বাঘ বা বন্য হাতির দেখা পেতে পারেন | এছাড়াও চেনা ও অচেনা বন্য পশু ও গাছপালার সাথে সরাসরি পরিচয় হতে পারে | দিল্লি থেকে ২৩৩ কিমি দূরে অবস্থিত এই ন্যাশনাল পার্কটি আপনার সপ্তাহ শেষের সেরা ভ্রমণ স্থান হয়ে উঠতে পারে|
জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণ বৃত্তান্ত:
প্রথম দিন - নিউ দিল্লি থেকে একটা নিজস্ব এসি সেডান গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান করবেট |
দ্বিতীয় দিন - জিম করবেট অভয়ারণ্য ভ্রমণ ও বন্য জগতের সঙ্গে পরিচয় |
তৃতীয় দিন - প্রাতঃরাশ সেরে নিয়ে হোটেল চেক আউট করে ফিরে যান গন্তব্যে |
খরচের সারাংশ:
এয়ার কন্ডিশন সেডান গাড়ি করে করবেট পৌঁছনো |
হোটেলে রাত্রিবাস
জিম করবেট অভয়ারণ্যে নিজস্ব গাড়ি সহযোগে জঙ্গল সাফারি |
সময়:
দিল্লি থেকে করবেট পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ৬.৫ ঘণ্টা |
খরচ:
মেক মাই ট্রিপের সৌজন্যে জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি ৭,২১০ টাকা |
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,৬৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক | হিমালয়ের পূর্ব প্রান্তের পাদদেশে অবস্থিত এই শৈলশহরটি পর্বত প্রিয় মানুষের কাছে খুবই আকর্ষণীয় | অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এই অসামান্য সুন্দর শহরটি উত্তর এবং পূর্ব ভারতের পর্যটক ছাড়া দেশের অন্য প্রান্তের মানুষের কাছে এখনো কিছুটা অজানা রয়ে গিয়েছে | নতুন নির্মিত বিমানবন্দরের সাহায্যে সপ্তাহান্তে পৌঁছে যেতেই পারেন গ্যাংটকে | হিমালয়ের তুষারশুভ্র শৃঙ্গ, পাহাড়ের খাঁজের ছোট ছোট ঝর্ণা, আবার কোথাও সবুজে মোড়া পাহাড়, ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতো পাহাড়ি গ্রাম, স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবেই |
গ্যাংটক ভ্রমণবৃত্তান্ত:
প্রথম দিন - কলকাতা থেকে বাস নিয়ে পৌঁছে যান শিলিগুড়ি | শিলিগুড়ি থেকে ছোট গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান গ্যাংটকে | হোটেলে রাত্রিবাস |
দ্বিতীয় দিন - ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ |
তৃতীয় দিন - প্রাতঃরাশ সেরে হোটেল চেক আউট করে বেড়িয়ে পড়ুন গন্তব্যের উদেশ্যে |
খরচের সারাংশ:
ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
হোটেলে রাত্রিবাস
প্রাতঃরাশ
সময়:
কলকাতা থেকে ট্রেনে গ্যাংটক পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ১৬ ঘণ্টা |
খরচ:
মেকমাইট্রিপের সৌজন্যে সপ্তাহান্তে গ্যাংটক ভ্রমণের খরচ প্রায় জনপ্রতি ১১,৮৭৫ টাকা |
ভ্রমণপ্রিয় মানুষের উইকেন্ড ট্রিপের তালিকাটি গোয়া ছাড়া একেবারেই অসম্পূর্ণ,তাই নয় কি? প্রাচীন দুর্গ, আরব সাগরের মায়াবী খেলা, দুধসাগর জলপ্রপাত-এর মোহময়ী রূপ-সৌন্দর্য যে কোনও ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে স্বর্গ বললে খুব একটা ভুল হবে না | গোয়ার বিশ্ববিখ্যাত কালাঙ্গুট এবং অঞ্জুনা সৈকতে প্রিয় মানুষের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে চাইলে অথবা সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে থেকে গোয়ার “নাইট-লাইফ” অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে চাইলে সপ্তাহ শেষে ছুটি কাটাতে পৌঁছে যেতে পারেন গোয়ায় | ভারতের যে কোনও শহর থেকে এই বিখ্যাত ভ্রমণস্থলটিতে ট্রেনে, বিমানে বা সড়কপথে অতি সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় |
গোয়ার ভ্রমণবৃত্তান্ত:
প্রথম দিন - পুনে থেকে বাস ভাড়া করে পৌঁছে যান গোয়া এবং হোটেলে রাত্রিবাস |
দ্বিতীয় দিন - গাড়ি সহযোগে গোয়ার নাইট লাইফ উপভোগ |
তৃতীয় দিন - প্রাতঃরাশ সেরে হোটেল চেক -আউট করে পৌঁছে যান গন্তব্যে |
খরচের সারাংশ:
গাড়ি সহযোগে রাতের গোয়ারাজ্যটির সঙ্গে পরিচয় |
হোটেলে রাত্রিবাস
প্রাতঃরাশ
সময়:
পুনে থেকে সড়কপথে গোয়া পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৯ ঘণ্টা |
খরচ:
মেকমাইট্রিপের সৌজন্যে গোয়া ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি মাত্র ৯,০১১ টাকা |
আপনি যদি সপ্তাহের শেষের দিনগুলো আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর করে তুলতে চান তাহলে এই প্যাকেজটি বেছে নিতেই পারেন |